শিশুদের মেরুদণ্ডের দিকে সতর্ক নজর রাখা প্রয়োজন। শুধু শিশুরাই নয়, কিশোরদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য়। যেসব ছেলেমেয়েরা অনেকক্ষণ ঝুঁকে পড়াশোনা করে অথবা অসামঞ্জস্য় উচ্চতার টেবিল চেয়ারে ঝুঁকে ও বেঁকে লেখাপড়া করে, তাদের ঘাড় থেকে কোমর পর্যন্ত শিড়দাঁড়ার কোনও-না-কোনও অংশে বিকৃতি দেখা দিতে পারে।
অনেক্ষণ সামনে ঝুঁকে কাজ করলে বা পড়াশোনা করলে বা পড়াশোনা করলে মেরুদণ্ডে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে। পরিণামে দেখা যায় বিশেষ ধরনের সমস্য়া। যাকে বলে কাইফোললিস। আজকাল ছেলেমেয়েদের এত পড়ার চাপ যে সহ্য়ের অতিরিক্ত বইখাতা ব্য়াগে পুরে তা পিঠে ঝুলিয়ে স্কুলে যেতে হয়। এর ফলে ঘাড়ে, পিঠে, কোমরে সমস্য়ার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে এদের মধ্য়ে স্পন্ডিলোসিস ও কাইফোসিসের মতো বড় উপসর্গ দেখা দেয়।
এখন কথা হল, বাচ্চাদের তো ঘরে আটকে রাখা যাবে না। তাদের স্কুলেও পাঠাতে হবে আবার খেলাধুলোও করতে দিতে হবে। ছোটরা একটু দামালও হবে। তাই তাদের দেহের কাঠামো কীভাবে ঠিক রাখা যায়, তা জেনে নেওয়া যাক।
শরীরে রয়-সয় এমন সব পদ্ধতি মেনে চলতে হবে। অনেকক্ষণ সামনের দিকে ঝুঁকে পড়াশোনা করা বা খেলাধুলো করা চলবে না। চেয়ারটেবিলের উচ্চতার সঙ্গে সমতা রেখে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করতে দিতে হবে। না-হলে অনেকক্ষণ অসামঞ্জস্য়ের চেয়ারটেবিলে পড়লে মেরুদণ্ডের সমস্য়া দেখা দিতে পারে। ছোটদের শোয়ার খাট বা বেবিকট সঠিক মাপের হওয়া দরকার। তা না হলে বড় মাপের বাচ্চাদের ছোট খাটে রাখলে মেরুদণ্ডের সমস্য়া দেখা দিতে পারে। সামনে ঝুঁকে থাকলে শিশুদের বুকের হাড়ে প্রচণ্ড ব্য়থা হতে পারে। একে বলে কসটোকনড্রাইটিস। সেজন্য় বেশি সামনে ঝোঁকা কখনই উচিত নয়। স্কুলে ফিজিক্য়াল ট্রেনিং করার সময়ে লক্ষ্য় রাখতে হবে, যেন বেশি চাপ না-পড়ে শরীরে। বাচ্চাদের কখনই উঁচু বালিশে মাথা রেখে শুতে বা ঘুমোতে দেবেন না। শোয়াবসার ভঙ্গিমায় যেন অস্বাভাবিকত্ব না থাকে। রোজ সহ্য়মতো ওজন নিয়ে কাজ করতে হবে। বেশি ভার বহন করা চলবে না। খাদ্য়াভ্য়াস ঠিক করতে হবে। ফাস্টফুড কমিয়ে পুষ্টিকর সুষম খাবার খেতে হবে।