সংক্ষিপ্ত
১৯৮৩ বিশ্বকাপে (World Cup) জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে কপিল দেব (Kapil Dev) খেলেছিলেন স্মরণীয় ১৭৫ রানের ইনিংস। সেই ইনিংসের ব্য়াটেও ছিল বিশেষত্ব। ৬ জানুয়ারি বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কপিল দেবের ৬৩তম জন্মদিন (Kapil Dev Birthday) উপলক্ষ্যে জানুন সেই কাহিনি।
১৯৮৩ সালে ভারতের প্রথম একদিনের বিশ্বকাপ (World Cup) জয়। রূপকথার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে (West Indies) হারিয়ে অসাধ্য সাধন করেছিল কপিল দেব (Kapil Dev) অ্য়ান্ড কোং। সেই ফাইনালের ছবি ও ভিডিও আজীবন অমলিন থেকে যাবে ভারতবাসীর একের পর এক প্রজন্মে। ২৫ জুন ১৯৮৩ ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৩ রানে হারিয়ে বিশ্বজয় করেছিল ভারত। কিন্তু সেই রূপকথার ইমারতের ভিত রচনা হয়েছিল তার ঠিক সাত আগে ১৮ জুন ১৯৮৩-তে। ইংল্যান্ডের টানব্রিজ ওয়েলস স্টেডিয়ামে ওই দিন জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ১৭ রানে ৫ উইকেট থেকে ১৩৮ বলে ১৭৫ রানের একটি অতিমানবিক ইনিংস খেলেছিলেন ভারতের অধিনায়ক (Indian Captain) কপিল দেব। ১৬টি চার ও ৬টি ছয়ে সাজানো ছিল কপিলের ইনিংস। বল হাতে একটি উইকেটও নেন কপিল। বলার অপেক্ষা রাখে না যে ম্যাচের সেরাও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিবিসি-র কর্মীরা সেদিন ধর্মঘট করাতে টেলিভিশনে দেখানো হয় নি বিশ্বকাপের সেই ম্যাচ। আজ পর্যন্ত যে আফসোস ঘোচে নি ভারতের ক্রিকেট অনুরাগীদের। মোবাইল, ভিডিও ক্যামেরা বর্জিত জমানায় ম্যাচ রেকর্ড করা সম্ভব হয়ে ওঠে নি কারোর পক্ষেই।
টি২০ ক্রিকেটের ধারণা তখন কেউ ভাবতেও পারেননি। কিন্তু সেই সময় তেমনই এক ইনিংস খেলেছিলেন কপিল দেব। কিন্তু এমন মহাকাব্যিক ইনিংস যে ব্য়াট দিয়ে খেলছিলেন কিল দেব তারও বিশেষত্ব কিন্তু কিছু কম ছিল না। কারণ সাধারণ ক্রিকেট ব্যাটের থেকে ওই ব্য়াটের গঠন ও ধরন দুই ছিল আলাদ। যা সেই সময় কল্পনাই করা যায় না। সম্প্রিত কপিল দেবের জীবনী ও ৮৩ বিশ্বকাপ নিয়ে নির্মীত ছবিতেও ওই বিশেষ ব্য়াটের উল্লেখ রয়েছে। ছবিতে জিম্বাবোয়ে ম্যাচে মারমুখী ব্য়াটিংয়ের জন্য যখন কপিল দেবের চরিত্রে অভিনয় করা রণবীর সিং বলেন, 'তলোয়ার বার কর'। তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় কপিল দেবের সেই বিশেষ ব্য়াটকে তলোয়ার বলা হচ্ছে। একইসঙ্গে অনেকেই এটিকে 'মঙ্গুস' ব্যাটের সঙ্গেও তুলনা করেছেন। তবে তলোয়ার নামটি বেশি প্রচলিত হয়েছে।
আসলে ১৮ জুন ১৯৮৩-তে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্দে ম্য়াচে কপিল দেব যে ব্যাটটি ব্যবহার করেছিলেন তা স্লেঙ্গার ডব্লুইজি কোম্পানির। ব্যাটটির কাঁধ একেবারে ছোট ছিল। একইসঙ্গে ব্য়াটের প্লেট অংশটিও অন্য়ান্য সাধারণ ব্য়াটের থেকে অনেক ছোট ছিল। তবে হ্যান্ডেলের অংশটি একটু বড় ছিল। ব্য়াটটির হিট করার জায়গায় বেশি শক্তি বা স্ট্রোক রাখার জন্যই এইভাবে তৈরি করা হয়েছিল। যাতে ব্য়াটসম্যানজের মারমুখী ক্রিকেট খেলতে সুবিধা হয়। আশ্চর্যের বিষয় হল অনেকটা একই বিশেষত্ব ও রূপ নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রয়োজনের সাথে মিল রেখে কয়েক দশক পর ব্রিটিশ কোম্পানি মঙ্গুস তৈরি করে আরও একটি ব্যাট। যা মঙ্গুস নামেই খ্যাত। ম্যাথু হেডেন ২০১০ সালের আইপিএলে সেই ব্যাট নিয়ে খেলেছিলেন। কিন্তু ব্যাটটির রক্ষণাত্মক ক্রিকেট খেলার পক্ষে একেবারেই উপযোগী নয় বলে খুব একটা জনপ্রিয়তা পায়নি। তবে 'স্লেঙ্গার' হোক আর 'মঙ্গুস' কিংবা বড় পর্দার ভাষায় 'তলোয়ার' কপিল দেবের সেই ইনিংস ক্রিকেট ইতিহাসে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।