সংক্ষিপ্ত
সাপের-লুডোর মতো ওঠাপড়া হল। প্রথমে ২০১ রানেই গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা ইনিংস। ভালোভাবেই রান তাড়া করা শুরু করেছিল আফগানরা। কিন্তু নু.য়ান প্রদীপ ও মালিঙ্গার বোলিং-এই পরাস্ত তারা।
সোমবারই প্রায় ৭০০ রানের একটি ম্যাচ হয়েছে বিশ্বকাপ ২০১৯-এ। কিন্তু কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে এদিন সম্পূর্ণ অন্য ধরণে একটি ম্যাচ দেখা গেল। যেখানে দাপট দেখালেন বোলাররাই। প্রথমে আফগান বোলাররা, বিশেষ করে নবি শ্রীলঙ্কা ইনিংসকে ২০১ রানেই গুটিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর আফগান ব্যাটিং-কে ভাঙলেন নুয়ান প্রদীপ। আর লেজ গুটিয়ে দিলেন মালিঙ্গা। আফগান ইনিংস শেষ হল ১৫২ রানেই। শ্রীলঙ্কা জয়ী হল ৩৪ রানে।
গোটা ম্য়াচটিই প্রায় সাপ-লুডোর মতো ওঠা নামা করল। কখনও শ্রীলঙ্কা এগিয়ে গেল। কখনও আবার আফগানিস্তান ফিরে এল ম্যাচে।
শুরুটা কিন্তু হয়েছিল শ্রীলঙ্কার পক্ষেই। করুনারত্নে (৩০)-র সঙ্গে ইনিংস-এর শুরুটা দারুণ করেছিলেন কুশল পেরেরা (৭৮)। সবুজ উিকেট, মেঘলা আবহাওয়ার ফায়দা নিতে পারেননি আফগান জোরে বোলাররা। প্রথম উইকেটে ১৩ ওভারে ৯০-এর উপর রান আসে। এরপর করুনারত্নেকে ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন মহম্মদ নবি।
তারপরেও ম্যাচের দখল ছিল শ্রীলঙ্কার হাতেই। নিশ্চিন্তে এগোচ্ছিলেন থিরিমানে (২৫) এবং পেরেরা। কিন্তু ২২তম ওভারেই পুরো খেলাটা ফের পাল্টে যায়। দ্বিতীয় বলটি অফস্টাম্পের বাইরে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন মহম্মদ নবি। ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটে টেনে এনে বোল্ড হন থিরিমানে। চতুর্থ বলে অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাটের কানা ছুঁইয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কুশল মেন্ডিস (০)। দুই বল পরেই একই ভাবে আউট হন অ্যাঞ্জেলো ম্য়াথুস (০)।
পরের ওভারেই হামিদ হাসানের বলে ব্যাটের উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ধনঞ্জয় ডিসিলভা (০)। বেশিক্ষণ টেকেননি থিসারা পেরেরা (২)-ও। আত্মঘাতি রান নিতে গিয়ে রানআউট হন তিনি। অফ সাইডে একেবারে ফিল্ডারের হাতে বল দিয়েই দৌড়তে গিয়েছিলেন তিনি। এলোপাথারি মারতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দেন ইসুরু উদানা (১০)। আর পরের ওভারেই রশিদ খানের বলে কুশল পেরেরা (৭৮) -ও আউট হয়ে যান।
এরপরই বৃষ্টির জন্য প্রায় আড়াই ঘন্টা খেলা বন্ধ ছিল। পরে খেলা শুরু হলে ওভার সংখ্যা কমে ৪১ হয়। শ্রাীলঙ্কা কিন্তু তত অবধি ব্য়াট করতে পারেনি। ৩৭ ওভারে ২০১ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। ডার্কওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে আফগানদের লক্ষ্য গিয়ে দাঁড়ায় ১৮৭।
আফগানদের রান তাড়া করার সময়, শ্রাীলঙ্কার বোলাররা কিন্তু প্রথম থেকেই সুইং পাচ্ছিলেন। কিন্তু জাজাই ডান পা সরিয়ে সুইয়ের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ব্যাট চালিয়ে যাওয়া সেই সুইংকে কাজে লাগাতে পারেননি। কিন্তু ৩৪ রানের মাথায় উল্টো দিকে শাহদজাদ (৭)- কে ফিরিয়ে দেন মালিঙ্গা। আর এখান থেকে শ্রীলঙ্কা ম্যাচে ফিরতে শুরু করে।
মালিঙ্গার কাজকেই এগিয়ে নিয়ে যান উদানা, থিসারা পেরেরা ও বিশেষ করে নুয়ান প্রদীপ। মাত্র ৫৭ রানের মধ্যেই আফগানিস্তৈানের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যান প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। প্রদীপ ফিরিয়ে দেন জাজাই (৩০), শহিদি (৪)-কে আর উদানা ও থিসারা ফেরান যথাক্রমে রহমত শাহ (২) এবং নবি (১১)-কে।
এরপর অবশ্য গুলবদিন নইব (২৩) ও নাজিবুল্লা জাদরান (৪৩)৬৪ রানের জুটি গড়ে ধীরে ধীরে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ২৫তম ওভারে আক্রমণে ফিরেই এই জুটি ভাঙেন প্রদীপ। আফগান অধিনায়ক নইবকে এলবিডব্লু করেন তিনি। রশিদ খান (২) -ও টিকেছেন মাত্র ৪ বল। তিনিও প্রদীপের শিকার। সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কান এই পেসার ৯ ওভারে ১টি মেডেন-সহ ৩১ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিলেন। যা তাঁর কেরিয়ারের সেরা বোলিং।
এরপর ৩২তম ওভারে নাজিবুল্লা জাদান রানআউট হয়ে গেলে আফগানদের সব আশাই প্রায় শেষ হয়ে য়ায়। আফগান ইনিংস বাকিটুকু ছেঁটে ফেলেন মালিঙ্গা। তিনি ৩৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন। এর আগেরদিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে দলের খেলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, এই অভিজ্ঞ বোলার। এদিন তিনি নিশ্চয়ই খুব খুশি হবেন।