গত কয়েক বছরে তৃণমূল কংগ্রেসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এখন দলে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা অভিষেকই।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরা, মেঘালয়, গোয়া, মণিপুর, অসমের মতো রাজ্যগুলিতে দলকে শক্তিশালী করে তোলার চেষ্টা করছেন অভিষেক। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে দলকে জেতানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন অভিষেক। ফলে দলে তাঁর গুরুত্ব অনেক বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণে এবার তাঁকে দলের রাজ্য সভাপতি করার দাবিও উঠল। শনিবার এই দাবি তোলেন স্বয়ং তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। শনিবার কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে ছিল তৃণমূলের নির্বাচনী কমিটির বৈঠক। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মমতা ও অভিষেক দু'জনেই এই বৈঠকে ছিলেন। সেখানেই অভিষেকের জন্য নিজের পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন সুব্রত। যদিও মমতা তাতে রাজি হননি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে এখন এই আলোচনা চাইছেন না তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো।
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে প্রচারের প্রধান দায়িত্ব নিজে নেন অভিষেক। ২ মাস ধরে রাজ্যজুড়ে তাঁর নবজোয়ার কর্মসূচি চলেছে। এই জনসংযোগ অভিযানে অল্প কয়েকটি জায়গাতেই ছিলেন মমতা। বাকি সব প্রচারাভিযানেই প্রধান ভূমিকায় দেখা যায় অভিষেককে। শুক্রবার এই জনসংযোগ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। এরপরেই অভিষেককে দলের রাজ্য সভাপতি করার প্রস্তাব দিলেন সুব্রত। অভিষেককে ভবিষ্যতে হয়তো এই পদে দেখা যেতে পারে। তবে আপাতত সেটা চাইছেন না দলনেত্রী। তাঁর মনোভাব বুঝতে পেরে আর কোনও মন্তব্য করেননি সুব্রত।
শুক্রবার কাকদ্বীপে নবজোয়ার কর্মসূচির শেষ দিন অভিষেকের সঙ্গে একই মঞ্চে ছিলেন মমতা। তিনি অভিষেককে একটি ছবি উপহার দেন। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আহত অবস্থায় মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে বাড়ির বিছানায় বসে আছেন মমতা। পাশে তাঁর মা ও ছোট্ট অভিষেক। কাকদ্বীপের এই মঞ্চে অভিষেক সম্পর্কে মমতা বলেন, 'অভিষেক ২ বছর বয়স থেকেই রাজনীতি করে। ১৯৯০ সালে ওর ২ বছর বয়স ছিল। তখন সিপিএম মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল। আমি যখন বাড়ি ফিরেছিলাম, তখন মা আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল, কী করে এই ঘটনা ঘটল। আমি মাকে সমস্তটাই বলেছিলাম। অভিষেক তখন মায়ের কোলে বসে সবকিছু শুনছিল। পরের দিন থেকেই ও একটা ঝান্ডা নিয়ে বাড়িতে মিছিল করত আর বলত, দিদিকে মারলে কেন সিপিএম জবাব দাও। সেই সময় থেকেই ও রাজনীতি করছে। তাই ওর সম্পর্কে বলে বিরোধীদের কোনও লাভ হবে না।'
আরও পড়ুন-
পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার জের, রাজ্য প্রশাসনকে কড়া হুঁশিয়ারি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের
তৃণমূলের 'পথের কাঁটা' নির্দল প্রার্থী, কালীঘাটের প্রস্তুতি বৈঠকে নির্মূল করার দাওয়াই নেতাদের
প্রশিক্ষণ শেষের আগেই বাড়তি ৯ হাজার পুলিশ ভোট ময়দানে , মমতার দফতরের বিরুদ্ধে ঘোরতর অভিযোগ শুভেন্দুর