সংক্ষিপ্ত
চিনের ওয়েট মার্কেট (China Wet Market) থেকে এমন ১৮ টি ভাইরাস (Virus) সনাক্ত করলেন বিজ্ঞানীরা, যা, করোনাভাইরাসের (Coronavirus) মতোই মানুষের জন্য উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করে। গবেষণাটি চালিয়েছেন বেশ করেকটি দেশের বিজ্ঞানীদের একটি যৌথ দল।
গত দুই বছর ধরে গোটা বিশ্বকে খোঁড়া করে রেখে দিয়েছে কোভিড-১৯ মহামারি (Covid-19 Pandemic)। এখন পর্যন্ত প্রায় ২৬ কোটিরও কাছাকাছি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ভাইরাল সংক্রমণে, আর সাড়ে ৫১ লক্ষের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে এই মহামারিতে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উহান (Wuhan) শহরের একটি ওয়েট মার্কেট অর্থাৎ, সামুদ্রিক খাবারের বাজারেই কোনও প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়েছিল এই অতি সংক্রামক ভাইরাস, এমনটাই জানিয়েছিল চিন (China)। এবার সেই চিনের কুখ্যাত ওয়েট মার্কেটেই চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বেলজিয়াম এবং অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের একটি যৌথ দল ১৮ টি এমন ভাইরাস সনাক্ত করল যা, স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেহ থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে মানুষের দেহে।
এই ভাইরাসগুলির প্রত্যেকটিরই, মানুষ এবং গৃহপালিত প্রাণীদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি তৈরির ক্ষমতা রয়েছে। গবেষকদের দাবি, যে প্রাণীদের দেহে এই ভাইরাসগুলি আবিষ্কার করা হয়েছে সেগুলি চিনে সাধারণত খাদ্য হিসাবে শিকার করা হয়। মেরে খাওয়া হয়। একই সঙ্গে প্রাণীগুলি সার্স (SARS-CoV) বা সার্স-কোভ-২ (SARS-CoV-2) এর মতো ভাইরাসের সম্ভাব্য বাহক। এর মধ্যে কয়েকটি প্রজাতির প্রাণী আছে, কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে যাদের বাণিজ্যিক কারণে কৃত্রিম প্রজনন নিষিদ্ধ করেছে চিন সরকার।
আরও পড়ুন - Coronavirus Lockdown - শীাত আসতেই ফের বাড়ছে করোনা, টিকাকরণের পরও ফের লকডাউন এই দেশে
চিনের একটি ওয়েট মার্কেটের প্রতিদিনকার দৃশ্য
সব মিলিয়ে গোটা চিন জুড়ে, ৫ টি স্তন্যপায়ী বংশের ১৬ টি প্রজাতির মোট ১,৭২৫ টি প্রাণীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন এই গবেষকরা। সেইসব নমুনা বিশ্লেষণ করে মোট ৭১ টি স্তন্যপায়ী প্রাণীর ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে ৪৫ টি ভাইরাস একেবারে নতুন। গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য তথা চিনের নানজিং এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির (Nanjing Agricultural University) ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক শুও সু বলেছেন, তাদের মধ্যে ১৮ টি এমন ভাইরাস রয়েছে, যা মানুষ এবং গৃহপালিত প্রাণীদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
"
তবে সবথেকে আশ্চর্যের বিষয়, অনেক খুঁজেও এই গবেষক দলটি সার্স-কোভ-২ বা সার্স-কোভ মতো ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স সনাক্ত করতে পারেননি। তাঁরা মালয় প্যাঙ্গোলিনের (Malayan Pangolins) দেহ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। যে প্রাণীর দেহে এর আগে সার্স-কোভ-২ এর মতো ভাইরাসগুলি সনাক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু, এই গবেষণায় তা পাওয়া যায়নি। গবেষকদের মতে, গুয়াংডং (Guangdong) এবং গুয়াংশি (Guangxi) প্রদেশের কাস্টম কর্তৃপক্ষ আগেই কোভিড ভাইরাস-পজিটিভ প্রাণীগুলি বাজেয়াপ্ত করেছিল। সম্ভবত সেই কারণেই সার্স-এর মতো ভাইরাস পাননি তাঁরা। প্রসঙ্গত, গুয়াংডং এবং গুয়াংশি - দুই প্রদেশই অবৈধ পশু পাচার ও ব্যবসার স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিত।