“‘পিসি ভাইপোর বোল বিগার গিয়া’, কথাবার্তার ঠিক নেই”, দিলীপ ঘোষ শনিবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে ফের একবার নিশানা করলেন রাজ্যের শাসকদলকে।
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ শনিবার সকালে নিউটাউনের ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে ফের একবার নিশানা করলেন রাজ্যের শাসকদলকে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হালিশহরের চেয়ারম্যান রাজু সাহানি গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সবে শুরু হয়েছে আরো অনেকে গ্রেফতার হবে। এতগুলো তদন্ত শুরু হয়েছে চিটফান্ড থেকে শুরু করে নারদা, সারদা, এসএসসি এবং যত ধরনের এখানে নিয়োগ দুর্নীতি, সরকারি সমস্ত দপ্তরের পঞ্চায়েত থেকে ১০০ দিনের কাজ সব কিছুতে দুর্নীতি। যদি সত্যি সত্যি তদন্ত হয়, অর্ধেক পার্টির নেতা, মন্ত্রী সবাই জেলে ঢুকে যাবে। আমাদের বাংলার মানুষের ইচ্ছে, তাড়াতাড়ি শেষ হোক। তদন্ত সেই দিকেই এগোচ্ছে।”
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল অভিযোগ করেছেন যে, কয়লার বেশিরভাগ টাকা শুভেন্দু অধিকারীর মাধ্যমে অমিত শাহের কাছে পৌঁছে যেত। অমিত শাহকে ‘পাপ্পু’ বলেও সম্মোধন করেছেন অভিষেক। আজ সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “যখন পরিবারের দিকে অভিযোগের তীর, তখনই ‘পিসি ভাইপোর বোল বিগার গিয়া’, কথাবার্তা ঠিক নেই। মমতা ব্যানার্জি আমাদের নাম নিয়ে বলেছেন। এতদিন যে কনফিডেন্স নিয়ে কথা বলছিলেন, এখন তা গালাগালির পর্যায়ে চলে গেছে। তার মানে, ওনারা ভবিতব্য বুঝতে পারছেন। আগামী দিনে কেষ্টর মত হয়তো মাটিতেই শুতে হবে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সম্পত্তি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সেই মামলা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে এবং সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যদি প্রমাণ হয়, আর বলার কিছু নেই, বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিন। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দিলীপের মন্তব্য, “প্রমাণ নয় না। ওনারা ভেবেছিলেন যে, কোনদিন প্রমাণ হবে না। এরকম ভাবেই চলবে। যেই এখন কেস এসেছে, লোকজন অভিযোগ করার সাহস জোগাড় করেছে, তখন উনি (মমতা) বলছেন আমাকে গ্রেফতার করলে আপনারা রাস্তায় নামবেন কিনা। জিজ্ঞাসা করছেন। আমি বলছি, আমাদের নামেও তো কমপ্লেন করা হয়েছে, কোর্ট তদন্ত করুক। আমরা আমাদের সম্পত্তির হিসাব দিয়ে দেব। ওনারা ওনাদের সমস্ত সম্পত্তির হিসাব দিন। ঝামেলা মিটে যাবে। লোকের মনে কোনও সন্দেহ থাকবে না।”
ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে আগাম দুর্গাপুজো এনে ফেলেছেন, এতে শাসকদলের পুজো কেমন কাটবে, এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “মহালয়ার আগে উদ্বোধন করে পুজো এগিয়ে নিয়ে আসতেন। এখন এইসব (দুর্নীতিকাণ্ড) চাপা দেওয়ার জন্য পুজোকে এক মাস টেনে নিয়ে এসেছেন। পুজো পুজোর মত হবে। জৌলুস কম হবে। যারা পুজোতে স্পনসর করতেন, তারা ভেতরে যাচ্ছেন, যাবেন। অনেকে হয়তো বাড়ি ছেড়ে পালাবেন, পুজো দেখার সুযোগই পাবেন না। আমরা অপেক্ষা করবো পুজোটা সাধারণ মানুষ যেন ঠিক করে কাটাতে পারেন।”
সল্টলেকের ইডি-র দফতর থেকে বেরিয়ে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে, দুর্নীতির সাথে সামান্য যোগসূত্র প্রমাণিত হলে ফাঁসির দড়ি গলায় পরতে প্রস্তুত রয়েছেন তিনি। এই কথায় দিলীপের প্রতিক্রিয়া, “এসব কথা কোর্টে বলতে হবে। মিডিয়ার সামনে বলে কোনও লাভ নেই। কোর্টে বিচার হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে, কোর্টই ফয়সালা করবে। আমরা দর্শক মাত্র। সাধারণ মানুষের সন্দেহ হয়েছে, তাই তাঁরা কোর্টে গেছেন। কোর্টের উপর ভরসা আছে পুরোপুরি। সিবিআই, ইডির উপর ভরসা আছে। তারা যেভাবে কাজ শুরু করেছেন, এর আগে হয়নি। আমরা আশা করছি, সেই ভাবেই সম্পূর্ণ হবে।”
আরও পড়ুন-
অভিষেকের আজ বড় কিছু হতে পারে? সুকান্তর মন্তব্যে কীসের ইঙ্গিত!
মৃতদেহের সৎকারেও কাটমানি! রামপুরহাটে সদলবলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার দেওরের দাদাগিরি
খুনের সাজা যাবজ্জীবনের কম হবে না, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার উল্লেখ করল সুপ্রিম কোর্ট