
আজকাল অনেক দম্পতি সন্তান ধারণে দেরি করেন। এর পেছনে নানা কারণ থাকে। আসলে গর্ভধারণ কেবল আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী ঘটে না। অনেকের ক্ষেত্রে বহু বছর অপেক্ষার পরেও সন্তান লাভ হয় না। শহরাঞ্চলেই নয়, গ্রামাঞ্চলেও সন্তান ধারণে দেরি করা স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। অনেক দম্পতি প্রায় ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন না। কিন্তু এর ফলে গর্ভধারণ এবং প্রজনন প্রক্রিয়ায় কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আজকাল অনেক দম্পতি একটি সন্তান লালন-পালনে তাদের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেন। দেরিতে বিয়ে করা, একে অপরকে বুঝে তারপর সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া ইত্যাদি নানা কারণে বৈবাহিক সম্পর্কে অনেক কিছু বদলে গেছে। তাছাড়া আইভিএফ, আইইউআই, আইসিএসআই-এর মতো প্রজনন প্রযুক্তি আজকের দম্পতিদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
দেরিতে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা অনেক দিক দিয়ে সুবিধাজনক হলেও আমাদের শরীরের জন্য তা খুব একটা ভালো নয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে নারী-পুরুষ উভয়েরই গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যায়। বিশেষ করে ৩০-এর দশকের শুরুতে মহিলাদের ডিম্বাণুর সংখ্যা এবং গুণমান কমে যায়। এর ফলে ৩৫ বছর বয়সের পরে মহিলাদের গর্ভধারণের ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পায়।
আজকাল অনেক মহিলার অকালে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। পুরুষদের প্রজনন স্বাস্থ্যেও পরিবর্তন আসে। তাদের বয়স অনুযায়ী শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়। শুক্রাণুর গুণমান এবং গতিশীলতাও কমে যাওয়া বেশ দেখা যায়।
প্রাকৃতিক গর্ভধারণ
কৃত্রিম পদ্ধতির চেয়ে প্রাকৃতিক গর্ভধারণকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আজকাল দম্পতিরা যখন প্রস্তুত হন তখনই গর্ভধারণ করতে চান। কিন্তু দেরিতে মা-বাবা হওয়ার অনেক ঝুঁকি রয়েছে। ৩০ বছর বয়সের পরে প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। গর্ভপাত, জিনগত ত্রুটি সহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মানসিক সমস্যা
দেরিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করা দম্পতিরা সামাজিক চাপের শিকার হন। গর্ভধারণের জন্য নানা চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন। শারীরিক ও মানসিক চাপ দম্পতিদের উপর প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে মহিলাদের উপর এর প্রভাব বেশি। এটি প্রতিরোধ করতে ৩০ বছর বয়সের কাছাকাছি পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই গর্ভধারণ পরীক্ষা করা উচিত।
গর্ভধারণ পরীক্ষা
নারী-পুরুষ উভয়েরই তাদের প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা জরুরি। ২০-এর দশকের শেষের দিকে বা ৩০-এর দশকের শুরুতে গর্ভধারণ পরীক্ষা করা উচিত।
কৃত্রিম পদ্ধতিতে গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নিলে এর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে ভালোভাবে জানা উচিত।
আপনার বসে থাকা জীবনযাত্রা থেকে মুক্তি পান। পর্যাপ্ত ঘুম, সপ্তাহে পাঁচ দিন ব্যায়াম, প্রতিদিন হাঁটা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ইত্যাদি প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
আপনি যদি ৩০ বছর বয়সের পরে সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং গর্ভধারণে ব্যর্থ হন, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। ৩৫ বছর বয়সের পরে গর্ভধারণের সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।