কোলনে ব্য়াকটেরিয়া বা প্য়ারাসাইট সংক্রামণ অথবা শরীরে কেমিক্য়ালস বা বিষাক্ত কোনও ধাতুর প্রবেশ ঘটলে বারবার বারবার বাথরুম হতে থাকে। আর সেইসঙ্গে শরীর থেকে খুব তাড়াতাড়ি জল ও ইলেকট্রোলাইটস বেরিয়ে গিয়ে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। শরীরের এই অবস্থাই হল ডায়েরিয়া। অনেক সময়ে বাথরুমের সঙ্গে রক্ত ও মিউকাস বেরোয়। যাকে আমরা ডিসেন্ট্রি বলি।
ডায়েরিয়া তিন ধরনের। ফাংশনাল ডায়েরিয়া, অর্গানিক ডায়েরিয়া, ভাইরাল গ্য়াসট্রোএনট্রারাইটিস। গুরুপাক খাওয়া, রাসায়নিক দ্রব্য়, বিষাক্ত কোনও ধাতু, ব্য়াকটেরিয়াল ইনফেকশন ছাড়াও, অতিরিক্ত মানসির ও শারীরিক চাপের কারণেও হতে পারে ফাংশনাল ডায়েরিয়া। এছাড়া, কিছু অসুখ, যেমন হাইপারথাইরয়েডিজম, ইউরেমিয়া, এইসব রোগের থেকেও হতে পারে ফাংশনার ডায়েরিয়া।
ব্য়াকটেরিয়া ও প্য়ারাসাইট, খাদ্য় ও জলবাহিত হয়ে সুস্থ শরীরে সংক্রামণ ঘটাতে হতে পারে অর্গানিক ডায়েরিয়া। অনেক সময়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশুদের মধ্য়ে ভাইরাল সংক্রামণ ঘটলে, শরীর থেকে খুব তাড়াতাড়ি জল ও ইলেকট্রোলাইটস বেরুলে, ভাইরাল গ্য়াসট্রোএনটারাইটিস হয়। সাধারণত জন্ম থেকে দুবছর বয়সের মধ্য়ে থেকে এগুলো হয়ে থাকে।
ডায়েরিতাতে বারবার বাথরুম হওয়ার ফলে সিভিয়ার ডিহাইড্রেশন হয়। এছাড়া পেটে ব্য়থা, বমিভাব বা বমি, মাসের ক্র্য়াম্প, দুর্বলতা, ব্লাড প্রেশার কমে যাওয়ার মতো লক্ষ্মণ দেখা দেয়। ডায়েরিয়া যে ধরনেরই হোক না কেন, সবচেয়ে প্রাথমিক ও গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা হচ্ছে রোগীকে সঠিক সময়ে ওআরএস খাওয়ানো। বাজারে এখন এই ওআরএস কিনতেও পাওয়া যায়। কিন্তু ঘরেও করে নেওয়া যায় এই ওআরএস।
ডায়েরিয়া রোগীদের ঝালমশলা খাবার চলবে না। কৃত্রিম খাবার, ফাইবারযুক্ত ফলসবজি, কাঁচা স্য়ালাড, গোটা দানাশস্য়, খোলাওয়ালা ডাল, লাল আটার রুটি, শাকপাতা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, খুব মিষ্টি পাকা ফলের রস না-খাওয়াই উচিত। ডায়েরিয়ার চিকিৎসায়, টকদইয়ের ভূমিকা অসামান্য়। এই দইতে থাকে প্রোবায়োটিক। যা হজমে খুব ভাল সাহায্য় করে। ডায়েরিয়ার পক্ষে খুব উপকারী এই প্রোবায়োটিক। তাই পেট খারাপের সময়ে বাড়িতে পাতা বা দই বা দোকান থেকে কিনে আনা টকদই খাওয়া উচিত।