সংক্ষিপ্ত
‘অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো’ উচ্চারণ করে ফুল, মালা আর মোমের দীপ্তি দিয়ে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাতে উন্মোচিত হল সল্টলেক এফডি ব্লকের পুজোও।
“রৌদ্র বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে মা’র স্নেহ ছায়া”, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পৌঁছে গেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মহালয়ার আগেই শহরজুড়ে হয়ে গেল দুর্গাপুজোর উদ্বোধন, ফিতে কাটলেন স্বয়ং মা-মাটি মানুষের নেত্রী। সাথে রইলেন বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু ও সাংসদ সৌগত রায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বাংলা তথা ভারতের বিখ্যাত দুই গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী ও শান্তনু মুখোপাধ্যায়, ওরফে শান।
শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের দুর্গাপুজোয় এবছরের থিম ভ্যাটিকান সিটি। প্রত্যেক বছরের মতো এবছরও দেবী প্রতিমাকে অলংকারে আবৃত করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। বৃষ্টিকে মাথায় করেই যে সমস্ত লোকশিল্পীরা পুজো মণ্ডপের অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। ইউনেস্কোর সম্মানে বাংলার গর্বের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি, সাথে সাথে উপস্থিত গায়ক শান ও নচিকেতার প্রভূত প্রশংসাও করেন। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে পুজো উদ্যোক্তাদের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা, মন্ত্রী সুজিত বসুকে এবিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক করেন।
মহালয়ার আগে দেবী দুর্গাকে অলংকারের আভরণে সাজিয়ে না তুলে ফুল আর মোমের দীপ্তিতে পুজো অর্পণ করে গেলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, সাথে উচ্চারণ করলেন ‘জাগো দুর্গা জাগো দশপ্রহরণধারিণী’ মন্ত্র। সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে রইল মানসিক অনুশীলনের পরামর্শ, শিশুদের সঙ্গে জুড়ে থাকার উপদেশ। “ওঁ জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী , দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমস্তুতে” স্তব উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সারা পৃথিবীকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখার প্রার্থনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যান্য বছরগুলিতে মহালয়ার দিন থেকে উন্মোচিত হয় শহরের বড় বড় মণ্ডপগুলির দুর্গাপুজো। কিন্তু, ২০২২ বছরটি অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটা পৃথক, এর কারণ ইউনেস্কোর তরফ থেকে হেরিটেজ উৎসবের স্বীকৃতি। তাই মুখ্যমন্ত্রী সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ থেকেই শহরে দুর্গাপুজোর সূচনা করে দিয়েছেন শোভাযাত্রার মাধ্যমে। মহালয়ার তিন দিন আগেই তিনি উদ্বোধন করলেন শহরের তিনটি বড় দুর্গাপুজো। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পর তিনি আসেন সল্টলেক এফডি ব্লকে। বারোয়ারি এই পুজোতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন সুজিত বসু, সব্যসাচী দত্ত, কাকলি ঘোষ দস্তিদার।
এফডি ব্লকের দুর্গাপুজো উদ্বোধন করার পর উত্তর কলকাতার বিখ্যাত টালা প্রত্যয় ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টালা প্রত্যয় ক্লাবের দুর্গা প্রতিমা এবং মণ্ডপ সজ্জা দেখে শিল্প এবং শিল্পীদের ভূষয়ী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর দুর্গাপুজোর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের যাতায়াত সুগম করে তুলতে টালা ব্রিজেরও উদ্বোধন করে দেন তিনি। রিমোটের দ্বারা এই নবরূপে নির্মিত সেতুর উদ্বোধন করলেন মমতা।
আরও পড়ুন-
দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রযুক্তিশিক্ষায় এক অভাবনীয় উদ্যোগ, ভারতে শুরু হল সামসং ইনোভেশন ক্যাম্পাস
রাজনৈতিক স্বার্থে স্বাধীনতার ইতিহাস বদল করা হচ্ছে: নাম না করে কেন্দ্র সরকারকেই দুষলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী?
মুর্শিদাবাদের নবাব মুর্শিদকুলি খাঁর আমলের দুর্গাপুজো পার করেছে ৪৫০ বছর, আজও আনন্দে মেতে ওঠে নবাবনগরী