আপাতত স্বস্তিতে মুকুল রায়। রেলবোর্ডের সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার প্রতারণা মামলায় আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না তাঁকে। এমনই জানিয়েছে হাইকোর্টের শহিদুল্লা মুন্সির ডিভিশন বেঞ্চ।
রেলবোর্ডে সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার ভুয়ো প্রতিশ্রুতির মামলায় মুকুল রায়কে আপাতত স্বস্তি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুকুলকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে আজ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেয় বিচারপতি শহিদুল্লা মুন্সি ও বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, 'মুকুল রায় রাজ্যের সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কলকাতা পুলিশ তাঁকে নিরাপত্তা দেয়। তাহলে গ্রেফতারি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কেন মুকুল? এই মামলা নিয়ে এত তাড়া নেই। তাই আগাম জামিনের মামলাটি পরে হোক।' ফলে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে, মুকুলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা নিয়ে রাজ্য সরকার এত তৎপর থাকলেও এই মামলাটি নিয়ে 'ধীরে চলো নীতি' নিতে চাইছে কেন? মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ২ সেপ্টেম্বর।
জোনাল রেলওয়ে ইউজার কনসালটেটিভ কমিটির সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুকুল ঘনিষ্ঠ বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বাবান ঘোষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছর মে মাস পর্যন্ত সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক ব্যবসায়ীর থেকে ধাপে ধাপে ৭০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন বাবান। পরে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে সরশুনা থানায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মুকুল রায়, বাবান ঘোষ, সাদ্দাম আনসারি সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেন তিনি। ইতিমধ্যেই পুলিশ বাবানকে গ্রেফতার করেছে।
বাবানের গ্রেফতারের পরই আইনি রক্ষাকবচ চাইতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মুকুল। আগাম জামিনের আর্জি জানান তিনি বিচারপতি শহিদুল্লা মুন্সির ডিভিশন বেঞ্চে। মুকুলের হয়ে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।মামলার শুনানি চলাকালীন ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বাবান ঘোষ ২১ আগষ্ট গ্রেফতার হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সওয়াল করে ডিভিশন বেঞ্চ। কোর্ট বলে, বাবানের বিরুদ্ধে গত জানুয়ারি মাসে এফআইআর হল, পুলিশ ৮ মাস ধরে কী করছিল?
আরও পড়ুন :রাণুর নকল করে বিতর্কে অভিনেতা, থানায় অভিযোগ হতেই চাইলেন ক্ষমা
আরও পড়ুন :কেক খাওয়ালেন মুখ্যমন্ত্রী, উর্দি পরেই প্রণাম আইপিএস-এর! জড়ালেন বিতর্কে, দেখুন ভিডিও
সম্প্রতি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল বিজেপির মজদুর ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি বাবান ঘোষকে। রেলের কমিটিতে সদস্যপদ পাইয়ে দেওয়ার নামে ৭০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এই এফআইআরে নাম ছিল বিজেপি নেতা মুকুল রায়েরও। যার জেরেই যত বিপত্তি। ইতিমধ্য়েই ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে পাটুলি থেকে বাবানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুধ্যে ৪২০,১২০বি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। যেহেতু মুকুল রায়ের নাম করে এই টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাই এফআইআরে মুকুলের নামও রেখেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন :কেমন আছেন বুদ্ধদেব, রাজ্যপাল সাক্ষাতে ছবি এল প্রকাশ্যে
আরও পড়ুন : দিলীপের বাড়িতে দেবশ্রী! যোগদান ঘিরে জল্পনা
পুলিশ সূত্রে খবর, এই এফআইআর-এ ঘুষের মামলায় বিজেপির চারজনের নাম রয়েছে। সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেন বাবান ঘোষ। টালিগঞ্জে তৃণমূল থেকে অভিনেতা,টেকনিশিয়ানদের অনেককেই বিজেপির ছাতার তলায় আনতে সমর্থ হয়েছেন বাবান। বিজেপির অভিযোগ, সেউ কারণেই ঘাসফুলের চক্ষুশূল হয়েছেন বাবান। এদিকে বাবানের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। জোর করে বিজেপি নেতাদের বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।