সংক্ষিপ্ত
১৫ মাস ধরে তাঁরা বাড়ির বাইরে বের হননি, কাউকে ঢুকতেও দেননি। করোনা মৃত্যু এড়াতে গিয়েই মরতেই বসেছিল এই পরিবার।
গত দেড় বছরের উপর ভারতে করোনা মহামারি চলছে। প্রথম তরঙ্গ গিয়ে দ্বিতীয় তরঙ্গ এসেছে, সেও এখন যাওয়ার মুখে। এরমধ্যে ১৫ মাস ধরে বাড়ির ভিতর একটি তাঁবু খাটিয়ে বন্দি অবস্থায় ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের এক পরিবার। করোনার ভয়ে এভাবেই নিজেদের বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিলেন তাঁরা। বুধবার, তাঁদের অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রের কড়ালি গ্রামে। গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান চপ্পাল গুরুনাথ জানিয়েছেন, প্রায় ১৫ মাস আগে কোভিড-১৯'এর কারণে চুথুগল্লা বেনি-র এক প্রতিবেশীর মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকেই বেনি তাঁর স্ত্রী ও দুই শিশুকে নিয়ে কোভিডের ভয়ে প্রায় ১৫ মাস আগে আত্মগোপন করেছিলেন। গত ১৫ মাসে যত আশা কর্মী বা অন্য কেউ তাদের বাড়ি গিয়েছে, ভিতর থেকে কারোর সাড়া শব্দ না পেয়ে ফিরে এসেছে। সম্প্রতি তাদের কয়েকজন আত্মীয় জানিয়েছিলেন, ওই চারজন ওই বাড়িতে নিজেদের আটকে রেখেছে এবং তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থাও বেশ খারাপ।
এরপরই, এক আশাকর্মী এক সরকারি প্রকল্পের আওতায় তাদের বাড়ি বানানোর একটি জমি দেওয়ার জন্য, এক সরকারি কাগজে তাদের আঙুলের ছাপ লাগাতে গিয়েছিলেন। ভিতরথেকে চুথুগল্লারা জানান, তাঁরা বাইরে আসবেন না, কারণ বাইরে আসলে মৃত্যু অবধারিত। এরপর ওই আশাকর্মী বিষয়টি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান এবং অন্যদের জানালে, সকলে ওই বাড়িতে ছুটে যান। তারপর খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
আরও পড়ুন - উহানের ল্যাবেই লুকিয়ে কোন রহস্য , এবার WHO-এর তদন্তে এবার সরাসরি বাধা দিল চিন
আরও পড়ুন - ফের করোনার ভ্রুকুটি - বেড়ে চলেছে চিকিৎসাধীন রোগীর চাপ, ৫টি রাজ্যই রেখেছে চিন্তায়
আরও পড়ুন - ফের বিদ্যুত গতিতে ছড়াচ্ছে করোনা - 'হারতে বসেছে গোটা বিশ্ব', সতর্ক করল WHO
রাজোল থানার সাব-ইন্সপেক্টর তাঁর দলবল নিয়ে এসে ওই পরিবারকে উদ্ধার করে। ১৫ মাস ধরে তাঁবুবন্দি থেকে থেকে ওই চারজনের অবস্থা এখন অত্যন্ত করুণ। কোনও পরিচর্যা ছাড়ই তাদের চুল বড় হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন কেউ স্নাও করেননি। এমনকী ওই তাঁবুতেই তাঁরা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতেন। খাওয়া দাওয়া কীভাবে জুটত, বা আদৌ কিছু জুটত কি না, তা কেউ জানে না। পঞ্চায়েত প্রধানের মতে, ওই পরিবার যদি ওই অবস্থায় আরও দু'দিন তিন দিন থাকত, তাহলে তাদের মৃত্যুই হত। আপাতত সরকারি হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।