গোপন সূত্র থেকে খবর পেয়ে, বালুরঘাট থানার পুলিশ গতকাল রাতে বালুরঘাট শহরের ছিন্নমস্তা পল্লি এলাকায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে দুটি প্রাচীন মূর্তি উদ্ধার করে তারা। এই মূর্তি দুটি ছিন্নমস্তা পল্লি এলাকায় একটি বাড়িতে রাখা ছিল।
ক্রেতা সেজে হানা দিয়ে অষ্টধাতুর তৈরি বহু প্রাচীন দু'টি মূর্তি উদ্ধার করল বালুরঘাট থানার পুলিশ। সেই সঙ্গে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য কয়েক লক্ষ টাকা বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের অনুমান, ওই দু'টি মূর্তি বাংলাদেশ থেকে আনা হয়েছে। শনিবার রাতে পাচারের আগেই বালুরঘাট শহরের এক ভাড়া বাড়ি থেকে তা উদ্ধার করে। এদিন ধৃতদের জেলা আদালতে তোলা হয়েছে। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম প্রমোধ বর্মন ও ষষ্ঠী বর্মন। তারা সম্পর্কে বাবা ও ছেলে। বাড়ি বালুরঘাট ব্লকের বাদামাইলের হরিপুর এলাকায়। তবে বেশ কিছুদিন ধরে বালুরঘাট শহরের ছিন্নমস্তা এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে ছিলেন ষষ্ঠী বর্মন। সেখানেই ওই মূর্তি দুটি রাখা ছিল। এদিকে বালুরঘাট থানার পুলিশ গোপন সূত্র থেকে খবর পেয়ে সাদা পোশাকের ওই বাড়িতে ক্রেতা সেজে যায়। সেখানে প্রায় দুই লক্ষ টাকা দিয়ে ওই মূর্তি দু'টি কিনতে চায়। আর তখনই বাবা ও ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন- 'বিপ্লব দেব ভাবছেন ত্রিপুরায় আসতে তাঁর থেকে ভিসা নিতে হবে', আগরতলায় পৌঁছেই তোপ অভিষেকের
প্রসঙ্গত, ওই মূর্তিদুটি নিয়ে বালুরঘাট থানায় একটি সাংবাদিক বৈঠক করা হয়। সেখানে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে, বালুরঘাট থানার আইসি অসীম গোপ, ইতিহাসবিদ সুকুমার সরকার সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। এবিষয়ে রাহুল দে বলেন, "পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বালুরঘাট শহরের ছিন্নমস্তা এলাকার একটি বাড়ি থেকে সেগুলি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। মূর্তিগুলি দেখে বহু প্রাচীন বলে মনে হচ্ছে। মূলত পাচারের জন্যই সেগুলি বাড়িতে রাখা হয়েছিল। দু'জনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।" ধৃতরা এই মূর্তি দুটি পেল এবং কোথায় বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছিল, এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- মাত্র ৩৫৫৫ টাকায় কিনুন টাটা টিয়াগো গাড়ি, জেনে নিন বিস্তারিত অফার
এবিষয়ে জেলার ইতিহাসবিদ সুকুমার সরকার বলেন, দেখে মনে হচ্ছে মূর্তিটি কয়েকশো বছরের প্রাচীন। যার বাজারমূল্য কয়েকলক্ষ টাকা বা তার বেশি হতে পারে। তবে বৌদ্ধ ও হিন্দু শিল্পরীতির সঙ্গে এর মিল পাওয়া যাচ্ছে। এটা আসলে রাধামূর্তি। বরু চণ্ডীদাসের রচনার রাধামূর্তির সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে। এটা আনুমানিক ১৫০০- ১৮০০ খ্রীস্টাব্দের হতে পারে। যত পুরোনো হবে, পাচারকারীদের কাছে এর বাজারমূল্য তত বেশি হবে।
আরও পড়ুন- ভাতারে গ্রেফতার বাংলাদেশি ব্যক্তি, অনুপ্রবেশের কারণ জানতে দফায় দফায় জেরা