ডিজানেরশনের প্রকৃত অর্থ ক্ষয়। বয়সের সঙ্গেসঙ্গে চোখের কোষে কিছু ক্ষয় দেখা যায়। সেটি রেটিনার কেন্দ্রস্থল বা ম্য়াকুয়ায় দেখা যায়। যা দিয়ে আমরা পড়া বা দেখার কাজ করে থাকি। রেটিনায় থাকে রড ও কোন, এই দুধরনের কোষ। রড় দৃশ্য়বস্তুর পটভূমিকা তৈরিতে সাহায্য় করে। আর পড়ার কাজে সাহায্য় করে কোন। এই ক্ষয় কেবলমাত্র ম্য়াকুলাতেও হয়। চোখের এই অসুখটি দুধরনের হতে পারে। একটি ভিজে প্রকৃতির বা ওয়েট। অপরটি শুষ্ক প্রকৃতির বা ড্রাই। শুষ্ক প্রকৃতির ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতি না-হলেও ভিজে প্রকৃতির ম্য়াকুলার ডিজেনারেশন বেশ ভয়ের। তবে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে প্রথম ধরনের সমস্য়া। বাকি ১০ শতাংশ দ্বিতীয় প্রকারের হয়ে থাকে।
ছানি নেই, গ্লকোমা নেই, চোখের পাওয়ারও বাড়েনি, অথচ বইপত্র, কাগজ বা টিভির সবকটা লাইন দেখতে পাচ্ছেন না। হঠাৎ হঠার করে সামনের চেয়ার বা কোনও কিছুকে আঁকাবাঁকা দেখতে লাগছে। এইরকম সমস্য়ার উপসর্গ এই ম্য়াকুলার ডিজেনারেশন। ম্য়াকুলার ওয়েট জেনারেশন বা ভিজে প্রকৃতির ম্য়াকুলার ডিজেনারেশনে সাধারণত, ম্য়াকুলার নিচে ক্লোরোয়েড অংশে প্রয়োজনের অতিরিক্ত হঠাৎ করে কিছু ভেসেল তৈরি হয়। যা জট বা পিন্ডের সৃষ্টি করে। এতেই রোগী যেকোনও জিনিসকে বাঁকা দেখেন। তবে তখনও, সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না রেটিনার কোষ। এটি প্রাথমিক সমস্য়া। এই সময়ে রেটিনার কারভেচারে পরিবর্তন ঘটনার ফলে সবকিছু আঁকাবাঁকা দেখতে লাগে। পরবর্তী অবস্থায় রেটিনার কোষগুলি ক্রমশ নষ্ট হতে থাকে এবং দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ ক্ষীণ হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত রোগী চোখের মণি বা কেন্দ্রস্থলে একটি কালো রঙের গোলাকার ছাপ দেখে। কিন্তু সেটুকু অংশ বাদ দিয়ে আশপাশের অংশ পরিষ্কার দেখতে পায় সে। চশমা পরিবর্তন করলেও কোনও সুবিধে পাওয়া যায় না এক্ষেত্রে।
যখন এরকম কাউর সমস্য়া হবে, তখন কালবিলম্ব না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। কারণ এই সমস্য়া ফেলে রাখলে দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। ড্রাই ম্য়াকুলার ডিজেনারেশনে রোগীর দৃষ্টিশক্তি ততটা ক্ষীণ হয় না। আর সেক্ষেত্রে রোগী জিনিসপত্র আঁকাবাঁকা বা বিকৃত দেখে না। তাই চট করে ধরাও পড়ে না এই রোগ। তাই ৬০ বছর পেরোলেই নিয়মিত রুটিন চেকআপ করা জরুরি।