
আজকাল দৈনন্দিন জীবনে ফেসওয়াশ, ক্রিম, লোশন, মেকআপ সামগ্রী, পারফিউম সবকিছুরই ব্যবহার বেড়েছে। তবে এখন আর দোকানে গিয়ে নয়, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অনলাইন শপিংও। ফলে দোকানে দাঁড়িয়ে যাও প্রসাধনীর মেয়াদটুকু দেখা হতো, এখন অনলাইন শপিং এবং ডেলিভারির চক্করে তাও হয় না। বেশিরভাগ মানুষই প্রসাধনী কেনার সময় শুধু দাম ও ব্র্যান্ডের দিকেই নজর দেন। অথচ প্রতিটি প্রসাধনীর গায়ে যে লেবেল সাঁটা থাকে, সেখানেই ছাপা থাকে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য, যা আমাদের ত্বকের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
লেবেল দেখে নেবো কেন?
লেবেলে ছাপা থাকে পণ্যের উপাদান তালিকা (Ingredients), উৎপাদন ও মেয়াদ শেষের তারিখ (manufacture and expiry date), ব্যবহারবিধি (how to use), ত্বক উপযোগিতা (যেমন: Dry, Oily, Sensitive), সতর্কতামূলক নির্দেশ, সংরক্ষণ পদ্ধতি এবং কখনও কখনও কেমিক্যাল ও অ্যালার্জেন সংক্রান্ত তথ্য। এই তথ্যগুলো ভালোভাবে না পড়ে সেই প্রসাধনী ব্যবহার করলে ত্বকে হতে পারে চুলকানি, অ্যালার্জি, ব্রণ বা অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। তাই কী কী দেখে নেওয়া জরুরি তা জেনে নেওয়া উচিত।
১। উপকরণের তালিকা
প্রসাধনী কেনার সময়ে দেখে নিতে হবে উপকরণের তালিকা। উদাহরণ স্বরূপ, আপনি ত্বক বা চুলের জন্য কোনো প্রসাধনী কিনলেন, যেমন- শ্যাম্পু বা ক্রিম। আগেই বলে রাখি ভারতের মতো উষ্ণতা ও আর্দ্রতা বেশির দেশে অ্যালো ভেরা, নিয়াসিনামাইড, হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের মতো উপাদান থাকাটাই শ্রেয়। এবার শ্যাম্পু বা ক্রিমের বোতলের পিছনে ‘ingredients’-এর ei উপকরণগুলি আদৌ আছে কি না, প্রসাধনী যে উপকোরণগুলি দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করছে সেগুলি আছে কিনা, দেখে কিনবেন।
কোনো শ্যাম্পু, ক্রিম বা প্রসাধনীতে অন্তত ১০ থেকে ২০ শতাংশ ভিটামিন সি থাকা দরকার। এছাড়াও রেটিনল, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড এইসব উপাদান রয়েছে কিনা, কতটা পরিমাণে রয়েছে, দেখে নিন সব। আসলে ভিটামিন সি ও রেটিনল ত্বকের কোলাজেন তৈরি করে। আবার অনেক প্রসাধনীর গায়ে উপকরণের তালিকা ঠিক করে দেওয়া থাকে না। সামান্য কিছু উপকরণের নাম বা কোথাও হয়তো তার পরিমাণও উল্লেখ থাকে না, সেই ক্ষেত্রে প্রসাধনীটি না কেনাই ভালো।
২। শংসাপত্র দেখে নেবেন
কেনার আগে প্রসাধনীটি ‘ডার্মাটোলজিক্যালি টেস্টেড’, ‘নন-কোমেডোজেনিক’ বা ‘ক্লিনিকালি প্রুভেন’ কি না দেখে নেবেন। এগুলোর একটিও বাদ থাকলে ব্যবহারের জন্য তা নিরাপদ নয়।
৩। মেয়াদ
Expiry date বা মেয়াদ শেষের তারিখ পার হয়ে গেলে প্রসাধনীর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে আছেন সবে মেয়াদ শেষ হয়েছে তাই এখনও ব্যবহার করে নিতে চান। বা অন্য কোনো ব্যবহারে কাজে লাগিয়ে নিতে চান। এমনটাও করবেন না। এতে ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এধরণের প্রসাধনী অল্প পরিমাণ ব্যবহারেও।
কী কী থাকলে কিনবেন না
কোনো প্রসাধনীতে যদি সালফেট, প্যারাবেন, ফর্ম্যালডিহাইড, মিনারেল অয়েল দেখেন উপাদানের তালিকায় সেই প্রসাধনী কিনবেন না। এগুলো প্রসাধনীর মেয়াদ দীর্ঘ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। নেল পলিশ, চুলের স্প্রে, পারফিউম সহ বিভিন্ন প্রসাধনীতে এগুলো মেলে, যা মানুষের হরমোনের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে, ক্যানসারের কারণ হতে পারে। ‘প্যারাবেন ফ্রি’, ‘প্যাথলেট্স ফ্রি’ লেখা থাকলে তবেই তা ব্যবহার করা যাবে।
অর্থাৎ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে নিজের পরিচর্যা করতে হলে প্রসাধনী কেনার আগে প্রসাধনীর গায়ে সাঁটা লেবেল পড়ুন, নিজের ত্বকের জন্য উপযুক্ত প্রসাধনীই বেছে নিন।