অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ বা সম্বন্ধ করে বিয়ে। শুনেই আজকের প্রজন্মের কপালে ভাঁজ পড়ে। যাকে চেনা নেই, জানা নেই, তাঁর সঙ্গে সারা জীবন ঘর বাঁধা যেন বিভীষিকা। শুধু পাত্র কী চাকরি করেন, নেশা করেন কিনা, মেয়েই বা কী করে, এই সবই কি বিয়ে হওয়ার জন্য যথেষ্ট? এই প্রজন্মের বেশির ভাগই কিন্তু তেমন মনে করে না। তাই আস্তে আস্তে ভারতে সম্বন্ধ করে বিয়ের সমীকরণও বদলে যাচ্ছে। সম্প্রতি এক সমীক্ষা থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্টটি বলছে, অ্যারেঞ্জড ম্যারেজের বদলে সেমি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ জায়গা করে নিচ্ছে। এই রিপোর্টটির নাম- প্রোগ্রেস অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস ওমেন ২০১৯-২০২০: ফ্যামিলিজ ইন চেঞ্জিং ওয়র্ল্ড । রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহিলারা এই রিপোর্ট পেশ করেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের শহুরে এলাকাগুলিতে জায়গা করে নিচ্ছে এই সেমি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ। এই বিয়ের ফলস্বরুপ গৃহহিংসার হার অনেকটাই কমেছে। পরিবারে গুরুত্বপূরণ বিষয়গুলিতে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তাতেও মহিলারা একই ভাবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।
এই রিপোর্টে বিয়েতে পণ নেওয়ার প্রসঙ্গও উঠে আসে। পণের উপর বহু বিধি নিষেধ থাকা সত্ত্বেও এখনও তা পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। ভারত ও বাংলাদেশে এই প্রচলন চলেই যাচ্ছে একই ভাবে। যে পরিবারে বিয়ে হচ্ছে, তাদের আর্থিক অবস্থা কেমন তাও বিয়ের ধরনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পণ দিতে না পারলে শ্বশুরবাড়িতে বউয়ের উপরে অকথ্য অত্যাচার চলার খবরও বার বার খবরের শিরোনামে উঠে আসে।
রিপোর্টটিই বলছে, শেষ দুই দশকে ডিভোর্সের রেট দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু এর মধ্য়ে মাত্র ১.১ শতাংশ মহিলা সত্যিই ডিভোর্সের মামলা করে ডিভোর্স পেয়েছেন। আর বেশির ভাগই হলেন শহুরে এলাকার মহিলা। তবে অন্য দেশের তুলনায় এ দেশ ডিভোর্সের হার বেশ খানিকটা পিছিয়ে রয়েছে। কারণ যদিও ডিভোর্স নিয়ে এদেশে এখনও সেভাবে মানুষ পরিণত ভাবে ভাবতে শেখেনি। এখনও ডিভোর্স নিয়ে মানুষের মধ্যে ট্যাবু কাজ করে।
পারিবারিক হিংসা, পণ, বোঝাপড়ার অভাব, মনোমালিন্য এসব এড়াতেই তাই এই প্রজন্মের মধ্যে জায়গা করে নিচ্ছে সেমি অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ। বাবা মা পাত্র বা পাত্রী দেখে দিলেও তা বুঝে নেওয়ার জন্য পাত্র পাত্রী নিজেদের মধ্যে বেশ খানিকটা সময় কাটাচ্ছেন।