
পাড়ার সেলুন ছাড়া ফিটকিরির তেমন ব্যবহার আর দেখা যায় না আজকাল। তবে জানেন কি, দীর্ঘকাল ধরে নানা চিকিৎসা ও দৈনন্দিন স্বাস্থ্যচর্চায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে ফিটকিরি। এটি মূলত একটি অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, এবং অ্যাস্ট্রিনজেন্ট গুণসম্পন্ন উপাদান। দাড়ি কাটার পর মুখে লাগিয়ে নেওয়া বা মাথা ব্যাথার উপশম হিসেবে ফিটকিরি দারুণ কার্যকরী।
ফিটকিরির উপকার ও ব্যবহারবিধি
১। মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
ফিটকিরি জলে গুলে, এবার সেই জল দিয়ে গার্গেল করুন। মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে। মুখের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ফিটকিরি। তবে এই জল গিলে ফেলবেন না ভুলেও কিছুদিন পরপর এইভাবে ফিটকিরি জল দিয়ে মুখ ফুলকুচি করে নেবেন।
২। ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে
স্নানের আগে ফিটকিরি পাথর জলে ভিজিয়ে বগলের ঘষে নিন। অথবা ফিটকিরি গুড়ো করে জলে মিশিয়ে শরীরের ঘাম বেশি হওয়া জায়গা গুলিতে মাখুন, ১০-১৫ মিনিট পর স্নান করে ফেলুন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন ফিটকিরি ব্যবহারের পর কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না।
৩। ত্বকের মৃত কোষ দূর করে
ফিটকিরি ব্রণের দাগ, ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইটহেডস দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে।
৩। অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে
দাড়ি শেভ করতে গিয়ে বা অন্য কোনো কারণে মুখের ত্বক বা শরীরের যেকোনো অংশ কেটে গেলে অ্যান্টিসেপটিক এর কাজ করে ফিটকিরি। কাটা অংশে রক্তপাত বন্ধ হবে জলে বিজিয়ে ফিটকিরি পাথর লাগিয়ে নিন। এছাড়া জলকে জীবানুমুক্ত করতে ফিটকিরি কাজ দেয়। ফিটকিরি জলে মিশিয়ে রাখলে জল জীবাণুমুক্ত হয়।
৪। ইউরিন ইনফেকশনের উপশম
ইউরিন ইনফেকশন দূর করে ফিটকিরি। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল গুণাগুণ আছে ফিটকিরিতে। তাই ইউরিন ইনফেকশন দূর করে। গোপনাঙ্গ ফিটকিরির জল দিয়ে পরিষ্কার করলে সংক্রমণ কমে যায়।
৫। মুখের যত্নে
ফিটকিরির জল দিয়ে মুখে ম্যাসাজ করলে মুখ পরিষ্কার হয়। দাঁতের জন্য প্রাকৃতিক মাউথওয়াশ হিসেবেও কাজ করে। মাড়ি ও দাঁত সুরক্ষিত থাকে।
৬। স্ক্যাল্পের যত্নে
ফিটকিরির জল দিয়ে মাথা ধুলে তা মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখে। মাথায় কোন ইনফেকশন থাকলে তা দূর হয়। খুশকির প্রবণতা কমে।
সারাংশ: ফিটকিরি এমন একটি প্রাকৃতিক খনিজ যা অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যাস্ট্রিনজেন্ট গুণসম্পন্ন উপাদান। ফিটকিরিকে প্রতিদিনের রুটিনে রাখলে উপকার পাওয়া যাবে নিশ্চই।