সঞ্জয়কে জেরা করতে গিয়ে বমি করার অবস্থা তদন্তকারীদের, এক পোশাকেই কাটল এক মাস

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত সঞ্জয় রায়। প্রায় এক মাস হয়ে গেল তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই।

আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয় ৯ আগস্ট সকালবেলা। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ৮ আগস্ট গভীর রাতে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। পরের দিন অর্থাৎ ১০ আগস্ট পুলিশ ব্যারাক থেকে গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয় রায়কে।

কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করলেও সিবিআইকে যখন কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তের ভার দেয় তখন সঞ্জয়কে সিবিআই হেফাজতে নেয়। ১৪ দিনের হেফাজত শেষে বর্তমানে শিয়ালদহ কোর্টের নির্দেশে সঞ্জয় রয়েছে জেল হেফাজতে।

প্রেসিডেন্সি জেলের পয়লা ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ১০ নম্বর সেলে রাখা হয়েছে সঞ্জয়কে।

জেল সূত্রের খবর সঞ্জয় রায় এক পোশাকেই টানা এক মাস কাটিয়েছেন। যা বারবার ধরা পড়েছে সংবাদ মাধ্যমের ভিডিওতে। পলিগ্রাফ টেস্ট থেকে শুরু করে আদালতে পেশ, সর্বদাই তার গায়ে ছিল রঙতটা ব্লু টিশার্ট আর একটা ধুসর জিন্স।

আরজি কর কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সঞ্জয়ের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে তাঁর মা ও দিদিরা। স্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ দিনই যোগাযোগ নেই। তাই রীতিমত করুণ দশা সঞ্জয়ের।

কালীঘাট এলাকায় সঞ্জয়ের বাড়ি। সেখানেই মায়ের সঙ্গে থাকত। কালীঘাট থেকে প্রেসিডেন্সি জেল হাঁটা পথ। কিন্তু তাও একদিনও ছেলের সঙ্গে দেখা করতে আসেনি। জামাকাপড় দেওয়া তো দূরের কখা।

ভাই সঞ্জয় রায় দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই দিদিরা ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছে। তাই তারাও দেখা করতে আসেনি একমাত্র ভাইয়ের সঙ্গে। তাই জামাকাপড় দেওয়ার প্রশ্নই নেই।

একই জামাকাপড় টানা একমাস ধরে পরে থাকায় দুর্গন্ধ ছাড়তে শুরু করেছে। এই অবস্থায় প্রেসিডেন্সি জেলে এসে নিজেই কারারক্ষীদের কাছে জামাকাপড় চেয়েছিল সঞ্জয়। কিন্তু কারারক্ষীরা জানিয়েছে, পরিবার থেকে জামাকাপড় দিয়ে গেলে জেলের নিময় মেনে তা পরতে পারবে সঞ্জয়। কিন্তু পরিবার কিছুই দেয়নি।

সঞ্জেয়ের এই দুর্দশার কথা জানতে পেরে এত আত্মীয় দুটি জামা আর একটি ট্রাউজার কিনে দিয়েছে। তাতেই সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হয়েছে।

সঞ্জয়ের যতদিন সিবিআই হেফাজতে ছিল ততদিন কেউ ই আসেনি। তাই একই জামা আর প্যান্ট পরে থাকত। তাতে রীতিমত দুর্গন্ত ছাড়তে শুরু করেছিল। জেরাই দায় হয়ে যাচ্ছিল।

আরজি কর কাণ্ডে তাঁকে পুলিশ পাকড়াও করার পর থেকেই রীতিমত নির্বিকার সঞ্জয় রায়। যদিও আইনজীবী জানিয়েছেন, সঞ্জয় এই ঘটনায় মোটেও জড়িত নয়। তাঁকে ফাঁসান হয়েছে।