সরকার আগেই ঘোষণা করেছিল, বিদেশ থেকে যেই ফিরবে তাঁকে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে যেতে। এদিকে নিয়মের তোয়াক্কা না করে চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনের মত আমেরিকা ফেরত এক চিকিৎসক সোজা চলে গেলেন অপারেশন থিয়েটারে। এমনকি অস্ত্রোপচারও করলেন তিনি। এই খবর পেয়েই স্বাস্থ্য় দফতরের তরফে ওই চিকিৎসককে সতর্ক করা হয়। নিয়ম ভাঙার জন্য় শাস্তিও হতে পারে বলে তাঁকে জানানো হয়। এই খবরই পেয়ে জেলা স্বাস্থ্য় আধিকারিক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ডেকে পাঠান তাঁকে। ওই চিকিৎসককে তৎক্ষণাত বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সঙ্গে যোগযোগ করতে বলা হয়। এরপরই শনিবার সকালে বসিহাটের নৈহাটি এলাকার ওই চিকিৎসক বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করাতে যান। তবে এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন, দ্বিতীয় করোনা আক্রান্তও শহরে ঘুরলেন বেপরোয়াভাবে, আতঙ্কে কাঁটা কলকাতাবাসী
জানা গিয়েছে, দম্পতি চিকিৎসক ভাস্কর সোম ও তার স্ত্রী চিকিৎসক রত্না সোম গত তিনদিন আগে আমেরিকা থেকে ফিরে বহাল তবিয়তে বসিরহাট নৈহাটি এলাকার নার্সিংহোমে বিভিন্ন ধরনের অপারেশন করেছেন। অন্যদিকে রুগী দেখেছেন। বিমানবন্দরে কেমন চেকিং হল সেটা তিনি তথ্য গোপন করেছেন। সব মিলিয়ে তাদের দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রোগী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এই খবর বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় এর কাছে গেলে তিনি প্রশাসনকে পুরো বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন। পাশাপাশি ওই দম্পতির চিকিৎসকের মেডিকেল লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্নের মুখে। ইতিমধ্যেই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর এই দম্পতির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে খবর। পাশাপাশি বসে পৌরসভার পৌর পিতা তপন সরকার বলেন, 'আমরা মহকুমাশাসক থেকে পুলিশ প্রশাসন এমনকি স্বাস্থ্য জেলাকেও জানিয়েছি। দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি ওনার নার্সিংহোম এর ব্যাপারে আমরা পরবর্তীকালে কঠোর পদক্ষেপ নেব।' জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে যেসব রোগীরা এসেছিল তাদেরকে রীতিমতো চিহ্নিত করে বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে নজর বন্দী করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন, পরিষ্কার করতে গিয়ে নিজেই শিকার, উপসর্গ সহ আইডিতে ভর্তি আইসোলেশন বিভাগের সাফাইকর্মী
উল্লেখ্য়, বিদেশে থেকে যারাই পূর্বে ফিরেছেন দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। এর আগে রাজ্য়ে প্রথম এবং দ্বিতীয় করোনায় আক্রান্ত তরুণ বেলেঘাটা আইডির সঙ্গে যোগাযোগ না করে দায়িত্বজ্ঞানহীনের মত শহরের নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। পরে স্বাস্থ্য় দফতরের চাপে তাদের লাল রস পরীক্ষার পরে জানা যায় যে, তাদের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। এক্ষেত্রে আমেরিকা ফেরত ওই চিকিৎসকও একই কাজ করলেন। তবে ওই চিকিৎসকের এমন আচরণে রীতিমত ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
আরও পড়ুন, করোনা আক্রান্ত পালাল ট্রেনে করে, খড়্গপুরে যাত্রীদের তল্লাশি চালাল রেল পুলিশ