- Home
- Business News
- Other Business
- শ্রম আইনের মহাবিপ্লব! শ্রমিক ও সংস্থা উভয়ের হবে লাভ, কী রয়েছে এই নয়া আইনে
শ্রম আইনের মহাবিপ্লব! শ্রমিক ও সংস্থা উভয়ের হবে লাভ, কী রয়েছে এই নয়া আইনে
ভারত সরকার ২৯টি পুরনো আইন বদলে চারটি নতুন শ্রম কোড চালু করেছে, যা দেশের কর্মসংস্থান বাজারকে আধুনিক করবে। এই সংস্কারের ফলে কর্মীরা সামাজিক সুরক্ষা এবং তাদের ন্যায্য মজুরির আওতায় আসবেন। একইসঙ্গে, কোম্পানিগুলির জন্য নিয়মকানুন সরল করা হয়েছে।

সরকার চারটি নতুন শ্রম আইন বাস্তবায়ন করেছে
New Labour Code: ভারতের কর্মসংস্থান বাজার দীর্ঘদিন ধরে পুরনো নিয়মেই আটকে আছে। এই আইনগুলি শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য প্রণীত তৈরি হয়েছিল, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, তারা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে শুরু করে। এখন, সরকার চারটি নতুন শ্রম আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই পুরানো শৃঙ্খল ভেঙে দিয়েছে। এটিকে কেবল একটি সরকারি পরিবর্তন মনে করবেন না; এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা ভারতে কাজ করার পদ্ধতি, আপনার বেতন এবং চাকরির সুরক্ষা সম্পূর্ণরূপে বদলে দেবে।
এখন, গিগ কর্মীরাও সুরক্ষা পাবেন
নতুন 'মজুরি সংক্রান্ত কোড' এবং 'সামাজিক সুরক্ষা কোড' এই বৈষম্যের অবসান ঘটানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত, ন্যূনতম মজুরি সুবিধা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রের লোকেদের জন্য উপলব্ধ ছিল, কিন্তু এখন, প্রতিটি শিল্প এবং সারা দেশে কর্মচারীরা সমান বেতন সুরক্ষা পাবেন। গিগ কর্মীদের জন্য আরও আশ্বস্ত করার খবর।
লক্ষ লক্ষ তরুণ প্রথমবারের মতো আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে
আজকের ডিজিটাল যুগে, ডেলিভারি বয়, ক্যাব ড্রাইভার বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করা লক্ষ লক্ষ তরুণ প্রথমবারের মতো আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন, তাদেরও সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। এই পদক্ষেপটি কেবল আধুনিক ভারতের ভাবমূর্তিকেই স্বীকৃতি দেয় না বরং অ্যাপ-ভিত্তিক চাকরিতে কর্মরত ব্যক্তিরাও মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করে।
'দাদাগিরি'র অবসান
কোম্পানি এবং নিয়োগকর্তাদের জন্য সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা ছিল কাগজপত্রের জটিলতা। বিভিন্ন আইনের অধীনে কয়েক ডজন রেজিস্টার, লাইসেন্স এবং রিটার্ন দাখিল করতে হয়েছিল। এই 'বাবুগিরি' ছোট ব্যবসাগুলিকে আনুষ্ঠানিক হতে বাধা দেয়। নতুন শ্রম কোডগুলি ২৯ টি পুরানো আইনকে মাত্র চারটি কোডে একত্রিত করেছে। এখন, একটি রেজিস্ট্রেশন, একটি লাইসেন্স এবং একটি রিটার্নের নিয়ম প্রযোজ্য হবে। সরলীকৃত নিয়মের মাধ্যমে, কোম্পানিগুলি প্রকাশ্যে কাজ করবে, সম্প্রসারণ করবে এবং অস্থায়ী থাকার পরিবর্তে স্থায়ী চাকরিতে লোক নিয়োগ করবে। 'শিল্প সম্পর্ক কোড' মাঝারি আকারের কোম্পানিগুলিকে কর্মী নিয়োগ এবং বরখাস্ত করার ক্ষেত্রে কিছু নমনীয়তা দিয়েছে, যার ফলে তারা ভয় ছাড়াই বাজারের ওঠানামার মুখোমুখি হতে পারবে।
চাকরি আগের চেয়ে হবে আরও নিরাপদ
শুধু বেতন নয়, কর্মক্ষেত্রও নিরাপদ হবে। পেশাগত সুরক্ষা কোড কারখানা, খনি এবং নির্মাণের মতো বিপজ্জনক কাজে নিযুক্ত কর্মীদের জন্য সুরক্ষা মান নির্ধারণ করে। এটি একটি সম্মানজনক এবং নিরাপদ পরিবেশ প্রদান করে শ্রমিকদের সরাসরি প্রভাবিত করবে।
বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে যেসব রাজ্য শ্রম সংস্কার গ্রহণ করেছে, সেখানে কর্মসংস্থান এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন শ্রম আইন এই দিকে একটি প্রধান জাতীয় প্রচেষ্টা। এটি কর্মচারী এবং কোম্পানি উভয়ের জন্যই লাভজনক। সঠিক উদ্দেশ্য নিয়ে বাস্তবায়িত হলে, এই সংস্কারগুলি কেবল ভারতের শ্রমবাজারকে আধুনিকীকরণ করবে না বরং লক্ষ লক্ষ তরুণের জন্য ভালো চাকরির নতুন দরজাও খুলে দেবে।

