সংক্ষিপ্ত
নাজিরের বর্তমানে বয়স ৬৪ বছর। তাঁর কৃতকর্মের কথা ফাঁস হয়ে যায় একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ায়। এই অডিও ক্লিপটি ছিল নাজির ও এক মহিলার মধ্যে কথোপকথনের ভিডিও।
একেই বলে যেমন কর্ম তেমন ফল। যার ফলে আর কৃতকর্ম থেকে নিজেকে সাফ-সুতরা রাখতে পারলেন না লর্ড নাজির আহমেদ (Lord Nazir Ahmed)। বিলেতের বুকে ভারত-বিরোধী স্লোগানের পোস্টার বয় যার খ্যাতি আকাশ সমান- সেই লর্ড নাজির আহমেদকে শিশু যৌননিগ্রহে দোষী সাব্যস্ত করেছে ব্রিটেনের একটি আদালত (Lord Nazir Ahmed is a paedophile found by UK Court)। এখন তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা হওয়াটা বাকি। স্বাভাবিকভাবেই নাজিরের এই অপরাধ কিছুটা হলেও মুখ পুড়িয়েছে পাকিস্তানের (Pakistan)। কারণ, এই নাজিরের মাধ্যমেই দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ব্রিটেনের বুকে ভারত-বিরোধী স্লোগানে হাওয়া দিয়ে গিয়েছে ইসলামাবাদ (Islamabad)। পাকিস্তানের দখলদারিতে থাকা কাশ্মীরের অংশে জন্মেছিলেন নাজির আহমেদ। এররপর সপরিবারে ব্রিটেনে চলে যান। পরিণত বয়সে এসে বিলেতের মাটিকে ভারত বিরোধিতার অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে শুরু করেন নাজির আহমেদ এবং তাঁর ভাইরা। আর এতে মন্ত্রণা জুগিয়ে গিয়েছে পাকিস্তান (Pakistan)।
ব্রিটেনে প্রভাব প্রতিপত্তি খাটিয়ে নাজির আহমেদ হয়েছেন লর্ড। বর্তমানে তিনি লর্ড নাজির আহমেদ নামে পরিচিত। প্রথম মুসলিম হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন হাউস অফ লর্ডসে। নাজিরের বর্তমানে বয়স ৬৪ বছর। তাঁর কৃতকর্মের কথা ফাঁস হয়ে যায় একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ায়। এই অডিও ক্লিপটি ছিল নাজির ও এক মহিলার মধ্যে কথোপকথনের ভিডিও। যার সূত্র ধরে সামনে আসে যে ১৯৭০ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে নাজির আহমেদ এক নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। এই নাবালিকার বয়স সেই সময় নাজিরের থেকেও কম ছিল। এছাড়াও নাজির তাঁর দুই দাদার সঙ্গে মিলে এক নাবালককেও যৌন নির্যাতন করেছিলেন। নাজিরের দুই দাদা মহম্মদ ফারুক (৭১) এবং মহম্মদ তারিক(৬৪) তাঁদের বিরুদ্ধে শিশু যৌন নির্যাতনের মামলা হয়েছে এবং তাঁরাও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
ব্রিটেনের শেফিল্ড আদালত নাজিরদের দোষী সাব্যস্ত করেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি তাঁদের সাজা ঘোষণা করা হবে। ইতিমধ্যে অবশ্য নাজিরকে হাউস অফ লর্ডস থেকেও ইস্তফা দিতে হয়েছিল। কারণ, অন্য একটি ঘটনায় নাজিরের আরও যৌন কেলেঙ্কারি সামনে চলে আসে। এক মহিলা অভিযোগ করেছিলেন যে হাউস অফ লর্ডস-এর ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়ে তাঁকে যৌন নিগ্রহের শিকার করতে চেয়েছিল নাজির। এই ঘটনায় যে নাজির যে দোষী তা পরিস্কার হয়েই গিয়েছিল। যার জেরে মান বাঁচাতে হাউস অফ লর্ডস থেকে ২০২১ সালে পদত্যাগ করেন নাজির। এরপরই নাজিরের ভাইরাল অডিও ক্লিপ সামনে আসে এবং সেই সঙ্গে শেফিল্ড কোর্টে নাজির এবং নাজিরের ভাইদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। এর জেরে ব্রিটেনের বুকে যারা ভারত বিরোধিতায় উসকানি জোগাতেন তাঁদের মুখে একটা কড়া থাপ্পড় লাগে।
বিলেতের মাটিতে পাকিস্তানের নেতৃত্বে ভারত বিরোধিতার হাওয়া কয়েক দশক ধরে চলে আসছে। এতে বলতে গেলে পাকিস্তান মুখ বানিয়েছিল নাজিরের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিকে। এই নাজির আহমেদ প্রকাশ্যে ভারত বিরোধী খালিস্তানি আন্দোলনে হাওয়া দিতে আসরে নেমেছিলেন। ২০১৮ সালে ট্রাফেলবার্গ স্কোয়ারে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি সমাবেশেও প্রধান বক্তা হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীর সঙ্গে সুর মিলিয়েই ভারত সরকারের বিরোধিতায় গণভোটের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন এই নাজির আহমেদ।
আরও পড়ুন-
World's Longest Name: ১ হাজারের বেশি অক্ষর, জন্মের শংসাপত্র ২-ফুট লম্বা, এটাই বিশ্বের দীর্ঘতম নাম
Covid Will End: ২০২২ সালেই শেষ হবে কোভিড-মহামারি, সঙ্গে 'যদি' জুড়ে দিলেন WHO প্রধান
Kim Jong Un: নতুন বছরে অঙ্গীকার কিমের, অর্থনীতির ওপর সবথেকে বেশি জোর দেবে উত্তর কোরিয়া
সম্প্রতি লেবার পার্টির এক্সিকিউটিভ প্যানেলের শৃঙ্খলা-রক্ষা কমিটির সামনেও হাজির হয়েছিলেন। পাকিস্তানি চ্যানেলকে এক বিতর্কিত সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন নাজির। মনে করা হচ্ছিল লেবার পার্টির শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি হয়তো নাজিরকে বরখাস্ত করে দেবে। যদিও তার দরকার হয়নি। ২ দিন আগেই লেবার পার্টি থেকে ইস্তফা দিয়ে দেন নাজির। বোঝাই গিয়েছিল যে নাজির আহমেদ আস্তে আস্তে জমি হারাচ্ছেন এবং সেই সঙ্গে বিলেতের বুক থেকে বিশ্বের সামনে ভারত-বিরোধিতার সুর চড়ানো পোস্টার-বয়-এর করুণ পরিণতি এগিয়ে আসার বিষয়টি।