কুটির শিল্পের জন্য বিখ্যাত হাওড়ার গ্রামাঞ্চল। নানা ধরনের হাতের কাজ করেন গ্রামবাসীরা। এর অন্যতম বিকিহাকোলার কুলাই গ্রামের পরচুলা শিল্প। বহু মানুষ এই পেশার সঙ্গে যুক্ত।
'আমাদের কাছে ধর্ম-জাত কোনও ব্যাপার না। আমরা হিন্দু-মুসলমান ভাই-ভাই করেই থাকি। রাজনীতির জন্যই জাত থেকে বেজাত হচ্ছে। আমরা তো আগে ভালোভাবেই থাকতাম। এ তো আজকের ব্যাপার নয়। আমার বাপ-দাদাদের সময়ও হিন্দু-মুসলমানের এক জায়গায় খাওয়া, থাকা, ওঠা-বসা ছিল। এখনও সেটা আছে। তবে কিছু মানুষ ধর্মের দেওয়াল তুলে দিয়েছে। যদিও অনেক হিন্দু ভাই ধর্মের বিভেদ মানে না।' একনিঃশ্বাসে কথা বলছিলেন হাওড়ার পাঁচলা অঞ্চলের কাছে কুলাই শেখপাড়ার বাসিন্দা শেখ মেজফফর। পেশায় পরচুলা শিল্পী তিনি। মেজফফরের মতোই কুলাই শেখপাড়ার অনেক পরিবারেরই পেশা পরচুলা তৈরি। দুর্গাপুজোর সময় দেব-দেবীদের অঙ্গসজ্জার জন্য পরচুলা তৈরি করছেন এই গ্রামের শিল্পীরা। পাশাপাশি বিভিন্ন মন্দিরেও পরচুলা সরবরাহ করেন কুলাই শেখপাড়ার শিল্পীরা।
আজানের মধ্যেই চলে হিন্দু দেব-দেবীর পরচুলার কাজ
কুলাই শেখপাড়ার শিল্পীরা বছরের পর বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে রাধা-কৃষ্ণ, দুর্গার পরচুলা তৈরি করে আসছেন। নিজেরা মুসলিম হলেও, হিন্দু দেব-দেবীদের প্রতি সম্মান জানিয়েই কাজ করেন। মেজফফর বললেন, 'আমাদের তৈরি পরচুলা দেবীর মাথায় চড়ায়। আমরা যে চামর তৈরি করি সেটা দিয়ে আরতি করে। আমরা মুসলমান হলেও, দেবীর প্রতি সম্মান জানিয়েই কাজ করি। আমরা দেবতাই মনে করি। রাধারানির পরচুলা তৈরি করার সময় আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকি।'
দুর্গাপুজোর আগে ব্যস্ততা তুঙ্গে
শনিবার কুলাই শেখপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, পরচুলা তৈরির অনেক কারখানাই বন্ধ। মহিলারা জানালেন, মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত পুরোদমে কাজ চলে। তারপর শনিবার যুবকরা বিভিন্ন জায়গায় পরচুলা পৌঁছে দিতে যান। দুর্গাপুজোর অর্ডার অনুযায়ী পরচুলা পৌঁছে দেওয়ার কাজ প্রায় শেষ। এখন বিভিন্ন মন্দিরের জন্য দেব-দেবীর অঙ্গসজ্জার কাজ চলছে।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
দেবী দুর্গার দশ হাত দশ অস্ত্র, জেনে নিন মহিষাসুরমর্দিনীর অস্ত্র তার গুরুত্ব
আশ্বিন মানেই পুজো পার্বণে ভরা, পাপের বিনাশ এবং শুভ সময়ের সূচণার সময়! জেনে নিন এই মাসের উৎসবের তালিকা
Mahalaya 2024:কেন পালন করা হয় মহালয়া ? জানুন এই দিনটির ধর্মীয় গুরুত্ব