আন্ত্রিক রোগে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে শিশুমৃত্য়ুর সংখ্য়া আগের চেয়ে কমানো গিয়েছে। এরজন্য় কিন্তু গ্রামে গ্রামে আলাদা করে হাসপাতাল তৈরি করতে হয়নি। গ্রামে গ্রামে আলাদা করে ডাক্তার পাঠাতে হয়নি। শুধু একটাই কাজ করতে হয়েছে। তা হল গ্রামের মানুষকে বোঝানে, কী করে বাড়িতেই জীবনদায়ী ওআরএস বানিয়ে তা খানিকক্ষণ অন্তর অন্তর খাওয়াতে হবে বাচ্চাকে।
এভাবে দেখা গিয়েছে, ওআরএস খাওয়ানোর ফল জলশূন্য়তায় যে অসংখ্য় শিশুর মৃত্য়ু হত, তা অনেকটাই কমানো গিয়েছে। আসলে, বেশিরভাগ পেট খারাপ আপনা আপনিই সেরে যায়। তার জন্য় সেভাবে কোনও ওষুধপত্র দরকার হয় না। কিন্তু বারবার পায়খানা-বমির কারণে শরীর জলশূন্য় হয়ে পড়ে ওই সময়ে। আর তাতে করেই মৃত্য়ু হয় শিশুদের। বড়দেরও। তাই ওআরএস আবিষ্কারকে একটি যুগান্তকারী ঘটনা বলে চিহ্নিত করা হয়।
শহরে হোক কি গ্রামে, পেট খারাপ আর তার থেকে জলশূন্য়তার সমস্য়া কিন্তু কমবেশি একই। যে কারণে আমরা এখন পেট খারাপ হলেই আগে ওআরএস কিনিয়ে আনি। আর সেইসঙ্গে কিছু ওষুধ কিনে খাই। কিন্তু কথা হল কি, ওষুধের দোকান থেকে ওআরএস কিনে আপনি খেতেই পারেন। তবে তাতে করে অহেতুক খরচ বেশি। আর তাছাড়া, রাতবিরেতে কখন ওষুধের দোকান খোলা থাকল, কখন বন্ধ থাকল, সেই দুর্ভাবনাও তো রয়েছে। এমতাবস্থায় বাড়িতেই তৈরি করে নিন ওআরএস।
কীভাবে করবেন বলি। এক বোতল জল ফুটিয়ে নিন। টগবগ করে যাতে ফোটে লক্ষ রাখবেন। তারপর সেই জলকে নামিয়ে নিন। একটা পরিষ্কার পাত্রে খানিকক্ষণ রেখে ঠান্ডা করে নিন। তারপর তাতে পরিমাণ মতো নুন চিনি মেশান। একগ্লাস জলে এক থেকে দু-চামচ চিনি আর এক-দু চিমটে নুন মিশিয়ে নিন। এই হিসেবে এক বোতল জলে যতটা নুন ও চিনি দরকার হয়, সেই মতো ব্য়বহার করুন। তারপর ওই জল ঠান্ডা হলে পরিষ্কার বোতলে বা পাত্রে রেখে দিন। এবার খানিকক্ষণ অন্তর অন্তর রোগীকে সেই জল একটু-একটু করে খাওয়ান।
শিশু হোক কি বৃদ্ধ, ছোট হোক কি বড়, এই বাড়িতে তৈরি ওআরএস খাওয়ানোর ফলে জলশূন্য়তা বা ডিহাইড্রেশনের হাত থেকে বাঁচবে রোগী। আর জানবেন, তাতে করেই বিপদ দূর হবে। তবে আপনি চাইলে দোকান থেকে ওআরএস কিনে আনতে পারেন। এখন তো রেডিমেড ওআরএস-ও পাওয়া যায়। দোকান থেকে কিনে আনলেও কোনও ক্ষতি নেই। তবে বাড়িতে একবার তৈরি করতে পারলে, আপনাকে দোকানের ওপর নির্ভর করতে হয় না। ধরুন আপনি দু-প্য়াকেট কিনলেন। তারপর কখন তা শেষ হয়ে গেল। ওই সময়ে ওষুধের দোকান বন্ধ বা সেখানে যাওয়ার কেউ নেই। তাই বাড়ির তৈরি ওআরএসকে অনেক বেশি ভরসা করা যায়। শুধু টগবগ করে জল ফোটানো আর তাকে ঠান্ডা করে পরিমাণ মতো নুন-চিনি মিশিয় দেওয়া। ব্য়স, আর কোনও ঝামেলা থা