সংক্ষিপ্ত
দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ভারত (South Africa Vs India) সিরিজের মধ্যেই আচমকা টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন প্রোটিয়ারা উইকেট-রক্ষক কুইন্টন ডি কক (Quinton De Kock)। কেন এই সিদ্ধান্ত কী বলল ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (Cricket South Africa)?
বৃহস্পতিবার সেঞ্চুরিয়নে (Centurion) দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ভারত (South Africa Vs India) প্রথম টেস্টে ১১৩ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হওযার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই, লাল বলের ক্রিকেট থেকে অবিলম্বে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন প্রোটিয়ারা উইকেট-রক্ষক কুইন্টন ডি কক (Quinton De Kock)। সিরিজের মাঝেই তাঁর এই আচমকা অবসরের ঘোষণা ক্রিকেট মহলকে অবাক করে দিয়েছে। বিশেষ করে, তাঁর বয়স এখন মাত্র ২৯, ফর্মেরও মধ্যগগনে রয়েছেন বলা চলে। কাজেই আরও বেশ কয়েক বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলার মতো যোগ্যতা ছিল তাঁর।
এমনিতেই ডি কক, ৩ জানুয়ারি থেকে জোহানেসবার্গে (Johannesburg) শুরু হতে চলা সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন না। তিনি বাবা হতে চলেছেন, তাই পিতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকবেন। কিন্তু তাই বলে সেঞ্চুরিয়ান টেস্টই যে, সাদা জার্সিতে তাঁর কেরিয়ারের শেষ ম্যাচ হতে চলেছে, তার কোনও আভাস তিনি আগে দেননি। শেষ ম্যাচে দুই ইনিংসে তাঁর রান ছিল যথাক্রমে ৩৪ ও ২১। ডিককের টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের খবরটি নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকাও (Cricket South Africa)। অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে সিএসএ লিখেছে, প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটার কুইন্টন ডি কক টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবিলম্বে অবসর ঘোষণা করেছেন। তার পরিবার বড় হতে চলেছে। এই অবস্থায় তিনি আরও বেশি সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চান। এই কারণেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ডি কক জানিয়েছেন, সিদ্ধান্তটা সহজ ছিল না। জীবনে এখন কী অগ্রাধিকার হবে, তাই নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে তিনি অনেকটা সময় কাটিয়েছেন। কেমন হবে এবং এখন আমার নেওয়া দরকার তা নিয়ে ভাবতে আমি অনেক সময় নিয়েছি। আর সেষ পর্যন্ত বুঝেছেন, পরিবারই তাঁর কাছে সবকিছু। জীবনের এই নতুন এবং উত্তেজনাপূর্ণ অধ্যায়ে স্ত্রী সাশা এবং আগত সন্তানদের সঙ্গেই তিনি বেশি সময় থাকতে চান। তিনি আরও জানিয়েছেন, এমনটা নয় যে তিনি টেস্ট ক্রিকেট পছন্দ করেন না। টেস্টেও দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে তিনি ভালবাসেন। তবে, এখন তার থেকেও বেশি ভালবাসার কিছু আসছে তাঁর জীবনে। ডিকক বলেছেন, জীবনে, প্রায় সবকিছুই কেনা যায়, শুধু সময় কেনা যায় না। তাঁর কাছে এই মুহূর্তে তার কাছের মানুষদের সঙ্গে বেশি সময় কাটানোটাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
২০১৪-র ফেব্রুয়ারিতে, পোর্ট এলিজাবেথে (Port Elizabeth) অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ডি ককের। ৫৪ টেস্টে তিনি ৩৩০০ রান করেছেন। ৬ টি শতরান রয়েছে, সর্বোচ্চ টেস্ট স্কোর অপরাজিত ১৪১। এর পাশাপাশি তিনি ১২৪ টি ওডিআই ম্যাচ খেলে ৫৩৫৫ রান এবং ৬১ টি টি২০ ম্যাচ খেলে ১৮২৭ রান করেছেন।
বিদায় বেলায়, তাঁর টেস্ট ক্রিকেট যাত্রার অংশীদার সকল কোচ, সতীর্থ, বিভিন্ন ম্যানেজমেন্ট দল এবং পরিবার ও বন্ধুদের তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাদের সমর্থন ছাড়া, এই যাত্রা সম্ভব হত না। তবে প্রোটিয়া হিসাবে তাঁর কেরিয়ার এখানেই শেষ হচ্ছে না। সাদা বলের ক্রিকেটে এখনও তিনি দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। তাই, ভারতের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের বাকি অংশের জন্য সতীর্থদের জন্য শুভকামনা জানিয়ে তিনি বলেছেন, 'ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে দেখা হবে'।