সংক্ষিপ্ত

  • গতকালই প্রয়াত হয়েছেন চিত্র পরিচালক তথা কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
  •  বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ও সাহিত্য জগতে এক সোনালি অধ্যায়ের অবসান
  • বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত আলোকচিত্রী তরুণ দেবনাথ
  • 'চরাচর' ছবির সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে কেমন ছিল প্রথম সাক্ষাৎই তুলে ধরলেন তরুণ 

তরুণ দেবনাথ,আলোকচিত্রি: গতকাল ঘুমের মধ্যেই চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন  চিত্র পরিচালক তথা কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ও সাহিত্য জগতে এক সোনালি অধ্যায়ের অবসান হল । তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে চলচ্চিত্র জগতে।

 

আরও পড়ুন-প্রজাপতি স্টিকার দিয়ে 'Baby Bump' ঢেকে দিলেন নুসরত, তবুও ফাঁস হয়ে গেল আসল ছবি...

 

 

দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাড়িতেই মৃত্যু হয় তার। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির অসুখে ভুগছিলেন বুদ্ধদেব বাবু, চিকিৎসাও চলছিল সেইমতোন, পাশাপাশি চলছিল ডায়ালিসিস। তবে শুধু কিডনির সমস্যাই নয়, বাধর্ক্যজনিত সমস্যাও গ্রাস করেছিল তাকে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

 

 

সালটা ১৯৬৮। মাত্র ১০ মিনিটের একটি ডকুমেন্টারি দ্য কন্তিনেন্ত অফ লাভ দিয়ে চলচ্চিত্রে হাতেখড়ি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর। বিখ্যাত পরিচালক মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায় এবং ঋত্বিক ঘটকের যোগ্য উত্তরসূরী বলা হতো বুদ্ধদেব দাশগুপ্তকে। তাদেরকে অনুপ্রেরণা করেই এগিয়ে চলেছিলেন নিজের লক্ষ্যে।

 

 

১৯৭৮ সালে প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের  ছবি দূরত্ব-এর জন্য পেয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কার। তারপর একাধিক ছবি  যেমন নিম অন্নপূর্ণা, গৃহযুদ্ধ, তাহাদের কথা, উত্তরা, বাঘ বাহাদূর, চরাচর, মন্দ মেয়ের উপাখ্যান সহ একাধিক ছবি রয়েছে তার ঝুলিতে। 

 

 

তার অকাল মৃত্যুতে সকলেই শোকস্তব্ধ। তবে তাকে কাজ থেকে যারা দেখেছেন, বা কাজের সুবাদেই যারা তার সান্নিধ্যে এসেছেন তেমনই একজন হলেন  আলোকচিত্রী তরুণ দেবনাথ। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর অকাল প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত এবং মর্মাহত।

 

 

বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর হাত ধরেই স্টিল সিনেমা ফটোগ্রাফি শেখা তরুণের। পেয়েছিলেন কলকাতায় কাজ করার প্রস্তাবও, তা যদিও হয়ে ওঠেনি তবে চিঠিতে যোগাযোগ ছিল তাদের।  'চরাচর' ছবির সৃষ্টিকর্তা বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎই কেমন ছিল তা তুলে ধরেছেন এশিয়ানেট নিউজ বাংলায়।

 

 

'চরাচর' ছবির সৃষ্টিকর্তা বিশ্ববিখ্যাত পরিচালক বুদ্ধদেব দাসগুপ্ত (৭৭) ,আমাদের চরাচর ছেড়ে অন্যলোকে চলে গেলেন।  ১৯৯৩ সালে রায়গঞ্জে চরাচর ছবির শুটিং করতে আসলে কর্মসুত্রে (তখন আমি উত্তরবঙ্গ সংবাদে সংস্কৃতি পাতা ও চিত্রসংবাদের দ্বায়ীত্বে ছিলাম ) পরিচয় হয়। পাখির প্রতি ভালবাসাতেই বুদ্ধদেব বাবু চরাচর এর প্রতি আকৃষ্ট হন।  স্যুটিং চলাকালীন নদীতে নৌকাডুবি হয় এবং স্টিল ফটোগ্রাফার শ্যামল দাস ও ক্যামেরা সমেত নদীতে পড়ে যান,  এবং বাধ্য হয়ে ক্যামেরা নিয়ে কলকাতা ফিরে যান।

 

 

এই সময় আমাকে ছবি তোলার প্রস্তাব দেন, আমি সানন্দে রায়গঞ্জে শুটিং এর সমস্ত ছবি তুলে দেই। ওনার কাছেই স্টিল সিনেমা ফটোগ্রাফি শিখি। যাবার সময় প্রশংসা করে গিয়েছিলেন এবং কলকাতায় কাজ করার প্রস্তাব ও দিয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। কিন্তু কিছুদিন চিঠিতে যোগাযোগ রেখেছিলেন। সেই সুত্রে সত্যজিৎ রায়ের ক্যামেরাম্যান সৌমেন্দু রায়,  বিখ্যাত মেকআপ ম্যান দেবী হালদার, সাধু মেহেরা,রজিত কাপূর, ইন্দ্রানী হালদার, লাবনী সরকার ও শংকর চক্রবর্তীর সংস্পর্শে  আসতে পেরেছিলাম। কিছুদিন ধরে অসুস্থ্য ছিলেন, শেষে চলেই যেতে হল। বুদ্ধদেব বাবু আপনি যেখানেই থাকুন ভাল থাকুন। আপনার সমস্ত সৃষ্টি আমাদের কাছে মূল্যবান সম্পদ হয়ে রইল।