রেশন দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।
গ্রেফতার হওয়ার পর ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শুনানির সময় হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়লেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি আদালতেই অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁকে আদালত থেকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আপাতত বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে গ্রেফতার হওয়া মন্ত্রীকে। তবে তদন্তকারীরা চাইলে তাঁকে কম্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন বলে জানিয়েছে আদালত। ৬ নভেম্বর পর্যন্ত জ্যোতিপ্রিয়কে ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে এই হেফাজতের মেয়াদ বাড়তে পারে বলে জানা গিয়েছে। ইডি হেফাজত বা হাসপাতালে থাকার সময় আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন জ্যোতিপ্রিয়। আদালত জানিয়েছে, যতদিন হাসপাতালে থাকবেন ধৃত মন্ত্রী, ততদিন তাঁর হেফাজতের মেয়াদ গণ্য হবে না। সুস্থ হওয়ার পর যেদিন প্রকৃত হেফাজতে যাবেন, সেদিন থেকেই তাঁর হেফাজতের মেয়াদ শুরু হবে। তারপর আদালতে ফের শুনানি হবে।
এজলাসে অসুস্থ মন্ত্রী
শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয় জ্যোতিপ্রিয়কে। শুনানি শুরু হওয়ার পরেই হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান ধৃত মন্ত্রী। আদালতেই ছিলেন তাঁর মেয়ে। তিনি জ্যোতিপ্রিয়র কাছে ছুটে যান। বমি করতে শুরু করেন ধৃত মন্ত্রী। এরপর তাঁকে বিচারক তনুময় কর্মকারের কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনে কিছুক্ষণ রাখার পর অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় জ্যোতিপ্রিয়কে। সেখানেই এখন তাঁর চিকিৎসা চলছে।
আদালতে শুনানি চলাকালীন উত্তেজনা
শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে শুনানি চলাকালীন উত্তেজনা তৈরি হয়। অসুস্থতার কথা জানান জ্যোতিপ্রিয়র আইনজীবী। আরও জানানো হয়, সুগারের রোগী মন্ত্রী ইনসুলিন নিতে পারেননি। বিচারক জানতে চান, গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি হেনস্থা বা অত্যাচারের শিকার হয়েছেন কি না। জ্যোতিপ্রিয় জানান, তাঁর সঙ্গে ভালো ব্যবহারই করা হয়েছে। এরপরেই ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
ষড়যন্ত্রের অভিযোগ জ্যোতিপ্রিয়
গ্রেফতার হওয়ার পর বনমন্ত্রী দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগ করেন জ্যোতিপ্রিয়। শুক্রবার সন্ধেবেলা পাল্টা সাংবাদিক বৈঠকে ধৃত মন্ত্রীকে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেছেন, 'পশুখাদ্য দুর্নীতিতে জেলে গিয়েছিল লাল, মনুষ্য খাদ্য দুর্নীতিতে জেলে গেল বালু।' এই গ্রেফতারি ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপি-র বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসক দলকে পাল্টা আক্রমণ করেছে বিরোধী দলগুলি।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে। জয়েন করুন- https://www.whatsapp.com/channel/0029Va9a73wK0IBjbT91jj2D
আরও পড়ুন-
শুধু জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নন, রেশন দুর্নীতিতে জড়িত মমতাও! বিস্ফোরক মন্তব্য শুভেন্দু অধিকারীর