Padma Awardees 2021: 'সোনা ঝরা দিনটা আমি ভুলব না', পদ্মশ্রী পাওয়ার পর বললেন সুজিত চট্টোপাধ্যায়

'জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এই সম্মান যে আমি পাব, তা কখনও ভাবতে পারিনি।' পদ্মশ্রী পেলেন বর্ধমানের আউশগ্রামের রামনগরের শিক্ষক। দিল্লি গিয়ে বাংলা ভাষাতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন সুজিত চট্টোপাধ্যায়।

 

Ritam Talukder | Published : Nov 11, 2021 11:37 AM IST / Updated: Nov 11 2021, 05:12 PM IST

পদ্মশ্রী (Padma Awardees )পেলেন বর্ধমানের (Burdwan) আউশগ্রামের রামনগরের শিক্ষক। দিল্লি গিয়ে বাংলা ভাষাতেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন। মন ভরে গেল আজীবনকাল হাত উপড় করে দেওয়া রাষ্ট্রের অন্যতম ভবিষ্যতের কারিগর সুজিত চট্টোপাধ্যায়ের (Teacher Sujit Chatterjee)।

আরও পড়ুন, Tripura: ত্রিপুরায় কুণালের বিরুদ্ধে আরও ৪ মামলা, আজই বিপ্লব দেবের রাজ্য়ে পাড়ি তৃণমূল নেতার

২০০৪ সালে অবসর নিয়েছেন বর্ধমানের আউশগ্রামের রামনগরের শিক্ষক সুজিত চট্টোপাধ্যায়। তবে অবসর মানেই যে জীবন শেষ নয়, সেই সংজ্ঞাটাই বোধয় বদলে দিয়েছেন  সুজিত চট্টোপাধ্যায়। অবসর মানে চেতনার উত্তরণও বটে। ২০০৪ সাল থেকে ২০২১। এই ১৭ বছরের আঙিনায় সুদূর বর্ধমানের আউশগ্রাম থেকে তাঁকে নিয়ে দিল্লিতে নিয়ে দেশের সর্বাকালের সর্ববৃহত সম্মান প্রদান করল কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি জানিয়েছেন, 'জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এই সম্মান যে আমি পাব, তা কখনও ভাবতে পারিনি।' তখন সবে শিক্ষকজীবন থেকে অবসর হয়েছে। তবে এখনের মতো তখন স্কুলে পুনর্নিয়োগ ছিল না। তবে বরাবরের কর্ম-অভ্যস্ত সুজিত মাস্টারমশাই তাই বলে চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে থাকলেই তিনি আবার প্রাণ ফিরে পাবেন, এবিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাঁর কথায়, 'সেই সময় আমাকে বাঁচিয়েছিল কয়েকজন ছেলে-মেয়ে। একদিন সকালে বিষ্ণুপুর, গেড়াই, বালিকাঁদর, গোয়েড়া, বেলেমাঠ সংলগ্ন কয়েকটি গ্রাম থেকে বেশ কয়েকজন ছেলেমেয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে এল। ওরা তখন সদ্য মাধ্যমিক পাশ করেছে। ওরা জানাল আমার কাছে পড়তে চায়। ওদের কথা শুনে আমি যেনও হাতে স্বর্গ পেলাম। বললাম পড়াব' কিন্তু মুহূর্তেই ঝলক দেওয়া মাধ্যমিক পাশ করা শিক্ষার্থীদের মুখটা গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে গেল।

আরও পড়ুন, Dilip Ghosh: 'সুরজিৎ-কে বহিষ্কার পার্টির যুক্তি সঙ্গত কাজ', পুরভোটের আগে স্পষ্ট বার্তা দিলীপের

সুজিত চট্টোপাধ্যায় জানালেন, 'বড়ই ইতস্তত করে ওরা জিজ্ঞেস করল, 'কত টাকা বেতন দিতে হবে। আমি বললাম, বছরে ১ টাকা করে মাইনে নেব। পারবিতো তোরা।' মাস্টারমশাইয়ের এমন অন্তর্নিহিত মর্মস্পর্শী প্রশ্নে অন্তরের সব জ্বালা যেন জুড়িয়ে গেল শিক্ষার্থীদের। সোনার রুপ নিল যেনও। চোখের উপর থেকে সরে গেল যন্ত্রনার পাহাড়। মাস্টারমশাই বললেন, 'সোনা ঝরা দিনটা আমি  ভুলব না। সেদিন থেকেই আমার পুনর্জন্ম  বা নতুন করে পথ চলা শুরু হল। তারপর আমার ছাত্র-ছাত্রী একটু করে বেড়েছে। এই মুহূর্তে তা প্রায় ৩০০-রও বেশি।' আজ হয়তো অনেকেই তাঁদের নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। ১৭ বছর নেহাত কম নয়। আর তাই সেই ছাত্র-ছাত্রীরাই বোধহয় প্রাণভোমরা। অবসর বলে কিছু নেই। প্রাণবায়ু থাকা অবধি শুধু কাজ করে যেতে হবে সকলের জন্য। সেটাই  একুশের স্মার্ট ডিজিট্য়াল দুনিয়ায় মনে করিয়ে দিলেন তিনি।  পাঞ্জাবি পরা চশমা চোখে সুজিত চট্টোপাধ্যায়ের চোখে শুধুই মন-প্রাণ উজাড় করে দেওয়া খুশির পরশ লেগে আছে। হেসে বলেন মাস্টারমশাই, পদ্মশ্রীও আমার কাছে পরম প্রাপ্তি। গ্রামের একজন সাদারণ শিক্ষককে নিয়ে দিল্লির লোকজন খোঁজখবর নেবেন, এটা আমি কখনও ভাবতে পারিনি। এজন্য আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।'

আরও পড়ুন, Weather: আগামী ১২ ঘন্টায় বঙ্গোপসাগর উপরে গভীর নিম্নচাপ, চড়বে পারদ, বৃষ্টির পূর্বাভাস কলকাতায়

তিনি আরও বলেন, 'দিল্লিতে পা রাখার পর ওনাদের আয়োজন-ব্যবস্থা দেখে আমি অভিভূত। যে হোটেলে ১৬০ টাকা এক পেয়ালা চা, সেখানে কখনও থাকতে পারবো , ভবিনি। দেশের সমস্ত রাষ্ট্রনায়করা সম্মান প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী আমাদের কাছে এলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বাংলায় জিজ্ঞাসা করলেন কেমন আছেন। আমি বাংলাতেই বললাম ভাল আছি। দিল্লির বুকে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষা বলতে পেরে গর্বে আমার বুক ভরে যাচ্ছে। ওরা সকলেই আমাকে খুব উৎসাহ দিয়েছেন। আমি ভাবতেই পারিনি এমন ঘটনা জীবনে ঘটবে।' 

আরও দেখুন, বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ  

আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা  

আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়  

আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে  

 

Share this article
click me!