
ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের পর তৃণমূলের দুই বিধায়ককে তলব করল সিবিআই। দুর্গাপুরের সিবিআই-র অস্থায়ী ক্যাম্পে হাজিরা দেন লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ এবং কেতু গ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ। সিবিআই সূত্রের খবর, ইলাম বাজারের বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারের খুনের মামলায় হাজিরা দিতে বলে লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ককে নোটিশ পাঠানো হয়। জেলার রাজনীতিতে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত দুই বিধায়ক।
সিবিআই হাজিরা দিতে এসে লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ জানান,' আমাকে ফোন করা হয়েছিল। তারপর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চাইল। দিলাম। সেখানেই নোটিস পাই। তদন্তকারীরা ডেকেছেন, তাই এসেছি। কেন ডেকেছেন, কী বৃত্তান্ত জানি না। আমি একজন আইন মেনে চলা নাগরিক। তদন্তকারীরা ডেকেছেন, তাই এসেছি।' অপরদিকে, কেতু গ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজের বক্তব্য, 'আমাকে নোটিস দেওয়া হয়নি। ফোন করেছিল। ২৮ তারিখ আসতে বলেছিল। আমি জানাই কেতুগ্রামে রয়েছি। তাতে বলল, কবে আসতে পারব , জানাতে। সেই মতো গতকাল ফোন করেছিলাম। তারপর আজ এলাম। কী বিষয় জানিনা। সাক্ষদানের ব্যাপার হতে পারে।'
গত কয়েকদিন ধরেই দুর্গাপুরের এনআইটি ক্যাম্পাসে অস্থায়ী ক্যাম্প গড়ে রয়েছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নেতাকেই ডেকে পাঠানো হয়েছে। কাউকে এক ঘন্টা, কাউকে দুই ঘন্টা জেরা করা হয়েছে। সমন পাঠিয়ে, মেসেজ করে, ফোন করে ডাকা হয় প্রত্যেককে। কল লিস্ট মিলিয়ে একে একে প্রত্যেককে জিজ্ঞাসা করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এই মামলাতে অনুব্রত মণ্ডলকে সম্প্রতি সাঁড়ে পাঁচ ঘন্টা জেরা করে সিবিআই।
প্রসঙ্গত, গত মাসেও এক বৃহস্পতিবার নিজাম প্যালেসে অনুব্রত মণ্ডলকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতোই এদিন সিবিআই দফতরে হাজির হন কেষ্ট। যদিও তাঁকে সিবিআই দফতরে আসার সময় তাঁকে, বুকে হাত দেওয়া এবং কাঁধে ভর দেওয়া অবস্থায় আসতে দেখা যায়। গরুপাচার মামলা থেকে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলা সিবিআই একাধিকবার তলব করলেও অসুস্থ সহ বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়েছেন অনুব্রত ওরফে কেষ্ট। শেষবার তিনি সিবিআই-র মুখোমুখি হন। এরপর ৪ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে সিবিআই দফতরে জিজ্ঞাসাবাদ চলে। আর জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে আসতেই ফের সোজা এসএসকেম-র উডবার্ণে ভর্তি হন অনুব্রত ওরফে কেষ্ট।
আরও পড়ুন, মুখমন্ত্রীকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য, রোদ্দুর রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের এফআইআর
এরপর ফের চিনারপার্কের বাড়ি ফিরে,আইনজীবী মারফত সিবিআইকে চিঠি দিয়ে জানান, আপাততত অনুব্রত মণ্ডলকে ১৫ দিনের বিশ্রাম নিতে বলেছেন চিকিৎসকেরা। সেই কারণে তিনি একদিন হাজিরা দিতে পারছেন না। কিন্তু তাতেও গলেনি মোম।ফের ভোট পরবর্তী হিংসায় সিবিআই দফতরে কেষ্টকে তলব করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি নিজাম প্যালেসে যাননি।সেদিনও ফের সিবিআই হাজিরা এড়িয়ে যান কেষ্ট। তবে এবার আর এড়াতে পারেননি। এবিষয়ে তৃণমূলের কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন,'এটা আইনি প্রক্রিয়া। এনিয়ে দলের কিছু বলার নেই। তবে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ তুলে বিজেপি নেতারা বহু এলাকায় প্ররোচনা দিচ্ছেন। কোনও কোনও জায়গায় আদি ও নব্য বিজেপি কর্মীদের মধ্যেও মারামারি হচ্ছে। প্রতিহিংসার রাজনীতি করে তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করে রাগ মেটানোর চেষ্টা করছে বিজেপি।'
আরও পড়ুন, সময়ের আগেই বর্ষা ঢুকল বাংলায়, কলকাতায় ঝড়-বৃষ্টি, প্রবল বর্ষণ দুই বঙ্গে