সংক্ষিপ্ত
সহজ প্রোটিয়া বিজয় দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল ভারত। প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২২৮ রানে অলআউট করে দিয়েছিল। রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে শিখর ধাওয়ান ও কোহলির উইকেট হারিয়েছিল। কিন্তু দারুণ শতরানে জয় এনে দিলেন রোহিত শর্মা।
সহজ প্রোটিয়া বিজয় দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল ভারত। শুরুতেই আঘাত করে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং-এর মাথা ভেঙে দিয়েছিলেন বুমরা, আর চার উইকেট নিয়ে বাকি কাজ করেন চাহাল। যার ফলে ভারতের সামনে ২২৮ রানের বেশি লক্ষ্যমাত্রা দিতে পারেনি। তবে উইকেটে দুই রকমের বাউন্স থাকায় রান তাড়া করাটা সহজ ছিল না। শুরুতে শিখর -কোহলির উইকেট হারিয়ে সমস্যাতেও পড়েছিল ভারত। কিন্তু রোহিত শর্মা শুধু শতরানই করলেন না, রাহুল ও ধোনির সঙ্গে দুটি জুটি গড়ে ভারতের জয় নিশ্চিত করলেন। ৪৭.৩ ওভারেই ৬ উইকেট হাতে রেখে জিতে গেল বিরাট বাহিনী।
বুমরায় বুমেরাং
বুধবার রোজ বোলে একেবারে শুরু থেকই ম্যাচের দখল নিয়েছিল ভারত। টসে জিতে আগে ব্য়াট করার সিদ্ধান্ত নেন ফাফ জডু প্লেসিস। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তটা বুমরার দৌলতে বুমেরাং হয়ে যায়। ৬ ওভার যেতে না যেতেই তিনি দুই প্রোটিয়া ওপেনার হাশিম আমলা (৬) ও ডি কক (১০)-কেফিরিয়ে দেন। রান উঠেছিল মাত্র ২৪। অপরদিকে ভুবনেশ্বরও আঁটোসাঁটো বোলিং করেন।। কিন্তু উইকেট পাননি।
চাহাল ম্যাজিক
১৭তম ওভারে প্রথম আক্রমণে আনা হয় যুজবেন্দ্র চাহালকে। আর নিজের দ্বিতীয় ওভারেই তিনি পর পর ফিরিয়ে দেন ভ্যান ডার ডুসেন (২২) ও ডু প্লেসিস (৩৮)-কে। ফলে ফের রান ওঠার গতি পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। পরে তিনি ডেভিড মিলার (৩১) ও ফেহলুকাওইও (৩৪)-র উইকেটও নেন।
যোগ দিলেন কুলদীপ
উল্টো দিকে তাঁর দোসর কুলদীপ প্রথম দিকে রান আটকে রাখলেো উইকেট পাচ্ছিলেন না। ডুমিনি (৩) -কে ফিরিয়ে দিয়ে তিনিও চাহালের সঙ্গে যোগ দেন। কুল-চার আঘাতে ৪০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার ১৫৮ রানেই ৭ উইকেট পড়ে গিয়েছিল।
মান বাঁচালেন মরিস-রাবাডা
এইখান থেকে অবশ্য বেশ ভাল ব্যাট করেন ক্রিস মরিস (৪২) ও কাগিসো রাবাডা (৩১*)। দুজনে অষ্টম উইকেটে ৫৯ বলে ৬৪ রান যোগ করেন। এটাই এদিন দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটি। তাঁদের লড়াইতেই দক্ষিণ আফ্রিকা ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রানে পৌঁছায়।
শুরুতে হোঁচট
ব্য়াটিং দানা না বাঁধলেও অর্ধশক্তির বোলিং নিয়ে কিন্তু এদিন কঠিন উইকেটে বেশ ভাল শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকায এদিন তারা দুই স্পিনারের সঙ্গে রাবাডা ও ৩ জোরে বোলিং অলরাউন্ডার খেলায়। শুরুতে কিন্তু রাবাডা ও মরিস দারুণ বিব্রত করেছেন ভারতীয় ব্য়াটসম্যানদের। পিচের অসমান বাউন্সকে দারুণভাবে কাজে লাগান। ষষ্ঠ ওভারেই শিখর ধাওয়ান (৮)-কে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাবাডা। প্রথম পাওযার প্লে তে ভারত করে মাত্র ৩৪। ১৬তম ওভারে আবার ফেহলুকাওইও-র হঠাত লাফিয়ে ওঠা একটি বলে ডি ককের অনবদ্য ক্যাচে আউট হয়ে যান বিরাট কোহলি (১৮)। এই একটা সময়ই কিছুটা হলেও চাপে পড়েছিল ভারত।
রোহিত-রাহুল জুটি
এইখান থেকে ভারতকে জয়ের পথে নিয়ে য়ান রোহিত শর্মা। দুটি বড় জুটি গড়েছিলেন তিনি। প্রথমটি ছিল কেএল রাহুলের সঙ্গে। বহু আলোচিত ভারতের চার নম্বর জায়গায় নেমে এদিন তিনি বেশ পরিণত ক্রিকেট মস্তিষ্কের পরিচয় দিয়েছেন। রোহিতের সঙ্গে ৮৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। কিন্তু রাবাডা আক্রমণে ফিরতেই, একটি অত্যন্ত অপরিণত শট খেলে আউট হয়ে যান তিনি।
ধোনি-রোহিত জুটি
রোহিত শর্মার পরের জুটিটি হয়েছে মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে। এই দুপই অভিজ্ঞ ব্যাটার পঞ্চম উইকেটে ৭৪ রান যোগ করেন। ৪৭ তম ওভারে ক্রিস মরিসের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হন ধোনি। তখন ভারতের জিততে আর ১৫ রান বাকি ছিল যা সহজেই তুলে দেন হার্দিক পাণ্ডিয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকার খারাপ ফিল্ডিং
ক্রিকেট বিশ্বে বরাবরই খুব ভালো ফিল্ডিং সাইড হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু জন্টি রোডস-এর দেশ এদিন খুব খারাপ ফিল্ডিং-এর নমুনা রেখেছ। শুরুতেই স্লিপে রোহিত শর্মার ক্যাচ ফেলেছিলেন ফাফ ডু প্লেসিস। পরে রাবাডার বলে ধোনির একটি লোপ্পা ক্য়াচ ফেলে দেন ডেভিড মিলার। এছাড়া বেশ কিছু সহজ বল মিস ফিল্ডিং-এ চার হয়েছে। ক্যাচগুলি ধরতে পারলে খেলার গতি অন্যদিকে যেতেও পারত।