সংক্ষিপ্ত
ভারতে এসে গেল ওমিক্রন (Omicron) ভেরিয়েন্ট। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক (Union Health Ministry) জানিয়েছে, দুটি কেস রিপোর্ট করা হয়েছে কর্ণাটক (Karnataka) থেকে।
গত সপ্তাহেই দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) প্রথম সনাক্ত হয়েছিল সার্স-কোভ-২ (SARS-Cov-2) ভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট, যাকে পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) পক্ষ থেকে ওমিক্রন (Omicron) ভেরিয়েন্ট নাম দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওমিক্রণ ভেরিয়েন্টে আক্রান্তদের সন্ধান মিলছিল। আমাদের দেশে কবে তার পা পড়ে, সেই আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছিলেন ভারতীয়রা। অবশেষে বৃহস্পতিবার, সেই আশঙ্কা সত্যি করে ভারতে প্রথমবার ওমিক্রনে আক্রান্তের দুটি ঘটনা রিপোর্ট করা হল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক (Union Health Ministry) এই খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছে, দুটি ঘটনাই রিপোর্ট করা হয়েছে কর্ণাটক (Karnataka) থেকে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দক্ষিণের এই রাজ্যে হাজারের বেশি মানুষ ফিরেছিলেন।
এদিন এক সাংবাদিক বৈছক করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল জানান, দুটি ঘটনাই কর্ণাটকের। আক্রান্ত দুইজনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁদের একজনের বয়স, ৬৬, অপরজন ৪৬ বছর বয়সী। দুজনের দেহেই হালকা উপস্বর্গ রয়েছে। যথাক্রমে গত ১১ ও ২০ নভেম্বর তাঁরা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কাদের কাদের সংযোগ হয়েছিল, তাদেরও সনাক্ত করা হয়েছে এবং প্রোটোকল অনুসরণ করে সেইসব ব্যক্তিকেও পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, আক্রান্তদের কারোর মধ্যেই, এখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯'এর (COVID-19) ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের কোনও গুরুতর উপসর্গ দেখা যায়নি লক্ষণ দেখা যায়নি। আইসিএমআর (ICMR)-এর ডিরেক্টর-জেনারেল, ডাক্তার বলরাম ভার্গবও বলেছেন, ওমিক্রন ভারতে এসে গেলেও, তাই নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে সচেতনতা বজায় রাখা অপরিহার্য।
আরও পড়ুন - Omicron Variant- আতঙ্ক ছাড়ুন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো প্রাণঘাতক নয় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট
ডাক্তার বলরাম ভার্গব আরও জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিষ্ঠিত ৩৭ টি ল্যাবরেটরির কনসোর্টিয়ামে (INSACOG), ঝুঁকির দেশগুলি থেকে যাত্রীদের মধ্যে যারা করোনা পজিটিভ ধরা পড়ছেন, তাঁদের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে। ,সেই প্রচেষ্টাতেই ভারতের প্রথম দুটি ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট সংক্রমণের ঘটনা ধরা পড়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার পরিবর্তে সচেতনতা বজায় রাখা উচিত মানুষের, এমনই উপদেশ দিয়েছেন আইসিএমআর-এর প্রধান। সেই সঙ্গে কোভিড মহামারীর উপযুক্ত আচরণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম ধরা পড়ার পর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৯ টি অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন ভেরিয়েন্ট। বিশ্বজুড়ে ৩৭৩ টি কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। এই ভেরিয়েন্টে স্পাইক প্রোটিনে বেশ কিছু অভিযোজন ঘটায়, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে চলতি করোনা টিকাগুলি পুরোপুরি কার্যকর হবে না বলে মনে করছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে, তাঁরা জানিয়েছেন, করোনার এর আগের অন্যান্য সব ভেরিয়েন্টের থেকে এটি অনেক বেশি সংক্রামক। তবে একইসঙ্গে আশার কথাও শুনিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী তাঁদের মত, অনেক বেশি সংক্রামক হলেও, ডেল্টা ভেরিয়েন্টে থেকে এটি অনেক কম ক্ষতিকর। তাই এখনও পর্যন্ত, যে কজন এই নয়া ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে, কারোর শরীরেই করোনার গুরুতর উপসর্গ দেখা যায়নি।