সংক্ষিপ্ত
স্কুলে চলছে অনলাইন ক্লাস, তার স্মার্টফোন নেই
টাকা জমাতে আম বিক্রি করছিল জামশেদপুরের কিশোরী
তারপরই ঘটে গেল মিরাকল
মাত্র ১২টি আম বিক্রি হল দেড় লক্ষ টাকায়
স্মার্টফোন কিনতে পারছিল না সে। ফলে অনলাইন ক্লাসও করতে পারছিল না। আর এরপরই যেন জামশেদপুরের তুলসী কুমারীর জীবনে মিরাকল ঘটালো ১২টি আম। দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি হল সেগুলি। গত বুধবার, ২৩ জুনই পুরো টাকা তুলসীর বাবা শ্রীমল কুমারের অ্যাকাউন্টে চলে এসেছে।
এক সরকারী স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত তুলসী কুমারী। করোনভাইরাস মহামারি এবং পরবর্তী লকডাউনের কারণে তা আপাতত বন্ধ রয়েছে। অনলাইনে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, স্মার্টফোনের অভাবে সে সেই ক্লাস করতে পারছিল না। এর জন্য আম বিক্রি করে টাকা জমানোর পথে হেঁটেছিল সে। এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যম, তুলসীর এই সংগ্রামের খবর প্রকাশ করেছিল। আর সেটাই চোখে পড়েছিল মুম্বই-এর ভ্যালুয়েবল এডুয়েনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি আমেয়া হেটে-র।
তিনি, তুলসীর আর্থিক সংকটের কথা জেনে তুলসীর থেকে ১২ টি আম কিনে নেন। প্রতিটির জন্য মূল্য দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা করে। আমেয়া হেটে-র সংস্থা ভার্চুয়াল ক্লাস পরিচালনা করে। তিনি জানিয়েছেন, তুলসীকে তিনি কোনও সাহায্য করেননি। তুলসী কখনই অর্থ সহায়তা চায়নি, পড়াশুনাও ছেড়ে দেয়নি। তার এই প্রচেষ্টাই তাঁকে মুগ্ধ করেছে। তাই ওই কিশোরীকে তার শিক্ষাগত লক্ষ্যে এগিয়ে দেওয়ার জন্য কিছুটা অনুপ্রেরণা দিয়েছেন মাত্র। আর তুলসী মুম্বই-এর 'চাচা'র এই অনুপ্রেরণা পাওয়ার পর জানিয়েছে, তার পড়াশোনা করা নিয়ে চিন্তা নেই তার। দেড় লক্ষ টাকার কিছুটা দিয়ে সে একটি স্মার্টফোন কিনেছে। আর বাকি টাকাটা পরবর্তীকালে শিক্ষার জন্য রেখে দিয়েছে।
করোনাভাইরাস লকডাউন শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ করে স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রে একটা উল্লেখযোগ্য বদল ঘটিয়েছে। ভারতে ডিজিটাল বিভাজন তথা আর্থিক বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। গত বছর, চেন্নাই-এ অনলাইন ক্লাস করার জন্য একটি স্মার্টফোন চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল এক গৃহ পরিতারিকার সন্তান। পরে বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ ইন্সপেক্টর নিজেই তাঁকে একটি স্মার্টফোন কিনে দিয়েছিলেন। এরকম অনেক অনেক ঘটনা গত দেড় বছরে সামনে এসেছে।