সংক্ষিপ্ত
- ইলিয়াসের ছেলে এবার নন্দীগ্রামের প্রার্থী
- নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন তিনি
- সিপিআই ছেড়ে দিয়ে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন
- বাবার সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই
এই রাজ্যের ভোট যুদ্ধে প্রায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে নন্দীগ্রাম। বিজেপি ও তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে এখানে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর শুভেন্দু অধিকারী- দুজনের কাছেই সম্মন রক্ষার লড়াই। কিন্তু এই নন্দীগ্রামেই এবার বাবার সম্মান ফিরিয়ে আনার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আরও একজন। তিনি হলেন মহম্মদ ইলিয়াসের ছেলে সাদ্দাম হসেন।
মহম্মদ ইলিয়াসকে মনে আছে? সালটা ছিল ২০০৭। একটি টেলিভিশন চ্যানেলের স্টিং অপারেশনে নন্দীগ্রামের তৎকালীন সিপিআই প্রার্থীকে ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছিলে। ইলিয়াস পরপর দুবার নন্দীগ্রাম থেকে জিতেছিলেন। কিন্তু স্টিং অপারেশনের পর সবখিছু ওলোটপালট হয়ে যায়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার কয়েক মাস পরেই ইস্তফা দেন ইলিয়াস। দুর্ণীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইসিয়াসকে তাঁর পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দল থেকেই বহিষ্কার করা হয়েছিল। সেই ইলিয়াসের ছেলেই সাদ্দাম হসেন। ২৮ বছরের সাদ্দাম বাবার সম্মান ফেরাতে নেমেছেন ভোট ময়দানে। তিনি বলেন সেই সময় দল সিপিআই ও তাৎকালীন বামফ্রন্ট ঘটনার সত্যতা বিচার করেনি। বাবার পাশে দাঁড়ায়নি। তাঁর বাবা নির্দোষ ছিল বলেও তিনি দাবি করেন। এবার বিধানসভা নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবেই তিনি মনোনয়ন পেশ করেছেন নন্দীগ্রাম থেকে। কিন্তু মনোনয় দাখিলের পর থেকেই তাঁর ওপর রাজনৈতিক চাপ আসছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি ঘরছাড়া বলেও জানিয়েছেন। মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
দীর্ঘ দিন ধরেই নন্দীগ্রাম আসনে প্রতিদ্বন্দিতা করছে সিপিআই। ১৯৬০ সাল থেকে এই কেন্দ্রটি সিপিআই-এ শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। ভূপালচন্দ্র পাণ্ডা এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন। তবে এবারই ব্যতিক্রম। এবার এই আসনে প্রার্থী দিয়েছেন সিপিএম। বাম প্রার্থী মিনাক্ষী ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। নন্দীগ্রামে বামেদের ভোট ধরে রাখাটাই তাঁর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। 'আগে নিজের তোলাবাজ ভাইপোকে দেখুন', মমতাকে কটাক্ষ নন্দীগ্রামের প্রার্থী শুভেন্দুর ...
করোনা-টিকায় বড় পরিবর্তন আনল কেন্দ্রে, কোভিশিল্ডের দুটি ডোজের ব্যবধান বাড়াতে নির্দেশ ..
সাদ্দাম জানিয়েছেন নন্দীগ্রাম কেন্দ্রটি সিপিআই সিপিএমকে দেওয়ার কয়েক দিন আগেই তিনি দল ছেড়েছিলেন। সেই সময় থেকেই তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেব লড়াই করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। সদ্দামের কথায় বাবার হৃত সম্মান পুণরুদ্ধারে এটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সময়। কারণ এখন রাজ্যতো বটেই গোটা দেশের নজর রয়েছে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ওপর। সদ্দাম একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'এটা খুবই হাস্যকর, যে শঙ্কুদেব পণ্ডা তৃণমূলের হয়ে জাল স্টিং অপারেশন করেছিলেন তিনি এখন বিজেপিতে রয়েছেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর শুভেন্দু অধিকারী একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।'
এই রাজ্যের পালা বদলে সিঙ্গুরের সঙ্গে নন্দীগ্রামেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কৃষি জমিকে কেন্দ্র করে ২০০৭-০৮ যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল রাজ্য জুড়ে তার আঁচ পড়ছিল মহাকরণে। আর সেই আগুনকেই কাজে লাগিয়ে ২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম সরকারের পতন ঘটিয়ে মহাকরণ দখল করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বিধানসভা নির্বাচনে মোট আটজন প্রার্থী রয়েছেন। তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী ছা়ড়াও ভোট ময়দানে রয়েছেন সিপিএম প্রর্থী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, এসইউসিআই প্রার্থী মনোজ কুমার দাস ও তিন জন নির্দল প্রার্থী।