ইনটারস্টিশিয়াল লাং ডিজিজ বা আইএলডি। সোজা কথায় বলতে গেলে অসুখটি হল ফুসফুস ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাওয়া। অনেকেরই এই রোগের সূত্রপাত হয় কাশি দিয়ে। এবং তা চলতেই থাকে। এই অসুখের কাশি মূলত শুকনো, অর্থাৎ কফ ছাড়া। এই অসুখে অনেক সময়ে পরিশ্রম করতে গেলেও কাশি শুরু হয় বা বেড়ে যায়। জোরে হাঁটা বা সিঁড়ি দিয়ে উঠতেও শ্বাসকষ্ট শুরু হয় এবং তা বাড়তে থাকে। পরিশ্রম করার ক্ষমতা বাড়ে। অনেক সময়ে এই রোগে আক্রান্ত রোগী বসে বসেই হাঁপান। অথচ তিনি যে হাঁপানিতে ভুগছেন, এমনটা নয়।
রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস বা অন্য়ান্য় হাড়ের রোগের উপসর্গ হিসেবে যেমন গাঁটে ব্য়থা হয়, এই অসুখেও অনেক সময়ে তেমনটা দেখা যায়। বেশ কিছুদিন চলতে থাকা আর বাড়তে থাকা এই অসুখের প্রভাবে শরীরে অন্য়ান্য় কষ্টও বাড়তে পারে। ডানদিকের হৃদযন্ত্রের ওপর এর কুপ্রভাব তাড়াতাডি় দেখা দেয়। ফুসফুস ক্রমশ শুকিয়ে যায়, যার ফলে রোগী ক্রমশ বিছানাবন্দি হয়ে পড়ে। ওষুধ,পথ্য ও অক্সিজেন দেওয়া হয় রোগীকে। কিন্তু কখনও কখনও অজ্ঞাত কারণেই অসুখ ও শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে। যেহেতু এই রোগীদের ফুসফুসের ক্ষমতা কমে যায়, তাই সামান্য় কোনও সংক্রমণে এই রোগীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন ভীষণভাবে। তাই সামান্য় শর্দিজ্বরেই বিশেষ সাবধনতা অবলম্বন করা উচিত এই রোগে।
এই রোগ কেন হয়, তার কিছু কারণ জানা আছে ঠিকই। কিন্তু অনেক সময়ে আবার জানাও যায় না। সারকয়ডোসিস, রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসের মতো কিছু অসুখ থেকেও এই রোগ হতে পারে। বলতে গেলে ডাক্তারের কাছে এই রোগের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যেমন কিছু জন্মগত কারণ রয়েছে, তেমন কিছু অন্য়ান্য় অসুখও রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আইএলডি হল ইডিওপ্য়াথিক অর্থাৎ কারণ না -জানা অসুখ। স্টেরয়েড ও কিছু ইমিউনোসাকসেসিভ ওষুধ দিয়ে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। এছাড়াও বাজারে নতুন কিছু ওষুধ এসেছে। আশা করা যায়, ভবিষ্য়তে এই রোগের চিকিৎসা অনেক কার্যকরী ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত হবে।