সংক্ষিপ্ত
১৮২৫ সালের শতাব্দী প্রাচীন অভিনব 'বাইশ পুতুলের দুর্গা পুজো' এর টানে ভিন রাজ্য থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা। ধুলিয়ানের সেই জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো ৩০০ বছরের অধিক এই পূজাকে ঘিরে উন্মাদনা আর উদ্দীপনা রয়েছে চরমে, এলাকাবাসীর কাছে এই জমিদার বাড়ির দুর্গা পূজা ‘বাইশ পুতুলের পুজো’ বলেই পরিচিত।
শতাব্দী প্রাচীন অভিনব 'বাইশ পুতুলের দুর্গা পুজো' (Durga Puja 2021)এর টানে ভিন রাজ্য থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা মুর্শিদাবাদে (Murshidabad)। ঐতিহাসিক কাহিনীতে মোড়া মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানে দেশ স্বাধীনতার আগে থেকে চালু হয়ে আসা 'বাইশ পুতুলের দুর্গা পুজো' কে ঘিরে জমে উঠেছে এলাকার আপামর মানুষ।
আরও পড়ুন, নবমীর সকালেই ৫ জেলায় বজ্র বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি, উপকূলের জেলাতে প্রবল বর্ষণের পূর্বাভাস
জেলার মূল সমস্যা গঙ্গা ভাঙ্গন। দেবীকে সন্তুষ্ট করলেই ভাঙন সমস্যা মিটবে, এই আশায় মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের জমিদার বাড়িতে দেবীদুর্গার সঙ্গে শুরু হয় গঙ্গাপুজো। ধুলিয়ানের সেই জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো ৩০০ বছরের অধিক এই পূজাকে ঘিরে উন্মাদনা আর উদ্দীপনা রয়েছে চরমে।এলাকাবাসীর কাছে এই জমিদার বাড়ির দুর্গা পূজা ‘বাইশ পুতুলের পুজো’ বলেই পরিচিত। এখানে দেবীর মাথার উপর শিব বিরাজমান। তাঁর উপরে থাকেন দেবী গঙ্গা। দেবীর বামদিকে থাকেন বিজয়া, নরসিংহ। শিবের ডানদিকে ভিরিঙ্গি, বামে নন্দী। একপাশে থাকেন রাম, লক্ষ্ণণ ও মকরবাহন। অপরদিকে বিষবাহণ। সঙ্গে অসুর, সিংহ, গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। রথের দিন প্রাচীন রীতি মেনে জমিদার রায়বাড়িতে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। এবারও তার অন্যথা হয়নি।বর্তমানে মু্র্শিদাবাদে পুজো হলেও এই পুজোর শুরু হয়েছিল মালদহ জেলার দেওনাপুরে। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে রাঘবেন্দ্র রায় ছিলেন জমিদার। পরবর্তীকালে বারবার গঙ্গা ভাঙ্গন ও বন্যায় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয় জমিদার পরিবারকে। বাধ্য হয়ে ১৮২৫ সালে কাঞ্চনতলা বা ধুলিয়ানে জমিদার বাড়ি নির্মাণ করা হয়।
"
এই রায় বাড়ির পুজোয় এখনও পূর্ব পূরুষের রীতি অনুযায়ী চলে আসছে। এগারোজন দেবী ও এগারোজন দেবতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে হয় পুজো। কৃষ্ণ নবমীতে ঘট ভরে পুজো শুরু করা হয়। দশমীর দিন রীতিমেনে বাড়ির মূল দরজা বহিরাগতদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।জমিদার বাড়ির পুরুষেরা ঢাক বাজান। মহিলারা দেবীকে বরণ করে সিঁদুর খেলায় মাতেন। দেবীকে কাঁধে করে আজও নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে। এখনও আয়োজন করা হয় বাইচ প্রতিযোগিতার। এক সময় ধুলিয়ান জমিদার বাড়ির বাইশ পুতুলের পুজো দেখতে প্রতিবেশী রাজ্য বিহার,ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রামের মানুষজন আসতেন জমিদার বাড়িতে। পুজো দেখে পাত পেড়ে বসে খেয়ে ফিরে যেতে নিজেদের বাড়িতে। যদিও কালের নিয়মে আজ দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন কাতারে কাতারে না আসতে পারলেও।অনেকেই এই বিশেষ পুজোর টানে জমিদার বাড়িতে এসে হাজির হন অষ্টমী ,নবমী তে ভিন রাজ্য থেকে পুজোর কটা দিনে। জমিদার বাড়ির সদস্যরা বলেন,"ঠাকুরদার আমল থেকে চলে আসছে এই ঐতিহ্যবাহী বাইশ পুতুলের পুজো, মানুষের এই পুজোর সঙ্গে একটা অন্তরের টান রয়েছে।আমরা এই পুজোর কটা দিনে এলাকাবাসী থেকে শুরু করে সকল কে নিয়ে একসঙ্গে আনন্দে মেতে উঠি ।'
আরও দেখুন, বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে