সংক্ষিপ্ত
কপিল দেবের দল জয় করে বিশ্বকাপ। সেই সময় বিসিসিআই (BCCI)-এর সভাপতি এবং ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi) সরকারের মন্ত্রী এনকেপি সালভের (N. K. P. Salve) কাছে প্রশ্ন ছিল এই বিজয় উদযাপন করবেন কিনা। এত টাকা আসবে কোথা থেকে?
কপিল দেবের (Kapil Dev) নেতৃত্বে ভারতীয় দল তখন লর্ডসের মাঠে বিশ্বকাপ (World Cup) জেতার জন্য ব্যস্ত, সেই সময় বিসিসিআই (BCCI)-এর সভাপতি এবং ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi) সরকারের মন্ত্রী এনকেপি সালভের (N. K. P. Salve) কাছে প্রশ্ন ছিল এই বিজয় উদযাপন করবেন কিনা। এত টাকা আসবে কোথা থেকে? সে সময় ভারতীয় ক্রিকেট বিশ্বের পরাশক্তি হয়ে ওঠেনি এবং আজকের ক্রিকেটারদের মতো সে সময়ে ক্রিকেটারদের এত পরিমানে অর্থও হাতে আসতো না। আজ বিসিসিআই-এর একটি টিভি সম্প্রচারের চুক্তি হয় প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারে, কিন্তু সেই সময় খেলোয়াড়রা মাত্র কয়েক হাজার টাকা দৈনিক ভাতা পেতেন। এমন একটি সময়ে লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar) বিসিসিআই এবং ভারতীয় ক্রিকেটকে সাহায্য করেছিলেন ।
সালভে সমাধানের জন্য রাজসিংহ দুঙ্গারপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ক্রিকেট ভক্ত লতা মঙ্গেশকরকে দিল্লির জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে একটি কনসার্ট করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। ভরা স্টেডিয়ামে দুই ঘন্টার অনুষ্ঠান করেন লতা মঙ্গেসকর। বিসিসিআই সেই কনসার্ট থেকে প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করেছিল এবং ১৪ জন খেলোয়াড়ের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল।
সুনীল ভালসন, যিনি ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন, তিনি পিটিআইকে বলেছেন, 'সেই সময়ে এটি একটি বড় পরিমাণ ছিল। অন্যথায়, আমাদের ট্যুর এবং দৈনিক ভাতা থেকে টাকা বাঁচাতে হত যা ৬০০০০ টাকা হত। কিছু লোক আমাদের ৫০০০ বা ১০০০০ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যা বেশ অপমানজনক ছিল। কিন্তু তখনই কনসার্ট করলেন লতা জি। কনসার্টটি দুর্দান্ত ছিল এবং তাঁকে লাইভ গাইতে দেখাও ছিল স্মরণীয় একটি ঘটনা।'
বিসিসিআই তার অবদান ভুলে যায়নি এবং তাই লতা মঙ্গেশকরকে সম্মানের চিহ্ন হিসাবে, ভারতের প্রতিটি স্টেডিয়ামে তাঁর জন্য আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য দুটি ভিআইপি পাস রাখা হত। বিসিসিআইয়ের এক আধিকারিক বলেছেন, 'যেমন আমাদের প্রতিটি ম্যাচের জন্য স্পনসর, রাজ্য অ্যাসোসিয়েশনের জন্য কোটা রয়েছে, একইভাবে প্রতি ম্যাচে লতাজির জন্য দুটি টিকিট রাখা হয়েছিল।' মঙ্গেশকর পরিবার ছিল ক্রিকেট পাগল।
মুম্বাইয়ের একজন সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক মকরন্দ ওয়াইনগাঙ্কর বলেছেন যে ৬০ এর দশকে লতা মঙ্গেশকর নিয়মিত স্টেডিয়ামে আসতেন। তারপর ৭০ এবং ৮০ এর দশকে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে এটি দেখা গিয়েছে। তিনি বলেন, 'লতাজি এবং তাঁর ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর সব সময় ব্রেবোর্ন স্টেডিয়ামে টেস্ট ম্যাচ দেখতে আসতেন। যতই ব্যস্ত থাকুক না কেন, সত্তরের দশকের প্রতিটি ম্যাচ দেখতে আসতেন।
লতা মঙ্গেশকর কিংবদন্তি ক্রিকেটার এবং দুঙ্গারপুর ও মুম্বাইয়ের টেস্ট ওপেনার মাধব মন্ত্রীর সঙ্গে ম্যাচ দেখতে বসতেন। এছাড়াও একটি পুরনো ভিডিও রয়েছে যাতে লতা মঙ্গেশকর চেন্নাইয়ে ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচ দেখছেন।