সংক্ষিপ্ত
চাকরির জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। সেক্ষেত্রে মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে দিতেও একবারও চিন্তা করেননি। অবশ্য প্রতিটা পদক্ষেপেই বাবা-মাকে পাশে পেয়েছিলেন। বাবা-মায়ের সমর্থন ছিল তাঁর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রখর জৈনের (Prakhar Jain) বয়স মাত্র ২৬ বছর। তাঁর বাবা রাকেশ জৈন (Rakesh Jain)। কোতওয়ালি সদর এলাকায় তাঁর একটি মুদির দোকান (grocery store) রয়েছে। আর মা গৃহবধূ। প্রখরের বড় হওয়া ললিতপুরেই। সেখান থেকে হাইস্কুলের পড়া শেষ করেছিলেন তিনি। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁর বাবা তাঁকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শহরে। আইআইটি কানপুর থেকে বি.টেক পাশ করেন। তারপর চলে গিয়েছিলেন দিল্লিতে। সেখানে তাঁর ছোট ভাই প্রতীক থাকে। সেখানে একটি কোম্পানিতে চাকরি করছিলেন প্রখর। মাইনেও পাচ্ছিলেন বেশ ভালো। কিন্তু, মন বসছিল না। আসলে সিভিল সার্ভিসের প্রতি তাঁর টান ছিল বরাবরই।
ব্যাস চিন্তা মাত্রই ব্যবস্থা শুরু করেন। চাকরির জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। সেক্ষেত্রে মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে দিতেও একবারও চিন্তা করেননি। অবশ্য প্রতিটা পদক্ষেপেই বাবা-মাকে পাশে পেয়েছিলেন। বাবা-মায়ের সমর্থন ছিল তাঁর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে সাফল্য খুব সহজে পাননি। অনেক কষ্ট করতে হয়েছে প্রখরকে। সফলতার শীর্ষে ওঠার জন্য তিনবার অসফল হন। কিন্তু, হার মানেননি। বিরক্তও হয়েছেন। তবে থেমে থাকেননি। সফল হননি বলে বিরক্ত হয়ে নিজেকে আটকে রাখেননি। চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। হারের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন। কারণ নিজের উপর বিশ্বাস ছিল তাঁর। নিজের ১০০ শতাংশ (100 Percent) পুরোপুরি উজার করে দিয়েছেন প্রস্তুতির ক্ষেত্রে। সেভাবেই ২০২০ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় (UPSC Exam) ৯০ তম স্থান দখল করেছেন প্রখর জৈন । এশিয়ানেট নিউজের প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে নিজের লড়াইয়ের কথা জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ললিতপুরের (Lalitpur) এই ইউপিএসসি টপার (UPSC Topper)।
আরও পড়ুন- বার বার অনুশীলনেই আসবে সাফল্য, বলছেন ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল প্রখর জৈন
ডিফেন্স অ্যাকাউন্ট সার্ভিসের ক্যাডার হিসেবে যুক্ত হওয়ার পর প্রখরের মন বসছিল না। জীবন থেকে আরও বেশি কিছু প্রত্যাশা করেছিলেন প্রখর। চাকরিতে যোগ দিলেও বেশিদিন সেখানে থাকতে পারেননি। ঠিক করেছিলেন তাঁকে আরও পড়তে হবে। যার ফলে মনের মতো চাকরি তিনি পেতে পারেন। চাকরি থেকে ছুটি নিয়ে শুরু করেন প্রস্তুতি। এদিকে ঠিক তখনই কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল লকডাউন। কোনও কোচিং ক্লাসে পড়তেও যেতে পারেননি। তখন নিজের মতো করেই প্রস্তুতি নেন। পড়ার মধ্যেই নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। অবশেষে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সাফল্য পান প্রখর। আর এই পরীক্ষায় ৯০ স্থান দখল করেন। তাঁর এই সাফল্যের পিছনে বাবা-মায়ের অনেক অবদান রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- ২০ লক্ষ টাকার প্যাকেজের চাকরির দিকে ফিরেও তাকাননি,জানুন ইউপিএসসি পরীক্ষার এই কৃতীর কথা
ব্যর্থ হওয়ার পরও নিজের উপর বিশ্বাস হারাননি প্রখর। আর সেই বিশ্বাসের উপর ভর করেই লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, "গীতায় লেখা আছে কাজ করে যাও ফলের আশা একেবারেই করো না।" এত কম বয়সেই নিজের মনকে এভাবেই তৈরি করে নিয়েছিলেন তিনি। আর সেই কারণে তিনবার ব্যর্থ হয়েও হার মানেননি। তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি কোনও কিছুই। কারণ তাঁর লক্ষ্য ছিল স্থির। আর তার মাধ্যমেই সাফল্যের স্বাদ নিতে পেরেছেন ২৬ বছর বয়সী এই যুবক। তাঁর মতে, মানুষের ভালোবাসা যে কোনও বিষয়ের প্রতি থাকতে পারে। কারও খেলা ভালো লাগে। তো কারও আবার পড়াশোনা। তবে যে যেটাই করুক না কেন সেটাতে যেন নিজের সবটুকু দিয়ে দেয়। তবে সবার আগে যেটা দরকার তা হল নিজের লক্ষ্য স্থির করা। আর সেই লক্ষ্য স্থির করেই এগিয়ে যেতে হবে। তবে সাফল্য আসবে জীবনে।