সংক্ষিপ্ত

আলোর রোশনাই প্যান্ডেল আলোকিত হলেও, আলোকশিল্পীদের মেহনত অন্ধকারেই থেকে যায়। কতজন দর্শক আলোকশিল্পীদের নামের সঙ্গে পরিচিত হন, তা হাতে গুণে বলা যাবে।

ইউনেস্কোর তালিকায় স্থান পেয়েছে বাঙালির প্রধান উৎসব দুর্গাপুজো। ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে দুর্গাপুজোকে। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশজুড়েই। সেই দুর্গাপুজো এই বছর দোরগোড়ায়। আর প্রতি বছরই দর্শকদের সামনে অভিনব ভাবনা তুলে ধরে দক্ষিণ কলকাতার ৬৪ পল্লী ক্লাব। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। দক্ষিণ কলকাতার ৬৪ পল্লী দুর্গোৎসব পুজো কমিটি প্রতিবছরই নজরকাড়া থিম নিয়ে আসে।

এবার তাঁদের থিম তাড়িতী। না কাউকে ঈর্ষান্বিত কোনও উদ্দেশ্য নেই পুজো কমিটির। এই থিমের মূল কথা আলোর দিশারীদের আলোয় আনা। পুজোর আসল সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে আলোকসজ্জা। নিজেদের পরিবার ছেড়ে আলোকসজ্জা শিল্পীরা মন্ডপের সৌন্দর্যের কাজেই ব্যস্ত থাকেন। নিজেরা শহরকে আলোকিত করলেও তাঁদের জীবনে পুজোর সময় আলো কোথায়। জীবন বিপন্ন করে হলেও তাঁরা কাজ করে চলেন। 

অথচ পুজোর পরেও খুব বেশি লাইম লাইটে আসেন না তাঁরা। আলোর রোশনাই প্যান্ডেল আলোকিত হলেও, আলোকশিল্পীদের মেহনত অন্ধকারেই থেকে যায়। কতজন দর্শক আলোকশিল্পীদের নামের সঙ্গে পরিচিত হন, তা হাতে গুণে বলা যাবে। তাই বাঙালির প্রাণের পুজোকে যারা আলোয় আলোয় ভরিয়ে তোলেন সেই আলোর দিশারী তাড়িতীদের অক্লান্ত পরিশ্রমকে স্বীকৃতি দিচ্ছে ৬৪ পল্লী পুজো কমিটি। এবারের থিম তাড়িতী। 

২০২২ সালের পুজো পড়ল ৭৪ বছরে। সভাপতি তন্ময় বোস ও পুজো কমিটির অন্যান্য সদস্যদের কনসেপ্টে সেই ইলেকট্রিশানদের সম্মান দিতে তাদেরই এবার থিম হিসেবে বেছে নিয়েছেন কনসেপ্ট শিল্পী বিমান সাহা। 

গত দুবছর করোনা আবহে অল্পেই সারতে হয়েছিল আয়োজন। মানতে হয়েছিল কড়া বিধিনিষেধ। মণ্ডপে ঢোকা নিষেধ ছিল দর্শনার্থীদের। তবে এবার করোনা প্রকোপ একেবারে নির্মূল না হলেও তা নিয়ন্ত্রণে। তাই আয়োজনে কোনও রকম খামতি রাখতে চান না পুজো উদ্যোক্তরা। 

গত তিন বছর করোনার কবলে সারা বিশ্ব জর্জরিত। এই বছর কোথাও তাই একটু হলেও স্বস্তির শ্বাস পেয়েছে শহর কলকাতা। কারণ সেই অর্থে করোনার প্রকোপ যেমন নেই, তেমনই ভ্যাকসিনকে হাতিয়ার করে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মনে বল পেয়েছে মানুষ। গত তিন বছরের শুধু হারানোর যন্ত্রণা ভুলে ২০২২ সালের দুর্গোৎসব মহামিলন ক্ষেত্র হয়ে উঠুক, চাইছেন পুজো উদ্যোক্তারা। তবে অবশ্যই বিধি মেনে, সাবধানতা অবলম্বন করে। তবে সর্বাঙ্গীণ সার্থক হবে মায়ের আরাধনা। সেই লক্ষ্যেই পুজো প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ৬৪ পল্লী পুজো কমিটি।