Calcutta High Court On Kidney Transplant: কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে নজিরবিহীন ঘটনা। পূর্ব বর্ধমানের এক বাসিন্দাকে দাতা মারফত কিডনি প্রতিস্থাপনের অনুমতি দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বিস্তারিত জানতে দেখুন সম্পূর্ণ ফটো গ্যালারি…ক
দীর্ঘদিন ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা শেখ হাবিবুর রহমান। ২০২৪ সালে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হলে হাসপাতালে চিকিৎসকরা হাবিবুরকে কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। তারপর নানা জলঘোলায় কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়টি গড়ায় আদাতে। সেই মামলার শুনানিতে এবার কিডনি প্রতিস্থাপনে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। নজিরবিহীন নির্দেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার।
25
বিচারপতি অমৃতা সিনহার দৃষ্টি আকর্ষণ
সূত্রের খবর, কিডনি পাওয়ার জন্য সরকারি জায়গায় আবেদনও করেন হাবিবুর ও ওই বেসরকারি হাসপাতাল। রাজ্যের তালিকায় ২৬ নম্বরের নাম ছিল তাঁর। কিন্তু হাবিবুরের স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় অবশেষে ব্যবসায়িক বন্ধু তথা উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা লালটু রায়চৌধুরী হাবিবুরকে স্বেচ্ছায় কিডনি দিতে রাজি হন। কিন্তু কিডনি দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে আর্থিক লেনদেন নিয়ে সন্দিহান থাকায়, হাবিবুরের কিডনি প্রতিস্থাপনের আবেদন খারিজ করে দেয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সংশ্লিষ্ট ফোরাম। রাজ্যেের উপরে কোনও আপিলেট ফোরাম না থাকায় এরপরই স্বামীর কিডনি প্রতিস্থাপনের অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন হাবিবুর স্ত্রী সেহনাজ বেগম। বিচারপতি অমৃতা সিনহার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মামলা দায়ের হয় আদালতে।
35
স্বাস্থ্য দফতরে আবেদন বাতিল
এরপর আদালতে হাবিবুরের স্ত্রী জানান যে, সরকারি ভাবে কিডনি পাওয়ার আবেদন তিনি করেছিলেন। কিন্তু সরকারি তালিকায় তার স্বামীর নাম ২৬ নম্বরে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাবিবুরের স্ত্রী আদালতকে জানান, ব্যবসায়ীক বন্ধু পেশায় ব্যাগ ব্যবসায়ী লাল্টু রায় চৌধুরী তাঁর স্বামীকে কিডনি দান করতে প্রস্তুত। তাই সেই কিডনি প্রতিস্থাপনের অনুমতি দিক আদালত। মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং গোপা বিশ্বাস আদালতে দাবি করেন, অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন অনুযায়ী কিডনি দাতা এবং গ্রহীতার সমস্ত মেডিক্যাল তথ্য ও অন্যান্য সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও কারণ ছাড়াই সেই আবেদন বাতিল করে দেয় স্বাস্থ্য দফতর।
এদিকে কিডনি প্রতিস্থাপনের আবেদন বাতিল করার কারণ হিসেবে রাজ্য জানায়, কিডনি গ্রহীতা এবং দাতার মধ্যে সম্পর্কের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পায়নি কমিটি। অঙ্গদানের ক্ষেত্রে দালাল মারফত কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছে কিনা , তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কিন্তু মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম দাবি করেন, আইন অনুযায়ী দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে সম্পর্ক থাকতেই হবে, এমন বিধি নেই। আর্থিক লেনদেন ছাড়া স্বেচ্ছায় কিডনিদাতা কিডনি দিতে প্রস্তুত হয়েছেন বলে হলফনামা দিয়ে আদালতে জানান ফিরদৌস শামিম।
55
কিডনি প্রতিস্থাপনের অনুমতি
জানা গিয়েছে, উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানান, কিডনি দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে কোনও আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে আদালত সেই রকম কোনও তথ্য খুঁজে পায়নি। এছাড়াও পারিবারিক বা রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও কেউ যদি স্বেচ্ছায় কিডনি দান করতে চান তাহলে তা করাই যায়। এরপরই মামলাকারীর আবেদন মেনে নিয়ে লাল্টু রায়চৌধুরীকে কিডনি দানের অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি হাবিবুর রহমানের কিডনি প্রতিস্থাপনের অনুমতি দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এবং তা দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।