সংক্ষিপ্ত

নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রবল শক্তিতে আঘাত। ‘এলোমেলো ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি নির্ণয়ে সমস্যা’, জানিয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক ম. বজলুর রশীদ।  

“প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। সিত্রাংয়েরও আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। এটি ছিল বেশ এলোমেলো।” ঘূর্ণিঝড়ের বিক্ষিপ্ত চেহারায় বিভ্রান্ত হয়ে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক ম. বজলুর রশীদ। ওপার বাংলার খবর অনুযায়ী ২৪ অক্টোবর, সোমবার রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সেই দেশের ঘনবসতিপূর্ণ, নিচু এলাকায় আঘাত হানার ফলে বহু বাংলাদেশী নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

বরগুনা, নড়াইল, সিরাজগঞ্জ ও ভোল দ্বীপের জেলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে অনেক মানুষের মৃত্যু এবং আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কারণ বেলা যত বাড়ছে, তত বেশি করে অন্যান্য অনেক জেলা থেকে আরও বহু হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। 

আবহাওয়া দফতরের জানাচ্ছে,বাংলাদেশ অতিক্রম করার পরপরই ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং মঙ্গলবার সকালে এটি আরও দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমান গতিবিধি অনুযায়ী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হয়ে, মঙ্গলবার আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মিজোরাম এবং ত্রিপুরায় প্রায় সারাদিন ধরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত ঘটাবে সিত্রাং।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে জানা গিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার গভীর রাত থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত যেকোনও সময়ে আঘাত হানতে পারে। তা না হয়ে, গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে। এরপর রাত ন’টার পর ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশটি আঘাত হানে। রাত সাড়ে ন'টার দিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হয় ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার। এর কাছাকাছি সময়ে চট্টগ্রামেও বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭৪ কিলোমিটার, ভোলা দ্বীপ জেলায় গতিবেগ ছিল ৬৫ কিলোমিটার। রাত আড়াইটে নাগাদ গোপালগঞ্জে হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭৫ কিলোমিটার।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং গোটা বাংলাদেশ জুড়ে কেড়ে নিয়েছে অন্তত ১১ জনের প্রাণ। এর মধ্যে কালীপুজোর রাতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে গাছের তলায় চাপা পড়ে গিয়ে, ২ জন মারা গেছে নৌকাডুবি হয়ে। মঙ্গলবার ১জনের মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবে এবং আরও একজন মারা গেছেন গাছের নিচে চাপা পড়ে গিয়ে। তবে, এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পরিষ্কার নয়। উদ্ধারকাজ জারি রেখেছে বাংলাদেশ প্রশাসন।

বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক ম. বজলুর রশীদ জানিয়েছেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের ব্যতিক্রমী আচরণের জন্য এটির গতিবিধি নির্ণয়ের মডেলগুলোতে পরিবর্তন হয়েছে বারবার। অনিশ্চিত গতিবিধির কারণেই এর আসার সময় এবং এর আকার সম্পর্কে ধারণা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।’

আরও পড়ুন-
‘কেষ্টদা’ এখন জেলে! তিন কোটি টাকা থেকে দেড় লক্ষে এসে ঠেকল দলীয় কার্যালয়ের কালীপুজোর বাজেট, কমল সোনার অলঙ্কারও
দীপাবলির সকাল থেকেই মনোরম রোদ্দুর, হিমেল হাওয়ায় এযাত্রা কি সিত্রাং-এর বিপদ পেরিয়ে গেল বাংলা?
রাত বাড়তেই বেড়ে গেল শব্দবাজির দাপট! পরিবেশের তোয়াক্কা না করেই দীপাবলির উন্মাদনায় বঙ্গবাসী