সেই ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের সাক্ষী হওয়ার পর অবশেষে খারকিভের বাড়িতে ফিরলেন জিৎ। আর তাঁকে কাছে পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন পরিবারের সদস্যরা। তবে খারকিভ থেকে তাঁর দেশে ফেরার পথটা খুব একটা সহজ ছিল না।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে (Ukraine) এখনও পর্যন্ত আটকে রয়েছেন দেশের একাধিক পড়ুয়া (Indian In Ukraine)। ইতিমধ্যে সেখান থেকে হাজার হাজার পড়ুয়াকে উদ্ধার করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Govt) তরফে। কিন্তু, তারপরও সুদূর ইউক্রেনে আটকে থাকা ছেলে মেয়েদের জন্য চিন্তা যেন কিছুতেই কাটছে না পরিবারের। সেরকমই দুশ্চিন্তায় ছিল হাবরার (Habra) রায় পরিবার। তবে ছেলে জিৎ রায় ইউক্রেন থেকে নিরাপদে দেশে (Ukraine Return) ফেরায় এখন চিন্তা মুক্ত হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
সেই ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের (War Torn Ukraine) সাক্ষী হওয়ার পর অবশেষে খারকিভের বাড়িতে ফিরলেন জিৎ। আর তাঁকে কাছে পেয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন পরিবারের সদস্যরা। তবে খারকিভ থেকে তাঁর দেশে ফেরার পথটা খুব একটা সহজ ছিল না। কারণ ইউক্রেনের শহরগুলির মধ্যে খারকিভে (Kharkiv) সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। আর সেই অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে জিৎ জানিয়েছেন, খারকিভ থেকে ২৬ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে প্রথমে পেশোচিন পৌঁছান। এরপর সেখান থেকে নিজেরা বাস ভাড়া করে প্রায় ২৮ ঘণ্টা বাস যাত্রা করে পৌঁছান টার্নোপিলে। সেখান থেকে ঘণ্টা চারেক পুনরায় বাসে রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছান। এরপর ভারতীয় দূতাবাসের তরফে পাঠানো বিমানে দিল্লি হয়ে গতকাল গভীর রাতের বিমানে পৌঁছান কলকাতায় (Kolkata)।
আরও পড়ুন- চোখের সামনে শেষ হয়ে যাচ্ছে স্কুল-হাসপাতাল-বাড়ি, ইউক্রেন যেন মৃত্যুপুরী
এত লড়াইয়ের পর অবশেষে নিজের দেশে নিজের পৌঁছাতে পেরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন জিৎ-সহ বাকি ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা। এরপর কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে হাবরার বাড়িতে পৌঁছান ভোর তিনটে নাগাদ। যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে অক্ষত অবস্থায় ঘরের ছেলে ঘরে ফেরাতে খুশি জিতের পরিবার। তবে বাড়ি ফিরেও যেন শান্তি পাচ্ছেন না জিৎ। কারণ এখনও পর্যন্ত তাঁর চোখের সামনে ভাসছে ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত কিভ ও খারকিভ শহরের ধ্বংসলীলা। এদিকে এই যুদ্ধ দেখে না সে দেশে আর না ফেরার সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। বরং পরিস্থিতি ঠিক হলে পড়াশোনা শেষ করতে ফের ইউক্রেনে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন মেডিকেলের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া জিৎ।
আরও পড়ুন- 'মাথার উপর দিয়ে উড়ে যেত ড্রোন', আতঙ্কের অভিজ্ঞতা শোনালেন ইউক্রেন ফেরত বীরভূমের চন্দ্রনাথ
রাশিয়া হামলা চালানোর পর থেকে ইউক্রেনের পরিস্থিতি একেবারেই ভালো নয়। ধীরে ধীরে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে গোটা দেশ। ভেঙে পড়ছে একের পর এক হাসপাতাল, স্কুল ভবন, বাড়ি। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কিইভের কাছের শহর জাইটোমিরের একটি স্কুল ধ্বংস হয়েছে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। রাশিয়ান বাহিনী (Russian military) এখন পর্যন্ত ২০২টি স্কুল, ৩৪টি হাসপাতাল এবং দেড় হাজারেরও বেশি আবাসিক ভবন ধ্বংস করেছে (202 schools, 34 hospitals in Ukraine destroyed)। প্রায় ৯০০টি জন বসতি বিদ্যুৎ, জলহীন অবস্থায় রয়েছে। আর এই পরিস্থিতি কাটিয়ে কবে যে এখন নতুন ভোরের আলো দেখবে ইউক্রেন সেই পথ চেয়েই বসে রয়েছেন বহু মানুষ।
আরও পড়ুন- 'মেয়েদের সঙ্গে চরম নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছে ইউক্রেন সেনা', অভিযোগ বালুরঘাটের বাসিন্দার