পুলিশ এসে দেখে যে, কার্তিক নিজের স্ত্রী-র মৃতদেহের পাশে শান্তভাবে বসে আছেন।
নিজের স্ত্রীকে খুন করে ঘরের সমস্ত দায়িত্ব পালন করলেন স্বামী, সন্তানদের পাঠালেন টিউশন ক্লাসে। তারপর নিজেই ফোন করলেন পুলিশে। অবাক করা এই ঘটনা ঘটেছে খাস কলকাতায়। ৪১ বছর বয়সি অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম কার্তিক দাস। তাঁর স্ত্রীয়ের নাম সমাপ্তি। বৃহস্পতিবার বেলা ১ টা নাগাদ এই খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কলকাতার বেহালার কাছাকাছি নিউ আলিপুর এলাকায়। ২৮ বছর বয়সি সমাপ্তিকে খুন করে তাঁর দেহ চাদর চাপা দিয়ে ঢেকে রেখে গৃহস্থালির সমস্ত কাজ সম্পন্ন করেছিলেন কার্তিক। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে নিজের ছেলে এবং মেয়ের জন্য খাবার তৈরি করে এবং তাদের খাইয়ে টিউশন ক্লাসে পড়তে পাঠান তিনি। তারপর সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ তিনি 100 ডায়াল করে পুলিশকে খুনের কথা জানান এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করেন।
কার্তিক দাস পুলিশকে ফোন করে বলেছিলেন যে, তিনি পুলিশ আসার জন্য নিজের বাড়িতেই অপেক্ষা করবেন, নিউ আলিপুরের কাছে মহাবীরতলায় একটি ভাড়া করা বাড়িতে তিনি পরিবার নিয়ে থাকতেন। পুলিশ যখন সেই বাড়িতে পৌঁছায়, তখন তিনি নিজের বাচ্চাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে ফেলেছিলেন এবং তাদের টিউশন ক্লাস থেকে ফেরত নিয়ে আসার জন্য নিজের শাশুড়িকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন।
পুলিশ এসে দেখে যে, কার্তিক নিজের স্ত্রী সমাপ্তির মৃতদেহের পাশে শান্তভাবে বসে আছেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আবার বলেন যে, তিনিই নিজের স্ত্রীকে হত্যা করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে যে, কার্তিক একটি ছোট মুদির দোকান এবং একটি মাংসের দোকান চালাতেন। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে নিজের স্ত্রীয়ের সঙ্গে তাঁর প্রায়ই ঝগড়া হত। বুধবার রাতেও তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল, এবং রাগের মাথায় কার্তিক সমাপ্তিকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলেন। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “আমরা খতিয়ে দেখছি যে, অভিযুক্ত নিজের স্ত্রীকে আক্রমণ করার আগে বাচ্চাদের অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিয়েছিল কিনা।”
পুলিশের আরেকজন কর্মকর্তা বলেছেন, “পুলিশকে কল করার আগে তিনি রাতে কোনও প্রমাণ নষ্ট করেছেন কিনা, তাও আমরা পরীক্ষা করে দেখব।”