দেহাংশ বিক্রি করেই ২০০ কোটি, জেনে নিন আর কী কী রহস্য লুকিয়ে আছে আরজি করের মর্গে
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে খবরে আরজি কর হাসপাতাল। এই হাসপাতাল থেকে উদ্ধার হয় এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ। ধর্ষণ করে খুন করা হয় তাঁকে। এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে।
ফাঁস হয় অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের দুর্নীতি। হাসপাতালের বেড ও সরঞ্জাম নিয়ে হত দুর্নীতি। বেড খারাপ হয়ে গেলে তা সারিয়ে ফের ব্যবহার করা হত। এদিকে দেখানো হত নতুন বেড কেনা হয়েছে। এভাবে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করতেন সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর গ্যাং।
মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের তারিখ বদলে ব্যবহার করা হত। বেড, ওষুধ, অস্ত্রোপচার এবং চিকিৎসকের সরঞ্জাম খাতেই আরজি করে অন্তত ৭ থেকে ৮ কোটা টাকা দুর্নীতি হত।
সামনে এসেছে মৃতদেহ নিয়ে পর্নোগ্রাফি তৈরির কথা। আরজি কর কাণ্ডে ধৃতের মোবাইল থেকে এমন কিছু ভিডিও উদ্ধার হয়েছে, যা ওই মেডিক্যাল কলেজের মর্গের ভিতরের। যেখানে মরদেহের সঙ্গে ধৃতের সহবাসের ছবি মিলেছে।
শোনা গিয়েছে মৃতদেহের সঙ্গে পর্নোগ্রাফি তৈরি করা হত হাসপাতালের মর্গে। আরজি কর কাণ্ডের তদন্ত করতে নানান তথ্য এসেছে সামনে । এখনও চলছে তদন্ত।
দেহাংশের হিসেবে গরমিল পাওয়া গিয়েছে। ২০২১ সাল থেকে বিগত কয়েক বছরের প্রায় প্রতিটি অর্থবর্ষেই অন্তত ৬০ থেকে ৭০টি দেহের হদিশ মিলছে না।
কঙ্কালের হিসেবে গরমিল রয়েছে। যে কারণে মর্গের ভিতরের নকশা, কোল্ড চেম্বার, রেজিস্টার খাতা, শেষ কয়েক মাসের সিসি টিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, গত সাত বছরে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে অন্তত ২০০ কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে। এই হাসপাতালের দুর্নীতির তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, রাজ্যের হাসপাতালগুলোর বেশ কিছু মর্গ কার্যত দুর্নীতির আড়ত হয়ে উঠেছে।
সূত্রের দাবি মর্গে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির দেহ থেকে অঙ্গ বের করে তা বিক্রি করা হত। এক একটি অঙ্গের দর অন্তত ৪ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। গত সাত বছরে অন্তত ২০০ কোটির টাকা দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুমান।
ইদানীংকালে রাজ্যেও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে মানুষের হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ, কিডনির চাহিদা বেড়েছে। মূলত চিকিৎসায় এগুলো লাগে। আন্দাজ এই কারণে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে দুর্নীতি চলছে।
এই অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির কারাবারে প্রাথমিক কিছু সূত্র মিলেছে। ওই সূত্র ধরে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ দুজনের খোঁজ মিলেছে বর্তমানে চলছে তদন্ত। আরজি কর ঘিরে আরও কোনও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে কি না, তাই দেখার।