সংক্ষিপ্ত
- করোনার প্রভাবে বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দা তৈরি হবে
- আর্থিক সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভুগবেন দরিদ্ররা
- অর্থনীতি বাঁচাতে দাওয়াই দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ
- অতিরিক্ত টাকা ছাপানোর পরামর্শ দিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়
এখন মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নয়। ক্রেডিট রেটিং কমে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও নয়। করোনায় ঘরবন্দি দেশে অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি বসে যাওয়া রুখতে প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়ে দরিদ্রদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হোক। দাওয়াই দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী এস্থার দুফলো।
ফিকির একটি ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে বাংলার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘১৯২৯–৩০ এর মতো আর্থিক মন্দা এড়াতে নতুন করে ব্যবস্থা নিতেই হবে। সরকারের উচিত টাকা ছাপিয়ে গরিব, মধ্যবিত্ত মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়া। করোনার প্রভাবে যে আর্থিক সমস্যা তৈরি হবে, তাতে সবচেয়ে বেশি ভুগবেন দ্ররিদ্র মানুষেরা। তাই মূদ্রাস্ফীতির কথা চিন্তা না করে গরিব লোকের হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়াই এখন ভারতের মতো দেশের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া দরকার।’
অভিজিতের সঙ্গে এই ওয়েবিনারে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও আরেক নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এস্থার দুফলোও। দু’জনেই একই সুরে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার পরামর্শ দিয়েছেন।
করোনার প্রাদুর্ভাবের আগে থেকেই ঝিমোচ্ছিল ভারতের অর্থনীতি। আর লকডাউনের জেরে এখন অধিকাংশ কল-কারখানা, এমনকি চাষবাসও বন্ধ। ফলে জোগানে টান পড়ছে। আবার কাজ না-থাকায় টান পড়েছে বহু মানুষের আয়ে। এই অবস্থায় বণিকসভা ফিকি এবং আইসিসি আয়োজিত ভিডিয়ো বৈঠকে অভিজিৎ বলেন, “প্রথাগত, সাবধানি পথে হেঁটে এই পাহাড়প্রমাণ সমস্যার মোকাবিলা করা শক্ত। চাহিদার চাকা সচল রাখতে প্রয়োজনে টাকা ছাপিয়েও আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানো জরুরি। তাতে মূল্যবৃদ্ধির হার মাথাচাড়া দেবে কি না, সে-সব ভাবার সময় এখন নয়। কারণ, এই অবস্থায় তা না-করলে, অর্থনীতিকে চড়া মাসুল দিতে হতে পারে বলে সম্ভাবনা থাকছে।” এস্থারের মতেও, “ভারতে যখন জন-ধন অ্যাকাউন্টের মতো পরিকাঠামো রয়েছে, তা কাজে লাগানো জরুরি।”
করোনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভুয়ো খবরের রমরমা, ফাঁদে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি ২টি পরিবার
লকডাউনের মেয়াদ বেড়ে হল ৩০ এপ্রিল, কেন্দ্রের আগেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা ওড়িশা সরকারের
গাড়িতেই এখন দিনযাপন, পরিবারকে বাঁচাতে বাড়ি ছাড়লেন করোনা চিকিৎসক
বিশ্ব অর্থনীতির এই মহাদুর্যোগের সময় টাকা ছাপিয়ে গরীব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রস্তাব যদিও অনেক আগেই এসেছে। এ নিয়ে বিরোধিতাও করেছেন অনেক অর্থনীতিবিদ। এমনকি আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠান এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেছে, এর ফলে মূল্যবৃদ্ধি লাগামছাড়া হতে পারে। আবার সরকারি ব্যয় বাড়ালে সরকারি কোষাগারে ঘাটতি বাড়তে পারে। এমন শঙ্কার ভয়ে ক্রেডিট রেটিং কমে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে মূল্যায়ন সংস্থাগুলো।
তবে এই প্রস্তাবের সমালোচকদের জন্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক দাওয়াই দিয়েছেন, অর্থনীতিই যদি ভেঙে পড়ে, তা হলে এসব নিয়ে ভেবে লাভ কী? আগে যে-কোনও মূল্যে অর্থনীতিকে বাঁচানো জরুরি। বাকি সব হিসাব হবে পরে।