১০০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েও ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্কুলের মধ্যে প্রথম আলম, চোখে স্বপ্ন বিজ্ঞানী হওয়ার

জন্মের পর থেকেই স্নায়ুর দুর্বলতার কারণে অকেজো ছেলেটার হাত পা। একা একা কিছুই করতে পারেনা সে। তবু মনের জোরে পা দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে মাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে আলম এখন জেলার স্টার।

Senjuti Dey | Published : Jun 4, 2022 8:23 AM IST

ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় - কথাটা আমরা কম বেশি সবাই শুনেছি। কিন্তু সেই কথাটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মহম্মদ আলম রহমান। শারীরিক ভাবে এতটাই দুর্বল সে ব্যাগ থেকে বই বার করা দূরে থাকা নিজে নিজে খেতে বা স্নান করতেও অক্ষম সে। সেই ছাত্র মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬২৫ অর্থাৎ ৯০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছে। রাজ্যের মেধাতালিকায় প্রথম দশের মধ্যে সে আসতে পারেনি কিন্তু ১০০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করে গণিতে ৯৮, ভৌতবিজ্ঞানে ৯৪, ভূগোলে ৯৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আলম। হাসি ফুটেছে পরিবার সহ গ্রামের মানুষের। গর্বে বুক ভরেছে স্কুল শিক্ষকদের।

জন্মের পর থেকেই স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত আলমের দুই হাত পা অকেজো। তবুও কষ্ট করে পায়ে লিখেই স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়ে নজীর গড়লেন মহম্মদ আলম রহমান। পেলেন ৯০ শতাংশ নম্বর।মুর্শিদাবাদ জেলার বৈদ্যনাথ জেলার বাসিন্দা সে। বড় হয়ে মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখে আলম। কিন্তু মুদির ব্যবসায়ীর ছেলের এহেন স্বপ্নের পথে প্রতিবন্ধকতা আর আর্থিক অবস্থা বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে নাতো? প্রশ্ন তার বাবা মায়ের। আলমের অভূতপূর্ব ফলাফলে কাল থেকেই বাড়িতে ভীড় করছে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি প্রশাসনিক আধিকারিকরাও। আলমের বাবা জানালেন কিভাবে প্রতিদিন সাইকেলে করে ছেলেকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া নিয়ে আসা করতেন তিনি। আবেগের পাশাপাশি দুশ্চিন্তাও গ্রাস করছে আলমের পরিবারকে। মুদির দোকান চালিয়ে সংসারের পাঁচ জন সদস্যের মুখে ভাত তুলে দেওয়ার পর আলমকে কি আদেও বিজ্ঞান নিয়ে পড়াতে পারবেন তারা?

আরও পড়ুন: 

মাধ্যমিকে দ্বিতীয় এবং মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান পেলেন মালদার কৌশিকী

সপ্তাহ পেরোলেই এবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফলপ্রকাশ, দিনক্ষণ ঘোষণা করে ওয়েবসাইটও জানাল সংসদ

অনলাইন ক্লাসের সমস্যা টপকে মাধ্যমিকে চতুর্থ স্থানে সাগ্নিক, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন

আলমের বাবা ফিরোজ মহম্মদ জানান "সে একা স্কুল যেতে পারে না। সাইকেলে করে নিয়ে যেতে হয়। বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য অনেক দূর যেতে হবে। সংসার চালিয়ে ওর পড়াশোনা কী ভাবে চালাব সেটাই চিন্তা করছি।" এই প্রসঙ্গে গড্ডা গণপতি আদর্শ বিদ্যালয়ের এস আই তনুময় দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "ভাবতে এবং বলতে খুব ভালো লাগছে প্রতিবন্ধকতা শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনও বাধা হয় না তাঁর প্রমাণ মোহম্মদ আলম রহমান। তাঁর পড়াশোনার যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে পরিবারের আর্থিক সমস্যার কথা জানাব।" মহম্মদ আলমের মতন নক্ষত্ররা সমাজে অনেকের অনুপ্রেরণা হতে পারে। তার সমস্ত স্বপ্ন যেনো পূরণ হয়।

Share this article
click me!