সংক্ষিপ্ত
- গর্ভবতী মহিলাদের কোভিড টিকা
- ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার
- টিকা দেওয়ার গাইডলাইন
- মা ও সন্তানের সুরক্ষাই অগ্রাধিকার পাবে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গর্ভবতী মহিলাদের কোভিড টিকা দেওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রক গর্ভবতী মহিলাদের টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য কর্মী চিকিৎসক ও টিকা গ্রহণকারীদের জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে। ফ্যাক্টশিটের মাধ্যমেই সুস্ঠুভাবে যাঁরা মা হতে চলেছেন তাঁদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কী কী নীতি গ্রহণ করতে হবে তারই একটি রূপরেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন টাকা দিয়ে 'ফ্রি টিকা' শিলিগুড়িতে, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূলকে নিশানা বিজেপির
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে এখনও পর্যন্ত দেশের ৯০ শতাংশের বেশি করোনা সংক্রমিত গর্ভবতী মহিলার হাসপাতালে ভর্তির কোনও প্রয়োজন হয়নি। বাড়িতে যাথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমেই তাঁরা সেরে উঠেছেন। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে করোনা আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্য দ্রুত অবনতি হতে পারে। প্রভাব পড়তে পারে ভ্রূণের ওপরেও। আর সেই কারণেই মা আর সন্তানের সুরক্ষার জন্যই গর্ভবতী মহিলাদের কোভিড টিকা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রক। মন্ত্রকের তরফ থেকে বলা হয়েছে গর্ভাবস্থায় কোভিড ১৯-এর সংক্রমণ যাতে মহিলাকে ঝুঁকিতে না ফেলে তার জন্যই টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
লক্ষণীয় যে গর্ভবতী মহিলাদের একাধিক গুরুতর রোগের মোকাবিলা করতে হয়ে। তাঁদের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে। গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে অন্যান্য রোগীর মত গর্ভবতী মহিলাদেরও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজন উপযুক্ত চিকিৎসা আর ওষুধপত্রের।
আরও পড়ুন করোনা মহামারিকালে অর্থনীতি চাঙ্গা করতে নির্মলার ৮ ঘোষণা, ৪ টুইটে প্রশাংসা প্রধানমন্ত্রী মোদীর ...
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ফ্যাক্টশিটে বলা হয়েছে, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, ৩৫ বছরের বেশি বয়সী,পূর্বে এক বা একাধিক রোগের ইতিহাস রয়েছে- এমন গর্ভবতী মহিলারা কোভিডের কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্র ফ্রন্টলাইন কর্মী বা টিকা প্রদানকারী চিকিৎসক বা নার্সই গর্ভবতী মহিলীদের কোভিড ১৯এর টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় মূল্য়, সতর্কতা সম্পর্কে পরামর্শ দেবেন। গর্ভাবতী মহিলাদের টিকা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাব করার কথাও বলা হয়েছে ফ্যাক্টশিটে। সংশ্লিষ্ট মহিলা যাতে একটি সুস্ঠু সিদ্ধান্ত নিতে পারে তার জন্যই এই পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। টিকা সম্পর্কে যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মহিলা আর তার পরিবারকে দিতে হবে। মহিলা আর তার পরিবারের একাধিক প্রশ্ন থাকলে তারও উত্তর দিতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। নোটে বলা হয়েছে কোভিড ১৯ আক্রান্ত মায়েদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ৯৫ শতাংশেরও বেশি নবজাতক জন্মের সময় ভালো অবস্থাতেই ছিল।
নোটে বলা হয়েছে, কিছুক্ষেত্রে দেখা গেছে গর্ভাবস্থায় করোনা আক্রান্ত হওয়ায় অকাল প্রসবের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে। শিশুর ওজন আড়াই কিলোগ্রামের কমও হতে পারে। বিরল পরিস্থিতিতে শিশুর জন্মের আগেই মারা যেতে পারে। বলা হয়েছে গর্ভবতী মহিলার বয়স যদি ৩৫এর বেশি হয়, স্থূলাকার হন, আগে থেকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে তাহলে সেই মহিলারা কনোভাইরাসে আক্রান্ত হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। বর্তমানে গর্ভাবস্থায় কোনও মহিলা কোভিড ১৯এ সংক্রমিত হলে প্রসবের পরপরই তাঁকে টিকা দেওয়া জরুরি।
আপনি কি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, আপনার হাতের স্মার্টফোনটি দেবে কোভিড ১৯এর সন্ধান ...
কোভিড ১৯এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ফ্যাক্টশিটে বলা হয়েছে ভ্যাকসিনগুলি নিরাপদ আর অন্যান্যদের মতই গর্ভবতী মহিলাদেরও টিকা করোনা থেকে রক্ষা করে। যে কোনও ওষুধের মতই এই ভ্যাকসিনেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। টিকা নেওয়ার পর আক্রান্ত মহিলা ১-৩ দিনের জন্য অসুস্থ বোধ করতে পারেন। টিকার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আর ভ্রূণ আর শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনের সুরক্ষা এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
টিকা দেওয়ার পর ২০ দিন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মহিলাকে পর্যবেক্ষণে রাখা জরুরি। মহিলার শ্বাসকষ্ট হওয়া, বমি বমি ভাব থাকা, অবিরাম পেটব্যাথা, হাতপা টিপটিপ করে ব্যাথা, শরীরের যেকোনও জায়গা ফোলা ফোলা থাকা, রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, যেখানে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে তার বাইরে ত্বকের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
গর্ভবতী মহিলাদের সুরক্ষার জন্য মহিলা আর তার পরিবারের সদস্যদের ডলব মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাড়িতেও নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। ভিড় এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রক। কোউইন পোর্টালে গর্ভবতী মহিলাদের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। তারপরেই মহিলাকে টিকা দেওয়া হবে বলেও জানান হয়েছে।