ডাক্তারের কাছে এসে অনেকেই অনুযোগ করেন, কাঁচা জল খেলেও অম্বল হয়ে যায়। আসলে অম্বলের সমস্য়ায় কেউ কেউ এমনই ভোগেন বারোটামাস, যাতে করে তাঁদের মনে হয় জল খেলেও বুঝি অম্বল হয়। যদিও বলাই বাহুল্য়, জল খেলে কিন্তু অম্বল হয় না। অম্বল হয় অন্য় কারণে। বলা ভাল, হাজারটা কারণে।
কেউ কেউ অভিযোগ করেন, এই তো সারাদিন ঠিক ছিলাম, যেই খেয়ে উঠলাম অমনি অম্বল হয়ে গেল। অথচ যা খেয়েছি সবই বাড়ির খাবার। একেবারেই রিচ নয়। তাহলে কী ব্য়াপার। অনেক প্রশ্ন করার পর হয়তো দেখা গেল, খাওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই উনি এক গ্লাস জল খেয়ে নিচ্ছেন। আর তাতেই অম্বল হয়ে যাচ্ছে। বলা হয়, খাওয়ার পর জল খেলে পাচক রস ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তাই হজম হয় না। অম্বল হয়ে যায়। তাই যাঁদের অম্বলের ধাত আছে, তাঁদের উচিত খাওয়ার আধঘণ্টা থেকে একঘণ্টা পরে জল খাওয়া।
অনেকেই আবার খাওয়ার পরেই নাক ডাকিয়ে ঘুমোতে যান। সেক্ষেত্রেও কিন্তু অম্বল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উচিত হল, খাওয়ার অন্তত দু-ঘণ্টা পর শুতে যাওয়া। সে দিনেই হোক কি রাতে।
কেউ আবার বলেন, বাড়ির খাবারই তো খাই। তাও অম্বল হয় কেন। খোঁজ নিলে হয়তো দেখা যাবে, রান্নায় শুকনো লঙ্কা দেওয়া হয় তাঁর বাড়িতে। জেনে রাখবেন, কাঁচালঙ্কা একটু-আধতু চলতে পারে রান্নায়, কিন্তু শুকনো লঙ্কা ভুলেও নয়।
অনেকেই আবার সারাদিন খুব সহজপাচ্য় খাবারও খেয়েও অম্বলে ভোগেন। সেক্ষেত্রে দেখা যায়, অনেকই জানেন না যে তাঁরা ল্য়াকটোজ ইনটলারেন্ট। অর্থাৎ দুধ তাঁদের সহ্য় হয় না। তাই চায়ের সঙ্গে দুধ বা দুধ দিয়ে তৈরি কফি খেলেই অনেকের অম্বল হয়ে যায়। এঁদের উচিত দুধ একেবারে পরিহার করা। তার বদলে টকদই বা ছানা খাওয়া যেতে পারে।
অনেকের আবার পাউরুটি খেলে অম্বল হয়। সেক্ষেত্রে পাউরুটি বাদ দিয়ে হাতে গড়া রুটি খেতে হবে। তবে ময়দার নয়, আটার তৈরি। যদি তাতেও অম্বল হয়, তাহলে গমের তৈরি খাবার যথাসম্ভব কমিয়ে দিতে হবে। বদলে ভাত খেতে হবে।
সাধারণত যাঁরা অম্বলের সমস্য়ায় ভোগেন, তাঁরা যেন বেশি ভাজাভুজি খাবেন না। খেলেও বাড়ির ভাজা খাবেন। বাইরের তেলেভাজা, রোল-চাউমিন বাদ দেওয়াই ভাল। আর হ্য়াঁ, অনেক সময়ে মিষ্টি খেলেও অম্বল হয়ে যায়। তাই যাদের পেটের সমস্য়া আছে, তাঁরা কিন্তু মিষ্টি খুব কম খাবেন। একেবারে মাঝেমধ্য়ে। ব্য়স। এগুলো একটু খেয়াল রাখলে দেখবেন, মুঠো-মুঠো অ্য়ান্টাসিড খেতে হবে না।