সংক্ষিপ্ত

  • দিল্লি থেকে এসেছেন তিনি
  • শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই মিলল না যুবকের
  • করোনা আতঙ্কে বিক্ষোভ স্থানীয়দের
  • ঘটনাটি ঘটেছে কাঁথিতে 
     

করোনা আতঙ্কে থরহরিকম্প অবস্থা সকলেই। আতঙ্ক এতটাই যে, জামাইকেও শ্বশুরবাড়িতে থাকতে দিতে নারাজ গ্রামবাসীরা! তাঁকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের পাঠানোর দাবিতে রীতিমতো বিক্ষোভ চলল এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে বিভ্রান্তি চরমে, উপভোক্তাদের ভিড়ে করোনা আতঙ্ক বীরভূমে

কাঁথির এক নম্বর ব্লকের করঞ্জি গ্রামে থাকেন সুরেন্দ্রনাথ ভুঞ্যা। বছর সাতেক আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। জামাই পরভীন তিওয়ারি দিল্লিতে থাকেন। ওই দম্পতির একমাত্র মেয়ের বয়স পাঁচ বছর। জানা গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে পারভীনের স্ত্রী, মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে চলে আসেন কাঁথিতে, বাপের বাড়িতে। কিন্তু পারভীন যখন শ্বশুরবাড়িতে আসবেন বলে মনস্ত করেন, তখনই ঘটে বিপত্তি। কারণ, ততদিনে করোনা আতঙ্কে লকডাউন জারি হয়ে গিয়েছে দেশে। বাস, ট্রেন সবই তো বন্ধ। শেষপর্যন্ত দিল্লি থেকে সাইকেল চালিয়ে ৯ দিন পর সোমবার রাতে কাঁথিতে পৌঁছন ভিনরাজ্যের যুবক। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে করঞ্জি গ্রামে। নিয়মমাফিক পারভীনকে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারেন্টাইনে পাঠানোর দাবি তোলেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। 

আরও পড়ুন: করোনা সতর্কতায় নজির, ১৪টি পরিবারকে সংবর্ধনা দিল পুরসভা

আরও পড়ুন: লকডাউন 'এফেক্ট',কল খুলতেই কালো জল কলকাতায়

এদিকে এই ঘটনার খবরে পেয়ে করঞ্জি গ্রামে যান প্রশানসিক আধিকারিকরা। দিল্লির বাসিন্দা পারভীন তিওয়ারিকে স্থানীয় নয়াপুট সাইক্লোন সেন্টারে। সেখানে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খুলেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। বরং কোয়ারেন্টাইনে সেন্টারের সামনেও চলে বিক্ষোভ। কেন? বহিরাগত যুবককে গ্রামের আশেপাশে কোনও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেও থাকতে দিতে রাজি নন স্থানীয় বাসিন্দারা! প্রথমে বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় শেষপর্যন্ত সোমবার সন্ধ্যায় কাঁথির করঞ্জি গ্রাম থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অন্য একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পারভীন তিওয়ারিকে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাফ কথা, ভিন রাজ্য থেকে অনেকেই এলাকায় এসেছেন। কিন্তু কারও সন্দেহজনক কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। তা সত্ত্বেও সকলেই থাকতে হচ্ছে স্থানীয় কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। পারভীন তো গ্রামের জামাই। সে-ও যদি নিয়ম মেনে ১৪ দিনে গ্রামের বাইরে থেকে শ্বশুরবাড়িতে আসে, তাহলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।