উত্তরাখণ্ড বরাবরই পর্যটকদের কাছে স্বর্গরাজ্য। দেবভূমি নামে পরিচিত এই রাজ্যে অসংখ্য ধর্মীয় স্থানের পাশাপাশি আছে অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ।
কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, তুঙ্গনাথ, হৃষীকেশ, রুদ্রপ্রয়াগ, দেবপ্রয়াগ, মুসৌরি, দেরাদুন, নৈনিতাল, কৌশানি, মুন্সিয়ারি, বিনসর, মুক্তেশ্বর, যজ্ঞেশ্বর, উত্তরাখণ্ডে পর্যটনস্থলের অভাব নেই। ধর্মীয় পর্যটনের জন্য যেমন এই রাজ্য বিখ্যাত, তেমনই প্রাকৃতিক পরিবেশও অপূর্ব। এই পার্বত্য রাজ্যে নানা ধরনের অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসেরও ব্যবস্থা রয়েছে। ট্রেকিংয়ের পাশাপাশি প্যারাগ্লাইডিং, জেট-স্কিইং, বাঞ্জি জাম্পিংয়ের রোমাঞ্চও উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া উত্তরাখণ্ডে এখনও এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে পর্যটকরা খুব একটা যান না। অথচ সেই জায়গাগুলির প্রাকৃতিক পরিবেশ অসাধারণ। পর্যটকরা কম যাওয়ায় পরিবেশ সেভাবে দূষিত হয়নি। এই জায়গাগুলিও একশ্রেণির পর্যটকের কাছে বিশেষ আকর্ষণের। যাঁরা নির্জন পাহাড়ি জায়গা পছন্দ করেন, তাঁরা উত্তরাখণ্ডের অনামী জায়গাগুলিতে যেতেই পারেন। নির্জন পাহাড়ি রাস্তায় গাড়ি নিয়ে ঘোরা বা হাঁটার মজাই আলাদা। যাঁরা এই আনন্দ উপভোগ করতে চান, তাঁরা দেরাদুন বা নৈনিতালের আশেপাশের জায়গাগুলিতে যেতেই পারেন। হিমালয়ের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।
পাহাড়ে বেড়াতে গেলে এখন অনেকেই হোম স্টে-তে থাকা পছন্দ করেন। অনেকে আবার তাঁবুতেও থাকতে চান। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় ভিলাতেও থাকার সুযোগ পাওয়া যায়। পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের ব্যবস্থা আছে। ফায়ারপ্লেস, বারবিকিউ, ইন্ডোর গেমস, আউটডোর অ্যাকটিভিটির ব্যবস্থা আছে।
উত্তরাখণ্ডের এক আশ্চর্য জায়গা হৃষীকেশ। এই পাহাড়ি শহরে যেমন মন্দির, আশ্রম, গঙ্গা, লছমন ঝুলা, রাম ঝুলা রয়েছে তেমনই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসেরও ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে যেমন বহু পর্যটক আধ্যাত্মিক চেতনার জন্য যান, তেমনই অনেকে রিভার র্যাফটিং, বাঞ্জি জাম্পিং, ফ্লাইং ফক্স, জায়ান্ট স্যুইংয়ের রোমাঞ্চ উপভোগ করতেও যান। ১২ বছর আগে হৃষীকেশে বাঞ্জি জাম্পিং শুরু হয়। অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস। এই রোমাঞ্চ উপভোগ করতেই প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক হৃষীকেশে যান।
যাঁরা অফবিট জায়গায় বেড়াতে যেতে চান, তাঁরা মুক্তেশ্বরের কাছে সাতখোলে যেতে পারেন। কুমায়ুন হিমালয়ের কোলে এই ছোট্ট গ্রামে প্রকৃতিকে ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। যাঁরা পাহাড়ে গিয়ে শহরের সবরকম সুবিধা খোঁজার বদলে পাহাড়ি গ্রামের পরিবেশ উপভোগ করতে চান, তাঁদের জন্য আদর্শ জায়গা সাতখোল। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, শীত, সব ঋতুতেই যাওয়া যায় সাতখোলে। এখান থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যেই আছে মন্দির, ঝর্ণা, পুরনো বেকারি। এগুলিও ঘুরে দেখতে পারেন পর্যটকরা। সব বয়সের মানুষই যেতে পারেন সাতখোলে।
আরও পড়ুন-
১ ফেব্রুয়ারি শুরু গান্ধীসাগর ফ্লোটিং ফেস্টিভ্যাল, অ্যাডভেঞ্চারের জন্য তৈরি পর্যটকরা
অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে যোগ দিতে ভয় লাগে? এই পন্থা বেছে নিতে পারেন
জনপ্রিয়তা বাড়ছে কোস্টাল ট্রেকিংয়ের, নির্জন সমুদ্রতটের রোমাঞ্চ উপভোগ করছেন সব বয়সের মানুষ