সংক্ষিপ্ত

বেলুড় মঠে দুর্গাপুজোর মহা অষ্টমীর সঙ্গেই জড়িত কুমারী পুজো। স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় মঠে এই কুমারী পুজো প্রথম চালু করেন। এরপর থেকে প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় অষ্টমীতে বেলুড় মঠে কুমারী পুজো হয়ে আসছে।  চলতি বছরে ও এই প্রথার অন্যথা হয় নি। নিয়ম মেনেই হল কুমারী পুজো। নেই কেবল ভক্তের সমাগম। 
 

১৯০১ সালে বেলুড় মঠে (Belur Math) দুর্গাপুজো (Durga Puja) শুরু হয় ৷ পুজো শুরু করেন স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ (Swami Vivekananda)। ১১৮ বছর ধরে প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় নিয়ম মেনে এই কুমারী পুজো (Kumari Puja) হয়ে আসছে। মহাষ্টমীর (Maha Ashtami) দিন বেলুড় মাতা সন্ন্যাসীরা কুমারীকে দেবী হিসেবে উপাসনা করেন। অত্যন্ত নিষ্ঠা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা হয় বেলুড় মঠের কুমারী পুজো। 

শ্রীরামকৃষ্ণ (Sri Ramkrishna) মনে করতেন, ছোট থেকেই  মেয়েদের মধ্যে মাতৃভাবনা প্রকাশ পায়। এই পুজো উপলক্ষ্যে কুমারীকে শাড়ি পরিয়ে, ফুল ও গয়নায় সাজিয়ে তোলা হয়। যে  নিয়মে মা দুর্গাকে পুজো (Durga Puja) করা হয় ঠিক সেই সেই রীতি মেনেই কুমারী পূজা হয়। পবিত্র মন্ত্র পড়ে, অঞ্জলি দিয়ে, আরতি সহযোগেই এদিন বেলুড় মঠে কুমারী পূজা হয়ে থাকে। 

আরও পড়ুন- Durga Puja 2021: দুর্গাপুজোর ঘরোয়া টোটকাতেই মিলবে জীবনের সমস্যা থেকে মুক্তি

তবে চলতি বছরে বেলুড় মঠে নেই কুমারী পূজার (Kumari Puja) আড়ম্বর। করোনা আবহের জন্য ভক্তের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভক্তশূন্য বেলুড়ে (Belur Math) এবার কুমারী পুজোর (Kumari Puja) আদর্শ পরিবেশও তৈরি হয়েছে। এবারের কুমারী উমা (Uma) নামে পূজিত হচ্ছে। কুমারী পুজোর জায়গায় ২০–২৫ জন সন্ন্যাসীর বেশি কেউ থাকার অনুমতি নেই। কুমারীর সঙ্গে আসা পরিবারবর্গের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে কিনা তাও দেখা হয়েছে, সেইসঙ্গে হয়েছে আরটিপিসিআর টেস্ট। কোনও ভিড় করতে দেওয়া হয়নি। দূরত্ব বিধি মেনেই পালিত হচ্ছে উপাচার। সকলকে ফেস মাস্ক পড়তে বলা হয়েছে। ভক্তদের জন্য লাইভে অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। 

আরও পড়ুন- Durga Puja 2021: করোনা সংক্রমণ রুখতে দুর্গাপুজোয় নয়া নির্দেশিকা জারি করল কলকাতা পুলিশ

শাস্ত্র মতে, কুমারী পূজার (Kumari Puja) উদ্ভব হয় কোলাসুরকে বধ করার মধ্য দিয়ে থেকে। গল্পে বর্ণিত রয়েছে, কোলাসুর এক সময় স্বর্গ-মর্ত্য অধিকার করায় বাকি বিপন্ন দেবগণ মহাকালীর শরণাপন্ন হন। সে সকল দেবগণের আবেদনে সাড়া দিযে় দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। এক থেকে ষোলো বছর বয়সী যে কোনো কুমারী মেযে়র পূজা করা যায়। বয়সের ক্রমানুসারে পূজাকালে এই সকল কুমারীদের বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। 

  • এক বছরের কন্যা — সন্ধ্যা
  • দুই বছরের কন্যা — সরস্বতী
  • তিন বছরের কন্যা — ত্রিধামূর্তি
  • চার বছরের কন্যা — কালিকা
  • পাঁচ বছরের কন্যা — সুভগা
  • ছয় বছরের কন্যা — উমা
  • সাত বছরের কন্যা — মালিনী
  • আট বছরের কন্যা — কুষ্ঠিকা
  • নয় বছরের কন্যা — কালসন্দর্ভা
  • দশ বছরের কন্যা — অপরাজিতা
  • এগারো বছরের কন্যা — রূদ্রাণী
  • বারো বছরের কন্যা — ভৈরবী
  • তেরো বছরের কন্যা — মহালপ্তী
  • চৌদ্দ বছরের কন্যা — পীঠনাযি়কা
  • পনেরো বছরের কন্যা — ক্ষেত্রজ্ঞা
  • ষোলো বছরের কন্যা — অন্নদা বা অম্বিকা

আরও পড়ুন- Durga Puja Weather: অষ্টমীর আমেজ কি নষ্ট করবে অসুর বৃষ্টি জেনে নিন কী বলছে আবহাওয়াবিদরা

 

YouTube video player