উত্তম দত্ত, হুগলি: ভগবান শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিন বলে কথা। একটু রাবড়ি, ক্ষীর হবে না? আর এই রাবড়ির বিপুল চাহিদা মেটাতে জন্মাষ্টমীর আগের দিন রাত থেকেই দিনরাত এক করে খাটেন রাবড়ি গ্রামের বাসিন্দারা।
কী অবাক হচ্ছেন? হ্যাঁ, হুগলি জেলার চণ্ডীতলা থানার আঁইয়া পঞ্চায়েতের গাংপুর গ্রামকে লোকে চলতি ভাষায় রাবড়ি গ্রাম নামেই চেনে। এই গ্রামের প্রায় চল্লিশটি বাড়িতেই রাবড়ি তৈরি হয় এবং গ্রামের বেশির ভাগ লোকের রুটি রুজি এই রাবড়ির উপরেই নির্ভরশীল। কলকাতায় অধিকাংশ নামী মিষ্টির দোকানে যে রাবড়ি পাওয়া যায়, তার সিংহভাগ আসে এই গ্রাম থেকে। গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত বালতি বলেন, 'শুধু কলকাতা নয় হাওড়াতেও আমরা রাবড়ি সরবরাহ করি।'
জন্মাষ্টমীর আগের দিন প্রশান্ত বালতির দাদা জয়ন্ত বালতি, সনাতন ঘোষ, বিফল বালতিরাও দারুণ ব্যস্ত ছিলেন। কারণ জন্মাষ্টমীর দিন প্রত্য়েকেই চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ কেজি রাবড়ি সরবারহ করার কথা ছিল কলকাতার বিভিন্ন দোকানে।
আরও পড়ুন- জন্মাষ্টমী স্পেশাল রেসিপি তালের পায়েস
আরও পড়ুন- শুক্রবার সারা দেশে পালিত হবে শ্রীশ্রীকৃষ্ণজন্মাষ্টমী ব্রত, জেনে নিন তার সময়সূচী
আরও পড়ুন- বাড়িতে সহজেই বানিয়ে ফেলুন জন্মাষ্টমী স্পেশাল তাল পাতুরি
কলকাতা থেকে ডানকুনি হয়ে অহল্যাবাই রোড ধরে মশাট বাজার। সেখান থেকে বাঁদিক নেমে একটি রাস্তা সোজা চলে যাচ্ছে হাওড়ার বড়গাছিয়া। সেই রাস্তাতেই পড়ে এই ছোট্ট গ্রাম। যার চলতি নাম রাবড়ি। প্রায় পঁচিশ বছর ধরে এই শিল্প গ্রামে চলে আসছে। বিশাল মাপের মাঝখানে খাঁজকাটা কড়াই প্রয়োজন হয় রাবড়ি তৈরির জন্য। গ্রামের প্রায় সব বাড়িতেই তা রয়েছে। মাটির উনুনের উপরে দুধ জাল দিয়ে দিয়ে রাবড়ি তৈরি করা হয়।
তবে প্রশান্ত, বিফলদের আফশোস,তাঁদের কাছে কোনও সরকারি সাহায্য আসে না। কোনও স্বীকৃতিও নেই। শক্তিগড়ের ল্যাঙচা, বর্ধমানের মিহিদানা, সীতাভোগ বা কৃষ্ণনগরের সরভাজার মতো তাঁদের তৈরি রাবড়িরও একদিন দেশজোড়া খ্যাতি হোক, এটাই দাবি রাবড়ি গ্রামের।