আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী তালিকায় নাম থাকলেও এখনও দেওয়া হয়নি চাকরি।একসময় জঙ্গলমহলের ত্রাস রঞ্জিত পাল এবং বিক্রমের দলের লিঙ্ক ম্যানরা রাজ্য সরকারের ঘোষিত পুনর্বাসন প্যাকেজ থেকে বঞ্চিত।
আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী তালিকায় নাম থাকলেও এখনও দেওয়া হয়নি চাকরি।একসময় জঙ্গলমহলের ত্রাস রঞ্জিত পাল এবং বিক্রমের দলের লিঙ্ক ম্যানরা রাজ্য সরকারের ঘোষিত পুনর্বাসন প্যাকেজ থেকে বঞ্চিত। ২ আগস্ট পুরুলিয়ার ১৯জন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদিকে রাজ্য সরকার পুলিশের হোম গার্ডের চাকরি দিলেও এখনও হতাশায় ভুগছেন চাকরি থেকে বঞ্চিত একদা মাও অধ্যুষিত জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার কোটশিলা ঝালদা এলাকার মাওবাদী লিঙ্কম্যানরা। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়েও কেন বঞ্চনার স্বীকার, প্রশ্ন তুলছেন স্নাতক পাস অযোধ্যা পাহাড় স্কোয়াডের মাওবাদী লিঙ্কম্যান।
আরও পড়ুন, 'মুখ্য়মন্ত্রীর পছন্দের শিল্প লালবাজারে', গ্রেফতারির পর চপ-মুড়ি পেয়ে চটলেন অগ্নিমিত্রা
প্রসঙ্গত, সময়টা ২০০৮ সাল।বারুদের কটু গন্ধ আর ভারী বুটের আওয়াজে থমথমে হয়ে উঠেছিল পুরুলিয়ার বান্দোয়ান,বলরামপুর বাগমুন্ডি ঝালদা আড়সা বরাবাজার সহ জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা।একদিকে মাওবাদি অন্যদিকে পুলিশ।দুইয়ের যাঁতাকলে পড়ে নাস্তানাবুদ দশা হয়েছিল রাজনৈতিক নেতা কর্মী থেকে সাধারণ মানুষের। ২০০৮ সালে মাওবাদী তালিকায় লিঙ্ক ম্যান হিসেবে নাম ছিল কোটশিলা থানার বরুয়া কোচা গ্রামের দ্বারিক সিং মুড়া এবং ঝালদা থানার খামার গ্রামের বুধু সিং মুড়া। মুখ্য মন্ত্রীর প্যাকেজ অনুযায়ী ২০১৭ সাল করেন আত্মসমর্পণ করেন পুলিশের খাতায় হিট লিস্টে থাকা মাওবাদী নেতা থেকে লিঙ্কম্যান। তবুও এখনও প্যাকেজের সুবিধা থেকে বঞ্চিত কোটশীলা থানার বরুয়াকোচা গ্রামের দারিক সিং মুড়া এবং ঝালদা খামার গ্রামের বুধু সিং মুড়া।স্নাতক পাশ দ্বারিক সিং মুড়া এখন আর্থিক অনটনে ভুগছেন। অভাব আর হতাশায় ভুগছে পরিবার।
আরও পড়ুন, PAC: 'মুকুলের নিয়োগ বাতিল করা উচিত', স্পিকারের হলফনামা পেশের পর BJP-র দাবি মানবে কি হাইকোর্ট
একান্ত সাক্ষাৎকারে দ্বারিক সিং মুড়া বলেন,' অযোধ্যা স্কোয়ার্ডের নেতৃত্বে ছিলেন মাও নেতা রঞ্জিত পাল ও বিক্রম। তাদের নির্দেশ মতো বিভিন্ন কাজ করেছি। ২০১০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হই। তারপর মু্খ্যমন্ত্রীর প্যাকেজ ঘোষনা অনুযায়ী আমি আত্মসমর্পণ করি। আমার সাথে আরও তিন জন আত্মসমর্পণ করেন। এদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মোট ১৩ জন আত্মসমর্পণ করেন । ২০২০ সালের ১৫ জুলাই আমাকে নিয়ে ভেরিফিকেশনও করেন পুলিশ। এবছর ২১ জানুয়ারী সরকার ঘোষিত প্যাকেজ ও সুবিধা পাওয়ার আবেদন জানাই। আমার সঙ্গে আরও যারা ছিলেন, এমন ১৯ জনের কয়েকদিন আগে চাকরি দিয়েছে সরকার । অথচ আমি থেকে গেলাম বঞ্চিত।' পরিবারে বৃদ্ধ বাবা মা স্ত্রী পুত্র নিয়ে সংসার। শ্রমিকের কাজ করে সংসার চলছে। হতাশাগ্রস্ত দ্বারিক আরও বলেন,' জানি না সরকারের কবে সদয় হবে। মুল স্রোতে ফিরিয়ে আনার পরেও কেন এমন অবজ্ঞা', বলে প্রশ্ন তোলেন বড়ুয়া বাঁচা গ্রামের একদা মাওবাদী নেতা রঞ্জিত পালের বিশ্বস্ত সৈনিক লিঙ্ক ম্যান দ্বারিক সিং মুড়া।
আরও পড়ুন, 'রাজ্যে CAA হলেই NRC-র অর্ধেক কাজ মিটবে', কেন্দ্র ইঙ্গিত না দিলেও দাবি দিলীপের
অপরদিকে অপর লিঙ্কম্যান বুধু সিং মুড়া এখন চাষের কাজে ব্যস্ত। ক্ষেতে লাঙ্গল দিতে এসে জানান, 'মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত পুনর্বাসন প্যাকেজ পাওয়া তো দূরঅস্ত এখনো পর্যন্ত পঞ্চায়েত থেকে আবাস যোজনার বাড়ি টুকুও পাইনি। ১৯জনের চাকরি দেওয়া হল আমরাই বঞ্চিত থেকে গেলাম। রঞ্জিত পাল ওরফে জিতেন দার সাথে থেকে দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদীদের হয়ে এই এলাকায় কাজ করেছি। আত্মসমর্পণ করার পর সমস্ত কিছু কাগজপত্র রেডি হওয়ার পরেও এখনো কোনো কিছুই দেওয়া হয়নি। কেন আমাদের বঞ্চিত করা হল,' প্রশ্ন করলেন বুধু সিং মুড়াও। ২ আগস্ট পুরুলিয়া জেলা শাসক দপ্তরে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের সিধান্ত অনুযায়ী ১৯ জন মাওবাদীকে হোম গার্ডের নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা শাসক রাহুল মজুমদার, পুলিশ সুপার এস.সেলভা মুরুগান সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। চাকরি প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন ৪ জন মহিলাও।এদিন হাতে নিয়োগপত্র পেয়ে বেশ খুশি ছিলেন প্রাক্তন মাওবাদীরা। তবে এরই মাঝে কেন রাজ্য সরকারের ঘোষিত পুনর্বাসন প্যাকেজ থেকে অন্যান্য মাওবাদী বা লিঙ্ক ম্যানরা বাদ পড়ে গেল, সেই প্রশ্নই উঠছে পুরুলিয়ার রাজনৈতিক মহলে।'
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, রাজ্য়ের সর্বনিম্ন সংক্রমণ এই জেলায়, বৃষ্টিতে হারাতেই পারেন পুরুলিয়ার পাহাড়ে
আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও পড়ুন, বনগাঁ লোকাল নয়, জাপানে ঠেলা মেরে ট্রেনে তোলে প্রোফেশনাল পুশার, রইল পৃথিবীর আজব কাজের হদিস